ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম শাখায় যেন কোনো দ্বন্দ্ব না থাকে নেতাকর্মীদের এমন আহ্বান জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, আমি আজকে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে এসেছি একটি মাত্র কারণে যে, চট্টগ্রাম একসময় ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার দুর্জয় ঘাঁটি। সেই চট্টগ্রাম আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনারও দুর্জয় ঘাঁটি। এই ঘাঁটিতে যে ফাটল ধরেছে সেটাকে ক্লোজ করে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। আওয়ামী লীগ যেন খারাপ খবরের সংবাদ না হয়।
তিনি বলেছেন, ত্যাগী এবং দলের দুঃসময়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন, সুখে দুঃখে দলের সঙ্গে ছিলেন তারাই হবেন দলের নেতা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা সুশৃঙ্খল ও সুসংগঠিত আওয়ামী লীগ চাই। বিশৃঙ্খলা চাই না। সুবিধাবাদীদের দলে চাই না। মৌসুমি ও অতিথি পাখিদের স্থান হবে না আওয়ামী লীগে। অতিথি পাখিরা সুসময়ে আসবে, দুঃসময়ে চলে যাবে। ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। তাদেরই নেতা বানানো হবে।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর লালদিঘি মাঠে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন ওবায়দুল কাদের।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এমএ সালামের পরিচালনায় সম্মেলন উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, শিক্ষা উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপদপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
নিজের দল ভারী করার জন্য পকেট কমিটি যারা করবে তাদের নেতা হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকা মহানগরে যাদের নামে বেশি স্লোগান হয়েছে, যাদের নামে বেশি বিলবোর্ড উঠেছে, যাদের নামে বেশি পোস্টার সাঁটানো হয়েছে তারা কেউ সভাপতি-সম্পাদক হতে পারেনি। কারো স্লোগানে আমরা নেতা বানাব না।’
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপির আইনজীবীরা আদালতের এজলাসে যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা নজিরবিহীন। পৃথিবীর কোনো দেশে প্রধান বিচারপতির এজলাসে এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা মানুষ দেখেনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নে অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, এই অভিযাত্রাই বিএনপির গাত্রদাহ, তারা পছন্দ করছে না। এ জন্য তারা নানা ধরনের কথা বলছে। এখন তাদের রাজনীতির মূল বিষয় হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার হাঁটুর ব্যথা আর কোমরের ব্যথা। তাদের রাজনীতির বিষয় হচ্ছে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের দুর্নীতির রায় কিংবা মামলা।
ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, বিএনপি এখন মিডিয়ানির্ভর দলে পরিণত হয়েছে। তাদের কাজ এখন শুধু প্রেস কনফারেন্স করা। প্রেস কনফারেন্স করে শুধু আওয়ামী লীগ ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা।
মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সংসদ সদস্য দিদারুল আলম, মাহফুজুর রহমান মিতা, খাদিজাতুল আনোয়ার সনিসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
উত্তর চট্টগ্রামের প্রতিটি উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মীরা সম্মেলনে যোগ দেন।
খবর বাসস।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন