শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এবং বিজয় দিবস সামনে রেখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় ব্যস্ততার কারণে ভারত সফরে যাননি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে প্রত্যাগত প্রবাসী আওয়ামী ফোরামের প্রথম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফরের বাতিল বয়কটের কোনো বিষয় নয়। এটা আমি যতটুকু জানি, বিজয় দিবস ও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস একদম আমাদের দুয়ারে সমাগত। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্তার কারণে তারা ভারত সফরে নাও যেতে পারেন। তবে পরবর্তীতে যাবেন।’
তিনি বলেন, তাই বলে সফর চিরতরে বাতিল হয়নি। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আছে, গঠনমূলক বন্ধুত্ব রয়েছে। এটা যাতে ক্ষুণ্ন না হয় সে ব্যাপারে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আমাদের কোনো বিষয়ে সমস্যা হলে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব।
এনআরসি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ভারত একটি স্বাধীন-স্বার্বভৌম দেশ। তাদের পার্লামেন্টে যদি কোনো আইন পাস হয় সেটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমাদের সেখানে মন্তব্য করা সমীচিন নয়। তবে যে বিষয়গুলো আমাদের এফেক্ট করে বা প্রতিক্রিয়াটা আমাদের কাছে আসে বা আমরা এফেক্টেড হই, অব্যশই আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় আছে..সেখান থেকে অলরেডি বক্তব্য রাখা হয়েছে। পররাষ্ট্র থেকে যে বক্তব্য রাখা হয়েছে এর বাইরে আমার কোনো ভিন্ন বক্তব্য নেই।’
তিনি বলেন, শুধু এটুকু বলতে চাই শেখ হাসিনার সরকারই হচ্ছে পঁচাত্তর পরবর্তী একমাত্র সংখ্যালঘুবান্ধব সরকার। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জল উদাহরণ হচ্ছে বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে মাঝে মাঝে হয়তো একটা-দুটো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে..এতো মানুষ, এখানে দুর্বৃত্ত আছে। দুর্বৃত্তায়নের চক্র আমরা ভেঙে দিতে চাই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা আসলে কোনো দলীয় পরিচয়ে হয় না। দুর্বৃত্তদের কোনো দল নেই। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বলতে যেটা বোঝায় সেটি দগদগে চিত্র দেখা যাবে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর সংখ্যালঘুদের ওপর যে বর্বরতা হয়েছে তার সঙ্গে। সেটি কেবল একাত্তরের বর্বতার সঙ্গে তুলনা করা চলে।’
বিএনপি-জামায়াতকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশে আজ আমাদের বিরোধীরা চুপচাপ বসে নেই। তারা সরকারকে হটানোর জন্য নানামুখি তৎপরতা করছে। চক্রান্তের পথ বেছে নিয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত মোকাবিলার জন্য নেতাকর্মীদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি রাখার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
দলের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এরই মধ্যে ২৯টি জেলার সম্মেলনের কাজ শেষ করেছি। এতো অল্প সমময়ে এটা অবিশ্বাস্য, এরপরও করেছি। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো নতুন করে দিয়েছি। সম্মেলনের ভালো প্রস্তুতি রয়েছে। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা, জাগরণ তৈরি হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রভূত উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, ‘গত কয়েকবছরে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে। সারাবিশ্বে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। আমাদের প্রবৃদ্ধি..আইএমএফেরও রিপোর্ট অনুযায়ী এশিয়ার সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের । আমাদের মাথাপিছু আয়, রফতানি, আমদানি.. সবকিছুর সূচকে আমরা এই দক্ষিণ এশিয়ায় অনেককেই পেছনে ফেলে….বিশেষ করে পাকিস্তান থেকে আর্থসামাজিক প্রত্যেকটি সূচকে উন্নয়নে এগিয়ে আছে।’
যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিক হ্যাট্রিক বিজয় অর্জন করায় শুভেচ্ছা জানান ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে রুশনারা আলী, রুপা হক, আফসানা বাঙালি হিসেবে বিট্রিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির হয়ে নির্বাচিত হওয়ায় তাদেরও অভিনন্দন জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মো. আবুল কাশেম।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন