আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলই চলতি অক্টোবর মাসে এসে দুটি নতুন মাত্রায় নিজেদের যুক্ত করেছে। আওয়ামী লীগ দলের ভেতরে শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছে আর বিএনপি ফিরে এসেছে তার পুরনো মতবাদ ভারত বিরোধিতায়।দেশের চলমান রাজনীতিতে এ দুটি বিষয়ই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন,আগামী শীতের রাজনীতি এ দুটিতেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
আওয়ামী লীগ গত সেপ্টেম্বরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপাতি ও সাধারণ সম্পাদককে চাঁদাবাজির অভিযোগে পদচ্যূত করে। তখনো মনে করা হয়েছিল যে, এটি নিয়মিত ঘটনার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। কিন্তু পরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে এক সভায় বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চলবে। কারণ, যারা দুর্নীতি করছে, তাদের একটা ধাক্কা দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে।এর পর পরই তিনি ভারত সফরে যান।সেখান থেকে এসে সংবাদ সম্মেলনে আবারো বলেন,‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চলবে।আমার আত্মীয়ও যদি দুর্নীতি করে তবে ছাড় দেয়া হবে না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দলের ভেতরে এই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ফলে দলে প্রাথমিক ট্রমার সৃষ্টি হয়েছে।বের হয়ে আসছে দলের ভেতরে ঘাঁপটি মেরে থাকা আওয়ামী লীগ বিরোধীসহ তাদের দলে যারা ঢুকিয়েছেন তাদের নাম।বের হয়ে আসছে অবৈধ অর্থের উৎসও। এই শুদ্ধি অভিযানে আওয়ামী লীগ যেমন লাভবান হবে তেমনিভাবে অবৈধ অর্থ উপার্জনকারী ও দলে অনুপ্রবেশকারীরা গোপনে ভিড়ে যেতে পারেন সরকার বিরোধিতায়। সুতরাং, শীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে ব্যস্ত থাকতে হতে পারে অন্তর্ঘাত মোকাবেলায়।
বিএনপি ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বয়কট করে।এই বয়কটের আগে পল্টন ময়দানের ভাষণে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রথমবারের মতো ভারত বিরোধিতা থেকে সরে আসেন।তিনি সরাসরি ভারতের নাম না বলে বলেন,একটি প্রতিবেশি দেশের কথা। এরপর থেকে গত সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বিএনপি ভারতবিরোধী আর কোনো বক্তব্য দেয়নি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের পরপরই বিএনপি অক্টোবরে আবারো সরাসরি ভারত বিরোধিতায় নেমেছে। তারা বলেছে, এলপিজি গ্যাস রপ্তানির মাধ্যমে শেখ হাসিনা ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিয়েছেন। শেখ হাসিনা এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন,কাতার থেকে এলপিজি এনে বোতলে করে ভারতে এলপিজি রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এটা একটি বাণিজ্য। বিশ্বের সকল সভ্যদেশই এ ধরনের বাণিজ্য করে। বিএনপির ভারত বিরোধিতার অন্য বিষয়টি হলো ভারতকে চট্টগ্রাম ও মঙলা বন্দর ব্যবহার করতে দেয়া। এখানেও শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বের সব বন্দরই অন্য দেশ ব্যবহার করে। তিনি বলেন, দেশ এমন কোনো বস্তু নয় যে, তুলে এনে বিক্রি করে দেয়া যায়। রাজনৈতিকভাবে বিএনপির সামনে তেমন কোনো ইস্যু না থাকায় তারা প্রায় বাতিল হয়ে যাওয়া পুরনো ভারত বিরোধিতাকেই আবারো প্রকাশ্যে আনছে। এই শীতে তাই এটাই হতে পারে দলটির রাজনৈতিক পুঁজি। তবে তাদের লাভ হতে পারে আওয়ামী লীগের অন্তর্ঘাতমূলক কাজেও।আস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন