স্বৈরাচার এরশাদের আবর্জনাদের আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা মন্ত্রী বানিয়েছেন এমনটি অভিযোগ করে কমিউনিউস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, শহীদ নূর হোসেন নিয়ে করা জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গার বিচার চেয়ে কী লাভ?
সেলিম বলেন, ‘এই সরকারের কাছে কোনো সংসদ সদস্যের পদত্যাগ চাওয়ারও সুযোগ নেই। কারণ, আমরা জানি, কোনো ন্যয্য দাবিকে সমর্থন করতে ভয় পায় সরকার।’
শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে করা সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গা সম্প্রতি যে মন্তব্য করেছেন, তার প্রতিক্রিয়ায় বামপন্থি এই রাজনৈতিক এসব কথা বলেন। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে নূর হোসেন যেদিন নিহত হন সেদিন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমও মিছিলে নেতৃত্ব দেন।
সেলিম বলেন, ‘স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর তিনটি জোট একটি ঐক্যমতে পৌঁছেছিলাম যে, আমরা এরশাদের অনুসারী এবং তার দলের সঙ্গে কোনোদিন আপস করব না। ওইদিন যে ঐক্যমত্য করা হয়, তার ড্রাফট লিখেছিলাম আমি নিজে। ওই চুক্তিতে আমি সাক্ষী।
তিনি বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য যে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন উভয় জোটই জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তারা এরশাদের সঙ্গে জোট করেছে, যার হাতে নুর হোসেনের রক্ত। অথচ এই রক্তের ওপর ভর করেই খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেছে। আর ক্ষমতায় এসে তারা এরশাদকেই বারবার পুনর্বাসন করেছে।’
রাঙ্গা সমালোচনা করে সেলিম বলেন, ‘নূর হোসেনের নাম শুনলে তারা ভয় পায়। আঁতকে ওঠে। এ কারণেই রাঙা বেফাঁস মন্তব্য করেছেন। রাঙার মতো মানুষ নূর হোসেনকে মূল্যায়ন করার ক্ষমতা রাখে না।’
তিনি বলেন, ‘তার পদত্যাগ চাওয়ার সুযোগ আওয়ামী লীগ রাখেনি। এক স্বৈর শাসক আরেক স্বৈরচারের আবর্জনাকে আগলে রেখেছে।’
অপরাধের কারণে কারো পদত্যাগ চাওয়াও এখন নিরাপদ নয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যায়ের উপাচার্যের দুর্নীতি সবার মুখে মুখে। অথচ প্রধানমন্ত্রী অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কথা বলছেন। সরকার প্রধান এমন অবস্থান নিলে কে কার পদত্যাগ চাওয়ার সাহস রাখে! যোগ করেন, সেলিম।
গণতন্ত্রের আন্দোলনে শহীদ নূর হোসেনের আত্মদানের দিন রোববার যখন তাকে স্মরণ করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন, সেদিনই জাতীয় পার্টির এক অনুষ্ঠানে রাঙ্গাঁর বিতর্কিত এই বক্তব্য আসে।
উল্লেখ্য, রোববার ঢাকার বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ‘গণতন্ত্র দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাঙা বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মাদকাসক্ত নূর হোসেনকে পেছন থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদকে হটাতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বামসহ দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল সম্মিলিতভাবে ১৯৮৭ সালে ঢাকা অবরোধের কর্মসূচি দিয়েছিল; সেদিন পুলিশের গুলিতে নিহত হন পরিবহন শ্রমিক নূর হোসেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন