‘কথিত’ চাঁদাবাজির অভিযোগে কদিন আগেই সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত এক যুবলীগ নেতার পায়ের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ কয়েকজন যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
আহত নাসির রাঙামাটি পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। তবে হামলার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন।
গুরুতর আহত নাসির বলেন, ‘আজ রাত আনুমানিক ৮টার দিকে শহরের হ্যাপির মোড় থেকে নিউকোর্ট বিল্ডিংয়ের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় যুবলীগ নেতা ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আরিফ তাঁকে পুরোনো বিবাদ ভুলে সমঝোতার প্রস্তাব দেন। এরপর আমাকে শহরের আলোচিত প্রত্যাশা ক্লাবের দিকে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ামাত্রই আগে থেকেই ওত পেতে থাকা জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সুজনসহ কয়েকজন আমাকে কিরিচ-চাপাতি দিয়ে কোপানো শুরু করেন। একপর্যায়ে আমি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করি এবং অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাই। পরে কে বা কারা আমাকে হাসপাতালে রেখে গেছে, আমি জানি না।’
নাসির আরো অভিযোগ করে বলেন, ‘জ্ঞান হারানোর আগে আমি হামলাকারীদের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন, জেলা যুবলীগের সহসম্পাদক মিজান, যুবলীগ ৭ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সেক্রেটারি আরিফকে চিনতে পেরেছি। এ সময় আরো অন্তত ১০ থেকে ১৫ জন ছিল।’
হাসপাতালের সামনে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী এক নারী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি হাসপাতালের সামনে ছিলাম নিজের এক রোগী নিয়ে। হঠাৎ একটি সিএনজি এসে থামে এবং বেপরোয়া হর্ন দেওয়া শুরু করে। আমি এগিয়ে গিয়ে দেখি আমার বোনের জামাই নাসির কাতরাচ্ছে। আমাকে বাঁচাও, বাঁচাও বলে আহাজারি করছে। আমি আশেপাশের লোকজনের সহযোগিতায় তাকে হাসপাতালের ভেতর নিয়ে যাই।’
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহিদুল হক রনি জানান, নাসিরের পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়েছে এবং মাথায় ধারালো কিছু দিয়ে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে জেনেছি দলীয় কোন্দলের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। এই বিষয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি বরকল উপজেলা ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মীকে নিয়ে বনরূপায় আমার নিজ অফিসেই ছিলাম। ঘটনা শুনেছি ফোনে। এর সঙ্গে আমি কোনোভাবেই সম্পৃক্ত না। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এই অভিযোগ করছে। তবে এই ঘটনা যে বা যারাই ঘটিয়ে থাকুক এটা নিন্দনীয়। আমি এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এসব কর্মকাণ্ড বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনার পরিপন্থি।’
রাঙামাটি সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক দীপংকর তংচঙ্গ্যা বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রাম পাঠানো হয়েছে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন