আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা আহ্বান করা হয়েছে। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জানা গেছে, আজকের বৈঠকে ছাত্রলীগ বিষয়ে আজ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে।
ছাত্রলীগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ছাড়াও আজকের বৈঠকে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন, স্থানীয় নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীকে শোকজ-পরবর্তী করণীয় এবং মদদদাতাদের বিষয়সহ নানা বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, এমন একটি মুহূর্তে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক ডাকা হয়েছে যখন ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। নতুন নেতৃত্বের সন্ধান করা হচ্ছে।
তারা বলেন, বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে জোরালো আলোচনা ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এছাড়া জাতীয় সম্মেলনের দিনক্ষণ এগিয়ে এলেও কবে হবে, নাকি আদৌ হবে না- তা এখনও ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে। শনিবারের বৈঠকে এ বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
ছাত্রলীগের বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করেছে। কী হচ্ছে তা জানা যাবে দু-একদিনের মধ্যে। আর পুরো বিষয়টি দেখছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এদিকে, ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ৪-৬ ভাগ চাঁদা দাবির অভিযোগ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। তবে এসব ঘটনায় নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।
প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিটি পৌঁছে দিতে তিনি একজন জ্যেষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতার হাতে সেটি দিয়েছেন।
ওই চিঠিতে রাব্বানী লেখেন, আপনি মুখ ফিরিয়ে নিলে যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। যেখানে তিনি নিজেদের ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। পাশাপাশি তাদের বিষয়ে যেসব অভিযোগ এসেছে তার থেকে গুরুতর তিনটির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তিনি বিস্তারিত লিখেছেন।
ছাত্রলীগের প্যাডে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা চিঠির সত্যতা স্বীকার করলেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে তা পৌঁছেছে কিনা সেই বিষয়ে রাব্বানী নিশ্চিতভাবে কিছু জানাতে পারেননি।
এদিকে আওয়ামী লীগের চার নেতার সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতারা কথা বলার সুযোগ পেলেও কার্যত তাদের পাশে এখন কেউ নেই। ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙে দেয়ার খবর শুনে শোভন-রাব্বানী থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন সংগঠনটির গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা নেতাদের বড় একটি অংশ।
উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভায় ছাত্রলীগ নিয়ে কথা উঠলে কমিটি ভেঙে দেয়ার কথা বলেন শেখ হাসিনা। বিষয়টি নিয়ে পরদিন থেকে সারা দেশে আলোচনার ঝড় ওঠে।চাঁদাদাবিসহ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর ওপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার পর সংগঠনটির নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। গত এক সপ্তাহ ধরে ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনটির টালমাটাল অবস্থা। সবাই সাংগঠনিক নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে।
পূর্বপশ্চিমবিডি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন