সাধারণ ছুটি তুলে নেওয়ায় সরকারের সমালোচনা করেছেন বিএনপিরে নেতারা। তারা বলেছেন, চলমান করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সরকারের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে, মানুষের জীবনের চেয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের দিকেই তারা বেশি জোর দিচ্ছেন।
আজ শনিবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় এ মন্তব্য করেন বিএনপি নেতারা। বিকেল সাড়ে ৩টায় আলোচনা শুরু হয়ে শেষ হয় ৫টায়।
এই আলোচনা শুনেছেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ অনুষ্ঠানে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরবর্তী যে পরিবর্তন, সেখানে অবরুদ্ধ গণতন্ত্রের মুক্তির প্রত্যাশা করেন তারা।
অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এ ধরনের মহামারির পরে পরিবর্তন আসে, যুগের পরিবর্তন হয়, সভ্যতার পরিবর্তন হয়ে যায়। আসুন আমরা আজকে আমরা সবাই মিলে এই পরিবর্তনকে সামনে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাই। গণতন্ত্রের মুক্তি হোক এবং মানুষের মুক্তি হোক। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাক এবং পরিপূর্ণভাবে বাংলাদেশ মুক্তি পাক; এই হলো আজকে আমাদের অঙ্গীকার।’
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় এবং লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ ভার্চুয়াল আলোচনাসভা শুনেছেন বলেও জানান ফখরুল। করোনাভাইরাস সংক্রমণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভার্চুয়াল আলোচনা নতুন অভিজ্ঞতা মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান যা একেবারেই আমাদের জন্য নতুন। বিশেষ করে রাজনীতিবিদদের কাছে এটা একেবারেই নতুন। অনেকে আমাকে বলেছেন, সামনে শ্রোতা থাকবে, দর্শক থাকবে না- আমরা কার সামনে বক্তব্য রাখব? আজকে আপনি তিন-চার লাখ মানুষের সামনে বক্তব্য রেখেছেন। সুতরাং পরিবর্তনটাকে ধরতে হবে।’
এ সময় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধাও নিবেদন করেন মির্জা ফখরুল ও অন্যান্য নেতারা। তারা বলেন, ব্যবসা বাণিজ্য নয়; আগে দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে-এটা ছিল জিয়াউর রহমানের চিন্তা ধারা। তার কথা ছিল মানুষ না বাঁচলে দেশ দিয়ে কী হবে?
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শকে এদেশে টিকিয়ে রাখতে হলে এদেশের জনগণের স্বার্থে বিএনপিকে আরও শক্তিশালী হতে হবে। আজকে করোনাভাইরাস বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বকে কাবু করে ফেলেছে। এই ধরনের মহামারির পরে রাজনৈতিক-সামাজিক এবং বিশ্ব ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসে। আমি প্রত্যাশা করব এই পরিবর্তনে যাতে করে বাংলাদেশে সত্যিকারভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়, যাতে করে অর্থনৈতিক মুক্তি, যার জন্য জনগণ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, যাতে করে সামাজিক যে দুরাবস্থা, যে লুটেরা ব্যবসা-বাণিজ্য চলছে সেসব দূর হয়।’
জিয়াউর রহমানের ৩৯তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান অবসপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন