আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের সম্পাদকমণ্ডলীর কক্ষে কর্মীদের প্রবেশ নিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিমের মধ্যে বাহাস হয়েছে বলে জানা গেছে। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে দলের শীর্ষস্থানীয় এ দুই নেতার মধ্যে বাদানুবাদ হয় বলে জানান সে সময়ে কার্যালয়ে উপস্থিত থাকা একাধিক নেতা।
তারা বলেন, দলীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যের কক্ষে যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের সাবেক নেতাদের নিয়ে বসাকে কেন্দ্র করে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন দুই নেতা। তবে বিষয়টি নিয়ে বাহাউদ্দীন নাছিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটা বড় কিছু নয়। একটু ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল।
সেখানে উপস্থিত আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, কার্যালয়ের ভেতরে কর্মীদের প্রবেশের বিষয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের পক্ষ থেকে একটি অলিখিত নিষেধাজ্ঞা রয়েছে । ফলে কর্মীদের কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশে ভীতি কাজ করে। নাছিম সাহেবসহ আমরা মনে করেছিলাম আজকে (শুক্রবার রাত) ওবায়দুল কাদের পার্টি অফিসে আসবেন না। সে ধারণা থেকে সাবেক ছাত্রনেতা ও যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান আতা, পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের সাবেক ভিপি আরিফসহ কয়েকজনকে ভেতরে ডাকা হয়। তারা আমাদের সঙ্গে বসে কথা বলেন।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করেন ওবায়দুল কাদের। ঢুকেই তিনি সরাসরি সম্পাদকমণ্ডলীর নির্ধারিত কক্ষে যান। এসময় তিনি বসে থাকা সাবেক নেতাদের উদ্দেশে উচ্চস্বরে বলেন, ‘তোমরা কারা? এখানে কেন ঢুকেছো?’
এরপর তিনি ফের বলেন, ‘আমি পার্টির সাধারণ সম্পাদক, আমার নির্দেশ তোমরা মান না!’
এর জবাবে নাছিম বলেন, ‘আমিও দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। আমারও কর্মীদের নিয়ে বসে কথা বলার রাইট আছে। তাছাড়া যাদের নিয়ে বসেছি তারা সবাই দলের। কেউ রাস্তার লোক নয়।’
এ ধরনের বাক্য বিনিময়ে দলীয় কার্যালয়ের পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
এক পর্যায়ে নাছিম বলেন, ‘এখানে কর্মীরা আসবেই, নেতাদের কাছে বসবে, কথা বলবে- এটাই স্বাভাবিক।’
সাধারণ সম্পাদককে উদ্দেশ করে তিনি আরো বলেন, ‘আপনার জন্য থাকা নির্ধারিত কক্ষেতো আমরা বসিনি।’ এর জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি দেখে নিবো। নেত্রীকে জানাবো’।
জবাবে নাছিম বলেন, ‘জানান। নেত্রীও কারো একার নন, তিনি সবার।’
ওবায়দুল কাদের কার্যালয় ছেড়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত প্রায় আধাঘণ্টা ধরে এ ধরনের বাহাস চলে। দু্ই নেতার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের সময় কার্যালয়ে থাকা নেতাকর্মীদের মধ্যে সন্ত্রস্ত ভাব লক্ষ্য করা যায়। তারা ছোটাছুটি করে যে যার মতো বেরিয়ে যান।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন