স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করা ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীদের শাস্তির মুখোমুখি করার ক্ষেত্রে ‘ধীরে চলো’ নীতি অনুসরণ করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। যদি তা-ই হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই তাদের ইন্দনদাতা ও সহায়তা করা মন্ত্রী, এমপি, নেতাদের শোকজেও সময় লাগবে। আজ শনিবার দলটির সম্পাদকমন্ডলীর এক সভা শেষে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে এমনটাই আভাস পাওয়া গেছে। জনকন্ঠ
তিনি বলেন, বিভাগীয় পর্যায় থেকে ২০০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। স্ব স্ব বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের টিম এই অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখবে। যে অভিযোগ এসেছে সেই অভিযোগ কারো বিরুদ্ধে কারো ইনটেশনও থাকতে পারে। তাই দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা আগামী ২৭ জুলাই পর্যন্ত যাচাই-বাছাই করে অভিযোগ চিহ্নিত করে জমা দেবেন। এর পর ২৮ জুলাই থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ যাবে। অভিযুক্তদের কাউকে বহিষ্কারের নোটিশ দেয়া হবে, আবার কাউকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে।
শনিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদকম-লী ও সহযোগী সংগঠনের এক যৌথসভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এ প্রসঙ্গে বলেন, উপজেলা নির্বাচনে আমরা ২০০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি, আরও আসছে। এসব অভিযোগ যাচাই করে দেখছেন বিভাগীয় পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতারা। ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে এটা চূড়ান্ত হবে। ২৮ জুলাই থেকে বহিষ্কার ও শোকজ নোটিসের কার্যকারিতা শুরু হবে। তিন সপ্তাহের মধ্যে অভিযুক্তদের শোকজের জবাব দিতে হবে। কারণ দর্শানোর নোটিসের জবাব সন্তোষজনক না হলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, যারা জাতীয় নির্বাচনে বিদ্রোহ করেছে ধরে নিতে পারেন আগামী নির্বাচনে তাদের নমিনেশন পাওয়ার বিষয়টি গ্রহণযোগ্য হবে না। শাস্তি শুধু বহিষ্কার করলে হয় এমনটা নয়, দলের শাস্তি অন্যভাবেও দেয়া যায়।
দেশের চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশের এক-তৃতীয়াংশ জেলা বন্যাকবলিত। কিছু জায়গায় মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। শুরু থেকেই সরকারী ও দলীয়ভাবে দুর্গত এলাকায় সহায়তা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। আওয়ামী লীগের ছয়টি টিম ভাগ হয়ে বন্যাদুর্গত এলাকায় কাজ করছে।
বন্যায় ত্রাণ বিতরণে আওয়ামী লীগের ৬ টিম ॥ দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর জেলায় ত্রাণ বিতরণ করবেন সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদিকা ডাঃ রোকেয়া সুলতানা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা ও বগুড়ায় ত্রাণ বিতরণ করবেন সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ও কেন্দ্রীয় সদস্য অধ্যাপিকা মেরিনা জাহান।
সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে সিলেট, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জে ত্রাণ বিতরণ করবেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মিজবাহ উদ্দিন সিরাজ, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সাবেক মেয়র বদরুদ্দিন আহমেদ কামরান, বনমন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন, ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ এনামুর রহমান ও দলের কেন্দ্রীয় নেতা এ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন।
সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও ফেনীতে দলের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করবেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমীন, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এবং কেন্দ্রীয় নেতা দীপঙ্কর তালুকদার।
শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির নেতৃত্বে মুন্সীগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলায় ত্রাণ বিতরণ করবেন সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আব্দুস সবুর, প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশীদ, শ্রম সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, কেন্দ্রীয় সদস্য এস এম কামাল হোসেন ও মোঃ গোলাম কবীর রব্বানী চিনু। এছাড়া সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও জামালপুরে ত্রাণ বিতরণ করবেন দলের গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কেন্দ্রীয় সদস্য মির্জা আজম, এ্যাডভোকেট এবিএম রিয়াজুল কবীর কাওছার, আনোয়ার হোসেন, মারুফা আক্তার পপি ও উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন