বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যার পর তার কক্ষে মাদক রেখে ‘গণপিটুনির নাটক’ সাজাতে চেয়েছিল বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী। এমনকি এই নাটক সাজানোর জন্য রাতে পুলিশ ডেকেও তাদের গাড়ি হল চত্বরে ঢুকতে দেয়নি ছাত্রলীগ। তবে আবরারের সহপাঠীদের পাহারা এবং পরবর্তীতে শিক্ষকদের তৎপরতার কারণে তাদের সেই অপচেষ্টা সফল হয়নি। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বুয়েটের শেরেবাংলা হলের শিক্ষার্থী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।
যেভাবে ডেকে নেওয়া হয় আবরারকে
৬ অক্টোবর রাত ৮ টা। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন বুয়েটের ১৭ তম ব্যাচের ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদ। এসময় ছাত্রলীগ কর্মী ও মেক্যানিক্যাল বিভাগের একই ব্যাচের শিক্ষার্থী মুনতাসির আল জেমি এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এহতেশামুল রাব্বি তানিম ওই কক্ষে আসে। তারা এসে আবরার ফাহাদকে খুঁজতে থাকে। এসময় কক্ষে আবরারের বন্ধু ও রুমমেট অন্তিম পড়ছিলেন। আবরারকে তারা ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। ঘুম থেকে উঠে আবরার বিছানায় বসে। আবরারের পরনে ছিল কালো ট্রাউজার ও নিজের বিভাগের পিকনিকের সময়ে দেওয়া কালো টি-শার্ট। আবরার ঘুম থেকে উঠলে জেমি তাকে বলে, ‘ভাইরা তোকে ২০১১ নম্বর রুমে ডাকে। তোর মোবাইল ও ল্যাপটপ নিয়ে চল্।’ এসময় কক্ষের সামনে ছিল ১৭ তম ব্যাচের মুয়াজ, সাইফুলসহ আরও ৫/৬ জন। আবরারকে নিয়ে তারা সবাই ২০১১ নম্বর কক্ষে যায়। আবরারকে কক্ষ থেকে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর তার অপর দুই রুমমেট ১৬তম ব্যাচের মিজান ও ১৭ তম ব্যাচের রাফি রুমে আসে। তাদের রুমে রেখে অন্তিম পলাশীতে কফি খেতে চলে যান।
অন্তিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আবরারের সঙ্গে আমার ওটাই শেষ দেখা ছিল। আমাদের পরীক্ষা থাকায় রাত জেগে পড়তে হয়। তাই সন্ধ্যায় ঘুমিয়ে আবরার রাতে পড়তে চেয়েছিল। আমাকে ঘুমানোর আগে বলেছিল, ‘৯ টার দিকে আমাকে ঘুম থেকে তুলে দিস।’ এটাই আবরারের সঙ্গে আমার শেষ কথা।’
আবরারকে গুরুতর পিটিয়ে আহত করার পর তাকে কোলে করে করিডোর পার করে চার জন
আবরারকে নির্যাতনের পর রুম থেকে তার জামা কাপড় নিয়েছিল ছাত্রলীগ কর্মী জেমি
আবরারকে একদফা মারধরের পর রাত ১০ টার দিকে তার রুমে জামা কাপড় নিতে এসেছিল ছাত্রলীগ কর্মী ও মেক্যানিক্যাল বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুনতাসির আল জেমি। অন্তিম পলাশী থেকে কফি খেয়ে এসে দেখে রুম তালা দেওয়া। অপর দুই রুমমেট রাফি ও মিজান রুমে নেই। সে চাবি না নেওয়ায় পাশের ২০১০ নম্বর কক্ষে বসে অপেক্ষা করে। এর কিছুক্ষণ পর মিজান ও রাফি কক্ষে এলে তারা তিনজন কক্ষে প্রবেশ করে। এর কিছুক্ষণ পর ১০ টার দিকে ফের জেমি আবরারের রুমে এসে তার জামা কাপড় চায়। তারা আবরারের একটি গ্রামীণ চেকের শার্ট ও একটা ট্রাউজার নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আবরারের লাশের গায়ে গ্রামীণ চেকের সেই শার্টটি দেখা যায়। সেটিও ছেঁড়া ছিল। জেমি যখন জামা কাপড় নিতে আসে, তখন তার রুমমেটরা আবরারের খবর জানতে চায়। জেমি তাদের জানায়, ‘আবরার ঠিক আছে।’
আবরারের রুমমেট অন্তিম বলেন, ‘‘এভাবে অনেককেই তারা ডেকে নিয়ে ‘টর্চার’ করে ছেড়ে দেয়। আমরা ভাবছি হয়তো এখন আবরারকে ছেড়ে দেবে। তাকে হয়তো রেস্টে থাকতে দিয়েছে। আমি যখন খেতে যাই তখন একবার তানিমকে নিচে দেখি। তাকে অস্থির দেখাচ্ছিল। তাছাড়া জেমি আমাদের সহপাঠী, সে আবরারকে মেরে ফেলবে, এটা বুঝতে পারিনি।’
তিনি বলেন, ‘রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আমি, মিজান ভাই (১৬ তম ব্যাচ), রাফি যখন রুমে আসি তখন আমাদের রুমে ব্যাচমেট ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সাইফুল আসে। তার মুখ শুকনা দেখায়। আমি তাকে জিজ্ঞাস করলাম আবরারের কী অবস্থা? সে বললো ঠিক আছে। আমরা তাই আর কিছু সন্দেহ করিনি।’
হত্যাকাণ্ডকে মাদক দিয়ে গণপিটুনির নাটক সাজাতে চেয়েছিল ছাত্রলীগ
আবরারের মোবাইল ও ল্যাপটপে শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু না পাওয়ার পর তার কক্ষে মাদক রেখে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল বুয়েট ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী। তবে সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মী বিষয়টি আবরারের কক্ষের অন্য সহপাঠীদের জানিয়ে দেয়। বিষয়টি জেনে ওই নেতাদের চাতুরি ঠেকাতে ১০১১ নম্বর কক্ষটির দরজা জানালা সব বন্ধ করে দেয় শিক্ষার্থীরা।
ওই কক্ষের পাশের একটি কক্ষের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তারা (ছাত্রলীগ) চেয়েছিল ২০১১ কক্ষে মাদক রাখবে। আমরা পরে কক্ষটি পাহারা দেই। সবাই ঘুম থেকে ওঠার পর ছাত্রলীগ ধীরে ধীরে গা ঢাকা দেয়। তারপরও আবরারের কক্ষ আমরা পাহারা দেই।’
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাব হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘আমাদের (পুলিশকে) খবর দিয়েও পরবর্তীতে তারা আর হলে ঢুকতে দেয়নি। তারা বলছিল, ‘শিবির ধরা পড়েছে, তাকে নিয়ে যান।’ কিন্তু, থানা পুলিশ গেলে তাদের হলে ঢুকতে দেয়নি। তারা লাশ অনেকক্ষণ আটকে রেখেছিল। পরে শিক্ষকরা আসার পর আমরা লাশ ঢামেক হাসপাতালে পাঠাতে সক্ষম হই।’
আবরার হত্যা মামলার আট আসামি
শেরে বাংলা হলে আবরারের লাশের পাশে রাতে যাদের দেখা গেছে
রাত ২টা ২০ মিনিটের দিকে তিতুমীর হলে খেতে যান অন্তিম। ৩ টার দিকে হলের গেটে প্রবেশ করেই দেখতে পান স্ট্রেচারে আবরারের নিথর দেহ। সারা শরীরে দাগ। লাশের পাশে তার রুমমেট মিজান ও রাফি কান্না করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্ট্রেচারে থাকা আবরারের লাশের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, মুয়াজ, মেক্যানিক্যাল ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন। এছাড়াও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গেটে পাহারা বসায় যাতে হলের কেউ বের হয়ে প্রতিবাদ না করতে পারে। অপরদিকে, হল কর্তৃপক্ষের মধ্যে বুয়েটের ডাক্তার মাসুক এলাহী, প্রভোস্ট ড. জাফর ইকবাল, সহকারী প্রভোস্ট শাহিনুর রহমান, সহকারী প্রভোস্ট ড. ইফতেখার ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. মিজানুর রহমান স্ট্রেচারের পাশে ছিলেন।
সেখানে উপস্থিত একাধিক শিক্ষার্থী ওই সময়ে বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক (পরে স্থায়ী বহিষ্কৃত) মেহেদী হাসান রাসেলের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে বর্ণনা দিয়েছেন। স্ট্রেচারে আবরারের নিথর দেহ পড়ে থাকা অবস্থায় বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল ডাক্তার মাসুক এলাহীকে বলেন, ‘ওকে (আবরার) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই।’ ডাক্তার তার জবাবে বলেন, ‘ও, ১০ থেকে ১৫ মিনিট আগে মারা গেছে। ওকে হাসপাতালে পাঠিয়ে কী হবে?’
এদিকে, আবরারকে হত্যার খবর শেরেবাংলা হলের অন্য শিক্ষার্থীরা মুখে মুখে জানতে পারলেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন গেটে পাহারা বসানোর কারণে ঘটনাস্থল ‘হাজার ব্লকে’ আসতে পারছিল না। প্রসঙ্গত ওই হলে দুটি ব্লক। শতকের ঘরের ব্লকটিকে ‘‘শ’ ব্লক বা শতক ব্লক’’ এবং হাজারের ঘরের কক্ষগুলোকে ‘হাজার ব্লক’ হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে।
জানা গেছে, ১৭তম ব্যাচের যারা হাজার ব্লকে ছিলেন তারাই কেবল আবরারের নিথর দেহ দেখতে পান। সেখানে উপস্থিত শিক্ষকরাও তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে সরাসরি কোনও কথা বলছিলেন না। তবে একাধিক শিক্ষক আকার ইঙ্গিতে আবরারের শরীরে নির্যাতনের চিহ্নগুলোর দিকে ইঙ্গিত করছিলেন। ওই সময় ঘটনাস্থলে থাকা হলের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘‘এরপর হাজার ব্লকের ১৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করে। রুমে রুমে গিয়ে তারা সবাইকে সজাগ করে। তবে তারপরও সবাই ছাত্রলীগের ভয়ে নিহত আবরারের পাশে আসছিল না। তারা যখন রুমে রুমে যাচ্ছিল তখন ছাত্রলীগ তাদের নজরদারি করে। ছাত্রলীগ কর্মী মুয়াজ ও তোয়া এসময় তাদের (সাধারণ শিক্ষার্থীদের) বলে, ‘আমাদের নাম প্রভোস্টকে বলবি না।। আমরা নিরাপরাধ। কারো নাম বলবি না।’’
হাজার ব্লকের শিক্ষার্থীদের সবাইকে খবর দেওয়ার পর শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে আবরারের ১০১১ নম্বর কক্ষে যান। সেখানে গিয়ে ১৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন তারা। দরজা বন্ধ করে দায়িত্বরত শিক্ষকরা যখন ১৭তম ব্যাচের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন দরজা ধাক্কা দিয়ে জোর করে সেখানে বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল প্রবেশ করেন। প্রভোস্ট জাফর ইকবাল তাকে বের হতে বললে, সে বলে, ‘আমরা কি এখানে থাকতে পারি না?’ সে তর্ক জুড়ে দেয়। এরপর জোর করে সেখানে থাকে সে। ফলে বাধ্য হয়ে সব শিক্ষার্থী বের হয়ে যায়।
আবরারের লাশ পড়ে ছিল সিঁড়িতে একটি তোষকের ওপর
আবরারের লাশ যখন সিঁড়িতে পড়েছিল সেটি প্রথম দেখেছিলেন আহনাব নামে ১৭ তম ব্যাচের মেকানিক্যাল বিভাগের এক শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘আমি অনেক রাত পর্যন্ত পড়ছিলাম। রাত ২ টার দিকে আমি পানি আনার জন্য বোতল নিয়ে বের হই। সিঁড়ি দিয়ে নামতেই দেখি দোতলা ও নিচতলার সিঁড়ির মাঝামাঝি জায়গায় তোষকের ওপর আবরারের নিথর দেহ পড়ে আছে। আমি দ্রুত রুমে চলে যাই। আমি ট্রমাটাইজ হয়ে যাই। বুঝতে পারছিলাম না কী করবো। এরপর আবার আসি। তখন দেখি কেউ তাকে স্ট্রেচারে তুলে রেখেছে ।’
আবরারের ভাইকে প্রথম ফোন দিয়ে জানানো হয়
আবরারের মোবাইল ও ল্যাপটপ ছিল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাছে। তাই মৃত্যুর পরও তার পরিবারকে সহপাঠীদের কেউ ফোন দিতে পারছিল না। আবরারের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজকে পড়াতো দিগন্ত নামে বুয়েটের এক শিক্ষার্থী। তার কাছ থেকে নম্বর নিয়ে ফাইয়াজকে ফোন দেওয়া হয়। ফাইয়াজ কয়েকবার রিং হওয়ার পর ফোন রিসিভ করে। এভাবে তার আত্মীয় স্বজন জানতে পারে।
একযোগে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে হত্যাকাণ্ডের কথা জানান দেয় ১৭তম ব্যাচ
আবরার হত্যার পর শেরেবাংলা হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। ভয়ে কেউ কাউকে খবর দিতে পারছিল না। ভয়ের কারণ, যদি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দেখে ফেলে। এজন্য ১৭ তম ব্যাচের কয়েকজন একত্রিত হয়ে একটি ম্যাসেজ লিখে। একই সময় সেই ম্যাসেজ বুয়েটের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনসহ সব ক’টি পেজ ও গ্রুপে তারা পোস্ট করে। এরপর সবাই ধীরে ধীরে জানতে পারে।
শিক্ষকরাও ছিলেন আতঙ্কিত
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ‘আবরারকে হত্যা করে যখন তার লাশ ফেলে রাখা হয়েছিল, সেই খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসেন প্রভোস্ট ড. জাফর ইকবাল, সহকারী প্রভোস্ট শাহিনুর রহমান, চিকিৎসক ডাক্তার মাসুক এলাহী এবং ছাত্র কল্যাণ পরিচালক মিজানুর রহমান। তাদের ঘিরে রেখেছিল খুনের সঙ্গে জড়িত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা শিক্ষকদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিল এটা স্বাভাবিক মৃত্যু। তখন সেখানে উপস্থিত একজন শিক্ষক বলেন, কোনটা স্বাভাবিক ও কোনটা অস্বাভাবিক মৃত্যু সেটা আমরা বুঝি। তবে ছাত্রলীগের এসব নেতাদের অতীত কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবহিত থাকায় আর কোনও বিষয়ে কাউকে কোনও জেরা করেননি শিক্ষকরা । বরং তারাও আতঙ্কিত ছিলেন। ঘটনার কারণও কারও কাছ থেকে জানতে চাননি শিক্ষকরা। এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘স্যাররা, ছাত্রলীগের এসব নেতার আচরণের কারণে আর কথা বলেননি। কারণ, ওরা সবাই ড্রাংক ছিল।’
পুলিশ এসেছিল ‘শিবিরকর্মী’ আটক করতে
আবরার যখন মুমূর্ষু অবস্থায় তখন তাকে প্রথমে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে পুলিশের হাতে তুলে দিতে চায় ছাত্রলীগের এসব নেতা। এজন্য ওইসময় ঘটনাস্থল থেকে ছাত্রলীগের এক নেতা চকবাজার থানার ডিউটি অফিসারের নম্বরে খবর দিয়ে বলে, ‘এক শিবিরকর্মীকে আটক করা হয়েছে, তাকে নিয়ে যান।’ খবর পেয়ে চকবাজার থানা থেকে টহল পুলিশের একটি দলকে শেরেবাংলা হলে পাঠানো হয়। এই হলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তাকর্মী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পুলিশের একটি গাড়ি আসে। তারা শিবিরকর্মী কোথায় জানতে চান। তবে ছাত্রলীগ তাদের পরে আর হলে ঢুকতে দেয়নি।’
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাব হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাত আড়াইটার দিকে আমাদের ডিউটি অফিসারকে ফোন দিয়ে শিবির ধরা হয়েছে বলে ফোন দেয়। তবে আমাদের টহল পুলিশকে তারা হলে ঢুকতে দেয়নি।’
পুলিশের বক্তব্য
ডিএমডির অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন জানান, এই ঘটনায় মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে আসামিরা গ্রেফতার হয়েছে। দ্রুত এই মামলার তদন্ত শেষ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন