রাজপথে আন্দোলন না করতে পারার ব্যর্থতার তীর তারেক রহমানের দিকে, দলের ক্রান্তিকালিন সময়ে ধৈর্যহীন নেতাদের পশ্চাৎপলায়নের অভিযোগ, দলে মূল্যায়ন বঞ্চিত সিনিয়র নেতাদের পদত্যাগ, কমিটি গঠন নিয়ে তৃণমুলে অসন্তোষ, পদ পদবী পাওয়ার দাবিতে আন্দোলন, সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির নামে আন্দোলন নিয়ে সময়ক্ষেপনসহ বেশকিছু বিষয়ে বিএনপিতে এক ধরনের অস্থিরতা চলছে।
এছাড়াও তারেক রহমানের নানা কর্মকাণ্ড ও সিদ্ধান্তে দলের সিনিয়র নেতাদের কেউ কেউ ক্ষুব্ধ।ইতিমধ্যে বিএনপি ছেড়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান এম মোরশেদ খান, পদত্যাগপত্র দেওয়ার কথা সাংবাদিকদের জানান সাবেক সেনাপ্রধান মাহবুবুর রহমান।এরআগে ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, মোসাদ্দেক আলী ফালু, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, শোক রানার মতো নেতা পদত্যাগ করেছেন।আরো কয়েকজন নেতা দল ছাড়তে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
দলের সিনিয়র এক নেতা বলেন, যারা দল ছেড়ে যাচ্ছেন দলের মধ্যে তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে বির্তক রয়েছে।দলের প্রধান চেয়ারপারসন কারাবন্দি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিদেশে, তৃণমুল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত এমন কোনো নেতা নেই যার নামে মামলা নেই।দল সবচেয়ে বড় ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এমন সময়ে দলের পাশে না দাড়িয়ে তারা নিজেদের বাচাতে, ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখতে দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে দল ছাড়ছেন। বিগত দিনে এরা এমন কোনো সুবিধা নেই যা তারা নেননি বা পাননি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, দলে সব সময় সব কিছু অনুকূলে থাকবে এটি ভাবা ঠিক নয়।প্রতিকুল অবস্থাও আসবে।যারা ক্ষোভ প্রকাশ করে পদত্যাগ করছেন তাদেরকে বলবো এটা কোনো সমাধান নয়।তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচনে যাওয়া ঠিক হবে না।এটা আমি বলেছিলাম কিন্তু আমরা কথা শোনেনি।তাতে কি হয়েছে আমি কি দল ছেড়ে গেছি?
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, তারেক রহমান এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেন না।বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির যৌথ নেতৃত্বে দলের যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বা হচ্ছে।কেউ যদি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ওপর অহেতুক দোষ চাপান সেটি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, তারেক রহমান সাহেব দলের মধ্যে দালালদের চিনেছেন। বিএনপিতে একশ্রেনীর নেতা রয়েছেন তাদের কাজ হলো দলের ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনার বিষয়গুলো ফাঁস করে দেয়া। বিনিময়ে তারা অনেক সুবিধা নিয়েছেন বা নিচ্ছেন। একারণে তাদের সঙ্গে তিনি কোনো বিষয়ে পরার্মশ করার প্রয়োজন মনে করেন না। একারণে তাদের কেউ কেউ বিরাগভাজন হতে পারেন। তাতে দলের কোনো সমস্যা হবে না। কারণ যারা গেছেন বা যাচ্ছেন তারা দলে থাকলেও বা কি লাভ হয়েছে। বিশেষ করে চেয়ারপারসন যখন কারাগারে তাদেরকে একটি দিনের জন্যও তো দেখলাম না কোনো মিছিল মিটিং কিংবা সমাবেশে। তিনি বলেন, তারা সব সময় দলের সুবিধা পেতে চায়। কিন্ত এখনতো সুবিধা দেয়া বা নেয়ার সময় না। এটাও তাদেরকে বুঝতে হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, নেতারা আন্দোলনের কথা বলেও সাহস নিয়ে এগিয়ে আসছেন না কেউ। দলের মধ্যে কেউ দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে চান না। এসময়ে যতটা গাঁ বাচিয়ে চলা যায় এমন লোকের অভাব নেই। সংকট সমাধানের দিকে না গিয়ে বরং আরো উস্কে দেয়া হচ্ছে। দায়িত্ব নেবেন না আবার বড় বড় কথা বলতে ছাড়বেন না এটাতো হতে পারে না। এভাবে তো তাদের মূল্যায়নও করা যাবে না।আস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন