অন্যায়, অপকর্ম, অনিয়ম-দুর্নীতি ও শৃঙ্খলাবিরোধী চলমান শুদ্ধি অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের জোটসঙ্গী ১৪ দলের নেতারা। এই অভিযানে সরকার ও ১৪ দলীয় জোটের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হচ্ছে বলেও দাবি করেন নেতারা। তারা বলছেন, জনগণের জন্য নির্ভরযোগ্য সুন্দর ও নিরাপদ বাসস্থান এবং সমাজের শৃংখলা ফেরাতে এই অভিযানের প্রয়োজন ছিলো। এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাধুবাদও জানান তারা।
ব্রেকিংনিউজের সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপকালে ১৪ দলের নেতারা এসব কথা বলেন।
চলমান শুদ্ধি অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘সুশাসনের দাবিতে জাসদ ঘোষিত রাজনৈতিক চুক্তির আলোকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। সরকারের এই পদক্ষেপ যাতে থেমে না যায়। জাসদ দীর্ঘদিন যাবত সুশাসনের দাবিতে জনমত তৈরি করছে। উন্নয়ন-গণতন্ত্র ও সুশাসনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য এই অভিযানের প্রয়োজন ছিলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই উদ্যোগ সফল করার জন্য জাসদ প্রয়োজনে রাজনৈতিক ও সাংগঠনি সহযোগীতা করবে।’
বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘অনিয়ম-দুর্নীতি বিরুদ্ধে অভিযান পরিচলনা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসংশা করা উচিত। তাকে রাজনৈতিক সাপোর্ট দেয়া উচিত। সরকার প্রসংশনীয় কাজ করছেন।’
১৪ দলের আরেক শরিক দল গণতান্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘দুর্নীতি অনিয়ম ও লুটেরাদের বিরুদ্ধে অভিযান করতে ১৪ দলের মিটিংগুলোতে আমরা বারবার বলে আসছিলাম। ১৪ দলীয় জোট সরকারের আমলে একদিকে উন্নয়ন হচ্ছে যেমন সত্য, আরেক দিকে কিছু কিছু এলাকায় লুটেরা, দুর্নীতি, মাস্তানও তৈরি হয়েছে। তবে চলমান অভিযানকে আমরা স্বাগত জানাই। এই অভিযান অব্যাহত থাকলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে। উন্নয়নের ধারা বেগবান হবে। সমাজ বিরোধীরা আইনের আওতায় আসবে। অপরাধীদের যে দলের হোক তাদের যেনো কোনো প্রকার ছাড় দেয়া না হয়।’
সরকারের চলমান শুদ্ধি অভিযান নিয়ে বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘আমার প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হচ্ছে পুলিশের নাকের ডগায় এতদিন এগুলো চললো কিভাবে?। চুনুপুটি না ধরে রাগব বোয়ালদের ধরতে হবে।’
গণআজাদী লীগের সভাপতি বলেন, ‘সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এই ধরনের অভিযানের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ১৪ দলীয় জোট সরকারের আমলে কেউ অপরাধ করে ছাড় পাবে না। তবে কোনো নিরাপরাধ মানুষ যাতে এই অভিযানের ভিকটিম না হয়।’
বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ও ১৪ দলের নেতা রেজাউর রশীদ খান ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ এই ধরনের সিদ্ধান্তের জন্য। যে বা যারাই অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের ধরা হোক। সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য এই অভিযান পজেটিভ কাজ। কোনো অপরাধীকে যাতে খাতির করা না হয়।’
১৪ দলের আরেক শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। দলটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য। চলমান শুদ্ধি অভিযানে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়ন (র্যাব) ফকিরাপুল এলাকায় ইয়াংমেনস ক্লাবে অভিযান চালিয়ে অবৈধ ক্যাসিনোসহ জুয়ার সামগ্রি উদ্ধার করে। রাশেদ খান মেনন এই ক্লাবের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান। এবিষয়টি গণমাধ্যমে আসলে বিভিন্ন পর্যায়ে থেকে রাশেদ খান মেননের সমালোচনা হয়। এবিষটি জানতে চাইলে ১৪ দলীয় জোটের কোনো নেতাই কথা বলতে রাজি হননি।
তবে ইতিমধ্যে রাশেদ খান মেনন এ বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন। তার দাবি, ‘২০১৬ সালে যখন ক্লাবটি চালু হওয়ার সময় একবারই আমি ওই ক্লাবে গিয়েছি। এরপর আমার সঙ্গে ওই ক্লাবের আর কোনো সম্পর্ক নেই। আমি তো জানতাম না ওই ক্লাবে ক্যাসিনো চালানো হয়।’
ব্রেকিংনিউজ/
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন