বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কাউন্সিল আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুনঃতফসিল ঘোষণার কথা জানান ছাত্রদলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন।
এদিকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ পদ পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন পদপ্রত্যাশী নেতারা। তারা বিভিন্ন জেলা শাখা সফর করে কাউন্সিলরদের সঙ্গে দেখা করছেন। সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক প্রার্থীরা আবার ঈদ উপলক্ষে সরাসরি মোবাইলে ফোন করে অথবা মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী যারা:
ছাত্রদলের আগামী কাউন্সিলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যারা সম্ভাব্য প্রার্থী তাদের মধ্যে রয়েছেন- বিলুপ্ত কমিটির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল আলম টিটু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন, সহ-তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক মামুন খান, বৃত্তি ও ছাত্র কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, মুক্তিযোদ্ধা গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম সাগর, স্কুলবিষয়ক সম্পাদক আরাফাত বিল্লাহ, সহ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক আশরাফুল আলম ফকির লিঙ্কন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার, সিনিয়র সহ-সভাপতি তানভীর রেজা রুবেল, সহ-সভাপতি আমিনুর রহমান আমিন, সহ-সভাপতি সাজিদ হাসান বাবু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু তাহের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, তানজিল হাসান, ইকবাল হোসেন শ্যামল, রিজভী আহমেদ ও সহ-সাধারণ সম্পাদক মুতাছিম বিল্লাহ।
সভাপতি পদপ্রার্থী আসাদুল আলম টিটু বলেন, যোগ্য, ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের কাউন্সিলরা ভোট দিয়ে ছাত্রদলের নেতৃত্ব নির্বাচন করবে বলে প্রত্যাশা করছি। নেতৃত্বে আসতে পারলে প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্যাম্পাসকেন্দ্রিক ও আন্দোলনমুখী ছাত্রদল প্রস্তুত করাকেই বেশি প্রাধান্য দেব।
আরেক সভাপতি পদপ্রার্থী মামুন খান বলেন, আমি আমার মাতৃতুল্য আপোষহীননেত্রী খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির আন্দোলন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য ঢাকার রাজপথে কার্যত এবং দৃশ্যমান আন্দোলনের সূচনা করতে চাই। দ্বিতীয়ত দীর্ঘদিনের জরাজীর্ণ অবস্থা থেকে সংগঠনকে গতিশীল করতে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, জেলা ও মহানগরকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তৃণমূলের প্রতিটি ইউনিট কাউন্সিলের মাধ্যমে ঢেলে সাজানোর দীপ্ত অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি। যাতে করে হামলা মামলায় জর্জরিত, কারা নির্যাতিত, ত্যাগী, সাহসী ও মেধাবীরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
সভাপতি পদপ্রার্থী সাজিদ হাসান বাবু বলেন, রাজপথের আন্দোলনে সব সময় ছিলাম, একাধিকবার জেল খেটেছি, নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আশা করি, কাউন্সিলরা সব কিছু বিবেচনা করেই ছাত্রদলের নেতৃত্ব নির্বাচিত করবেন। নেতৃত্বে আসলে ছাত্রদলকে একটি সুসংহত সংগঠনে রুপান্তরিত করে গণতন্ত্র উদ্ধারের আপোষহীন নেত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি, মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে স্বৈরাচারী সরকারের পতনসহ দেশনায়ক তারেক রহমানের সব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হবে আমার অন্যতম কাজ।
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আবু তাহের বলেন, দালাল ও সিন্ডিকেটমুক্ত কমিটি প্রত্যাশা করছি। যারা বিগত দিনের আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে ছিলেন এবং কারানির্যাতিত, তাদেরকে ভোট দিয়ে ছাত্রদলের নেতৃত্বে আনার জন্য ভোটার ভাইদের প্রতি আহ্বান জানাই।
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, আমাদের প্রিয় নেতা, প্রিয় অভিভাবক তারেক রহমান ছাত্রদলের আসন্ন কাউন্সিলের মাধ্যমে তৃণমূলের সঙ্গে কেন্দ্রের একটি যোগসূত্র স্থাপন করেছেন। আমি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলে এই যোগসূত্র ও আদর্শিক বন্ধনকে কাজে লাগিয়ে ছাত্রদলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করে দেশনেত্রীর মুক্তি আন্দোলনকে বেগবান করব। কাউন্সিলর ভাইদের প্রতি আহ্বান থাকবে, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যারা বিগত অন্দোলনে রাজপথে ছিলেন তাদের ছাত্রদলের নেতৃত্বে আনার জন্য ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী তানজিল হাসান বলেন, আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে আমি একাধিকবার জেল খেটেছি, একাধিবার ছাত্রলীগের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আপোষহীন নেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন ও সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও কাজ করে যাবে। আমি বিশ্বাস করি কাউন্সিলররা ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের ভোট দিয়ে নেতৃত্বে আনবেন।
পুনঃতফসিল অনুযায়ী, আগামী শনিবার ও রোববার মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় ১৯ ও ২০ আগস্ট। যাচাই-বাছাই ২২ থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত। এর পর খসড়া প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৭ আগস্ট। প্রার্থীদের আপত্তি গ্রহণ ২৮ আগস্ট, প্রার্থীদের আপিলের নিষ্পত্তি ২৯ ও ৩০ আগস্ট। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৩১ আগস্ট এবং ২ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। এ ছাড়া প্রচারণার জন্য ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।
১৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নির্বাচনে সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শীর্ষ এ দুই পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন