‘ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি-সন্ত্রাসের অভিযোগ থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থায় নেয় না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নামের যে বাসটি রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই বাসের হেলপার।’
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধন শেষে প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা।
গত মার্চে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে ছাত্রলীগের ৩৪ জন সাবেক ও বর্তমান নেতাকে নিয়মবহির্ভূতভাবে ভর্তির সুযোগ দেওয়ার প্রতিবাদে এর আয়োজন করা হয়।
‘অনিয়ম ও জালিয়াতির বিরুদ্ধে আমরা’ শিরোনামে ওই সমাবেশে পরিষদের আহবায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘নিয়মকানুন লঙ্ঘন করে ছাত্রলীগের ৩৪ জনকে চিরকুটের মাধ্যমে অবৈধভাবে ভর্তির সুযোগ দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন। এই উপাচার্য ও ডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর প্রতিনিধিত্ব করেন না। তারা ছাত্রলীগের প্রতিনিধিত্ব করেন। অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের কোনো বিচার হয় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নামের যে বাসটি রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই বাসের হেলপার।’
পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য কলঙ্কজনক ইতিহাসের মাস্টারমাইন্ড। ছাত্রলীগের ৩৪ জনকে পুরোপুরি অন্যায়ভাবে ভর্তির সুযোগ দিয়ে ডাকসু ও হল সংসদে কলঙ্কজনক নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। এই জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হয়ে যাঁরা ডাকসু ও হল সংসদে নির্বাচিত হয়েছিলেন, তাঁদের পদ শূন্য ঘোষণা করে এসব পদে পুনর্নির্বাচন দিতে হবে। একই সঙ্গে উপাচার্য ও ডিনকে পদত্যাগ করতে হবে।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার ডিন স্যার যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, সেখানে তিনি অনিয়মকে নিয়ম হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যেকোনো পর্যায়ে ছোট কোনো বিষয় নিয়ে গেলেও বলা হয় লিখিত দাও। এই বিশ্ববিদ্যালয় চলেই লিখিতের ওপর। কিন্তু শিবলী স্যার দেখাতে পারেননি, তার বলা নিয়মটি কোথায় লেখা আছে। কারও মুখের কথায় কোনো নিয়ম তৈরি হতে পারে না। এই অবৈধ প্রক্রিয়ায় ভর্তি হয়ে যাঁরা ডাকসু ও হল সংসদে নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের পদ শূন্য ঘোষণা করে পুনর্নির্বাচন না দেওয়া হলে ডাকসুর প্রতি শিক্ষার্থীদের অনাস্থা আরও বাড়বে। আর যে ৩৪ জন চিরকুটের মাধ্যমে অবৈধভাবে ভর্তি হয়েছিলেন, তাঁদের বহিষ্কার করতে হবে।
উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের মতো ‘চিরকুট’ উপাচার্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে কখনো আসেননি বলে মন্তব্য করেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান।
সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক বিন ইয়ামিন মোল্লার সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন বক্তব্য দেন। মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন তাঁরা।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন