দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে অভিযোগ করে গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘সরকার কীভাবে এর কৈফিয়ত দেবে। কেন পাচার হচ্ছে এত এত টাকা? অর্থপাচারকারীদের ক্ষমতার উৎস কী?’
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নজরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ড.কামাল হোসেন বলেন, ‘অস্ত্র দিয়ে, বিভেদ সৃষ্টি করে, সাম্প্রদায়িকতার আশ্রয় নিয়ে আমাদের বঞ্চিত করে দেশের পুঁজি বা অর্থ পাচার করবে। কার বাবার সম্পত্তি তোমরা পাচার করছো? তাদের ধরে না কেন? বলা হয় না কেন- কোথায় থেকে তোমরা এ ক্ষমতাটা পেলে?’
কামাল হোসেন আরও বলেন, ‘এটা হলো রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ডাকাতি। আমরা গ্রাম পর্যায়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ডাকাতকে যেভাবে ধরি, আজকের রাষ্ট্রের ডাকাতদের সেভাবে ধরতে হবে। এরা নিজেদের চিহ্নিত করে রেখেছে।’
তিনি বলেন, ‘গত ৪৮ বছর আমরা জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছি, এগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। দেশের মানুষকে মালিকের ভূমিকা পালন করতে হবে। এখানে কারো দয়ামায়ার কিছু নাই। এটা আমাদের প্রাপ্য অধিকার। তাই ক্ষমতার মালিককে যেভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হয় সেভাবে করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্নীতিবাজরা কখনও দাবি করতে পারে না তারা উত্তরাধিকার সূত্রে মালিক হয়ে গেছে। মালিক এদেশের সবাই। দেশে গণতন্ত্র চলতে না দিলে সাময়িকভাবে তারা ক্ষমতাকে হাতে নিয়ে এর অপব্যবহার করে এবং দেশের অর্থ পাচার করে। তাই সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশে কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘জনগণের ঐক্যের শক্তিতে ভর করে আমরা স্বাধীনতা রক্ষা করেছিলাম। স্বাধীনতার আগে ও পরে বিভেদ সৃষ্টি করার কম চেষ্টা হয়নি। সাম্প্রদায়িকতার আশ্রয় নিয়ে, ধর্মের দোহাই দিয়ে মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা হয়েছিলো। কিন্তু তারা সফল হয়নি। তাই আমাদের নিরাশ হবার কোনও কারণ নাই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো এই রাষ্ট্রকে আমরা আরো শক্তিমান করবো। জনগণের ঐক্যকে আরো সুসংগঠিত করবো। জনগণ তাদের যে অধিকার স্বাধীনতার মধ্য দিয়ে আদায় করেছে সেটা বাস্তবে রুপান্তরিত করবো। এজন্য পাড়ায়, মহল্লায় গ্রামে-গঞ্জে এবং জাতীয় পর্যায়ে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’
গণফোরাম সভাপতি বলেন, ‘স্বৈরশাসকগণ কখনও ঐক্যের সামনে তারা দাঁড়াতে পারে না। তারা অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের সাহস করতে পারে না। আর এটাই হলো আমাদের শক্তির উৎস। তারা মনে করে, মানুষের মধ্যে বিবেদ সৃষ্টি করে কায়দা করে সত্যিকার অর্থে মানুষের রায় তাদের পক্ষে নিতে পারবে। কিন্তু তারা পারেনি।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন