ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আগামী ৩০ জানুয়ারি। নির্বাচনে ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণে সরাসরি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণে আওয়ামী লীগ প্রার্থ প্রচারণায় এগিয়ে থাকলেও ঢাকা উত্তরে চতুর্মুখী চাপে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম। আতিকুল ইসলাম প্রচারণার শুরুতেই নানা রকম বিতর্কে জড়াচ্ছেন এবং নির্বাচন কমিশনও তাকে ইতিমধ্যে সতর্ক করেছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে তিনি ক্ষমা প্রার্থনাও করেছেন। এই সমস্ত চাপের কারণে নির্বাচনের দৌড়ে ক্রমশ আতিকুল ইসলাম পিছিয়ে পড়ছেন বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারনা। আতিকুল ইসলাম যে সমস্ত চাপের মধ্যে পড়েছেন তা হলো;
অযাথা বিতর্কে জড়াচ্ছেন
গতকালই আতিকুল ইসলামের চা খাওয়ার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবরও প্রকাশিত হয়। তিনি দোকানে চা বানিয়ে খাইয়েছেন। শেষে আবার দোকানদারকে ৮০০ টাকা বিলও দিয়েছেন। আতিকুল ইসলাম জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য যেটা করতে চেয়েছিলেন, হিতে বিপরীত হয়েছে সেটা। প্রথমত এটা নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী কোন প্রার্থী ভোটারদেরে কোন রকম আপ্যায়ন করতে পারবেন না। অথচ তিনি এটা করেছেন। আবার আতিকুল ইসলামের এই চা খাওয়ানোর ঘটনায় নানা রকম হাস্য কৌতুকেরও জন্ম হয়েছে। এই অযাচা বিতর্কে জড়িয়ে আতিকুল ইসলাম নিজেই নির্বাচনকে হালকা করেছেন বলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন।
দলে অনৈক্য
নির্বাচনী প্রচারণায় দলের নেতাকর্মীদের এক নৌকায় আনতে পারছেন না আতিকুল ইসলাম। বরং সময় যত গড়াচ্ছে ততই দলে অনৈক্য ডানা বাধছে। বিশেষ করে দক্ষিণে যেভাবে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা বাহাউদ্দীন নাছিম, মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়ারা তাপসের পাশে থাকছেন ঠিক তেমনি উত্তরে তিনি কাউকে পাচ্ছেন না। আজ নির্বাচনী প্রচারণায় মোহাম্মদপুরের এমপি সাদেক খানকে নিয়ে আরেকদফা নির্বাচনী প্রচারণা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। নির্বাচন আচারণবিধি অনুসারে মন্ত্রী এমপিরা প্রচারণায় অংশ নিতে পারবে না। কিন্তু আজ সকালের প্রচারণায় সাদেক খান উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে সাদেক খান সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে নেমে যান। এটা আতিকুল ইসলামের জন্য একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
অবাস্তব আশ্বাস
আতিকুল ইসলাম নির্বাচনী প্রচারণায় বিজয়ী হওয়ার জন্য অবাস্তব কিছু আশ্বাস দিচ্ছেন বলেও উত্তরের ভোটাররা মনে করছেন। তিনি গত দুই দিনের বকৃত্বায় ঢাকা উত্তরের কিছু কিছু এলাকাকে সিঙ্গাপুর বানানোর আশ্বাস দিয়েছেন। যেটা বাস্ববতার বিবেচনায় অসম্ভব। কারণ সিঙ্গাপুরের জনসংখ্যা কম এবং পরিকল্পিত। ঢাকাবাসীও জানে যে ঢাকাকে সিঙ্গাপুর বানানো সম্ভব না। ঢাকাকে একটি বাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করাটাই তাদের লক্ষ্য। আর এ কারণেই আতিক অবাস্তব আশ্বাস দিয়ে ভোটরদের আশ্বস্ত করতে পারছেন না।
নার্ভাস আতিক
নির্বাচনী প্রচারণায় আতিকুল ইসলামকে অনেকটা নার্ভাস মনে হচ্ছে। আর বিভিন্ন স্থানে তার নার্ভাসনেসটা সহজেই প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে। গত নির্বাচনে তিনি যেমন ছিলেন দৃঢ়, আশাবাদী এবং স্বতঃস্ফূর্ত এবার তেমনটি দেখা যাচ্ছে না। যার ফলে নির্বাচনী লড়াইয়ে শুরু থেকেই পিছিয়ে পড়ছেন আতিকুল ইসলাম।
তবে আতিকুল ইসলামের ঘনিষ্ঠরা মনে করেন, নির্বাচনী প্রচারণা সবে শুরু হয়েছে। এখনো নির্বাচনের দুই সপ্তাহ বাকি আছে। কাজেই আতিকুল ইসলাম গত সাড়ে বারো মাস যে কাজ করেছেন এবং তার যে আন্তরিকতা সেই বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত ভোটাররা আতিকের দিকেই ভিড় করবেন। এ ব্যাপারে তারা আশাবাদী।
বাংলা ইনসাইডার
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন