ছাত্রলীগ : বঞ্চিতরা মাঠে, সিদ্ধান্তহীন কেন্দ্র
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতীম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয় ১৩ মে। সেই হিসাবে পেরিয়ে গেছে প্রায় দেড় মাস। কমিটি ঘোষণার পর সেদিন রাত থেকেই যোগ্যদের বাদ দেওয়া এবং বিতর্কিতদের অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ এনে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন পদবঞ্চিতরা। এর পর কয়েক দফা হামলারও শিকার হন আন্দোলনকারীরা।
তারা এসব হামলার বিচার ও বিতর্কিতদের বহিষ্কারের দাবিতে এক মাস দুদিন ধরে টানা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে। বিতর্কিতদের বাদ দিতে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দফায় দফায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও বক্তব্য দিয়েও তা বাস্তবায়ন না করায় আস্থার সংকটও তৈরি হয়েছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সংগঠন পরিচালনায়। গতকালও পদবঞ্চিতরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন।
কেন্দ্রীয় সম্মেলনের প্রায় এক বছর পর গঠন করা হয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। ৩০১ সদস্যের এ কমিটির শতাধিক নেতার বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে পদ বাগিয়ে নেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন থেকে অনুপ্রবেশের অভিযোগ ওঠে। নতুন কমিটির সদস্যদের মধ্যে হত্যা মামলার আসামি থেকে শুরু করে বিবাহিত, বিএনপি-জামায়াতসংশ্লিষ্ট, মাদকসেবী এবং ব্যবসায়ী-চাকরিজীবীর নামও আছে। কমিটি ঘোষণার পর থেকেই এ বিতর্কিত নেতাদের বাদ দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন পদবঞ্চিতরা।
মধুর ক্যান্টিন ও টিএসসিতে তাদের ওপর দুই দফায় হামলা করেন ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা। তবে তাতেও দমেননি আন্দোলনকারীরা। এসব কা-ের জেরে নতুন কমিটির শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন কর্মসূচি স্থগিত হয়ে যায়। পদবঞ্চিতরা ১৬ মে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটির বিতর্কিত ৯৯ নেতার নাম তুলে করেন। রাজু ভাস্কর্যে শুরু করেন অবস্থান কর্মসূচি। ১৯ মে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সিনিয়র চার নেতার হস্তক্ষেপে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা। এর পর গত ২৭ মে পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিতর্কিতদের নিয়েই ধানম-ি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে ছাত্রলীগ। এর প্রতিবাদে ২৭ মে প্রথম প্রহর থেকে ফের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন পদবঞ্চিতরা। রোজা ও ঈদের দিনেও এ কর্মসূচি অব্যাহত ছিল, যা এখনো চলছে।
৪ দফা দাবিতে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি দেন পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া নেতারা। তাদের ৪টি দাবি হলো- শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ, ছাত্রলীগের কমিটির যে ১৯ বিতর্কিত নেতার পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের তরফে, তাদের পদ ও নাম প্রকাশ, কমিটিতে যত বিতর্কিত নেতা রয়েছেন তাদের পদ শূন্য ঘোষণা করা, পদবঞ্চিতদের মধ্যে যোগ্যতার ভিত্তিতে শূন্য পদগুলোতে পদায়ন এবং মধুর ক্যান্টিন ও টিএসসিতে পদবঞ্চিতদের ওপর যে হামলা হয়েছিল- এর সুষ্ঠু বিচার।
জানা যায়, ১৩ মে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর কয়েক দফা বিতর্কিতদের বাদ দিতে সংবাদ সম্মেলন, সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় ছাত্রলীগ। তবে এর কোনোটিই বাস্তবায়ন হয়নি। ১৫ মে আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানম-ির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নতুন কমিটিতে স্থান পাওয়া বিতর্কিত ১৭ নেতার নাম প্রকাশ করেন। তাদের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তথ্য-প্রমাণসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করে পদগুলো শূন্য ঘোষণা করা হবে বলে তারা সেদিন জানান; কিন্তু তা হয়নি। ২৯ মে প্রথম প্রহরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ১৯টি পদ শূন্য ঘোষণা করেন ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তবে শূন্য পদ ও নেতার নাম প্রকাশ করেননি তারা। এ ছাড়া যে ১৭ জন বিতর্কিতের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল এর আগে, তাদেরও এখন সংগঠনের সব কর্মসূচিতে নিয়মিতই দেখা যাচ্ছে।
এদিকে রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেওয়া পদবঞ্চিত নেতারা গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী মুখে কালো কাপড় বেঁধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পদবঞ্চিতরা। আগের কমিটির কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক রাকিব হোসেন এ বিষয়ে বলেন, ছাত্রলীগের কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ দেওয়ার দাবিতে আমরা দীর্ঘ এক মাস যাবৎ রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান করছি; কিন্তু এর পরও ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিষয়টি নিয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। তাই লজ্জা, ঘৃণা ও ক্ষোভ থেকেই আজ আমরা মুখে কালো কাপড় বেধে রাজু ভাস্কর্যের সামনে দাঁড়িয়েছি।
আগের কমিটির উপ-দপ্তর সম্পাদক শেখ নকিবুল ইসলাম সুমন বলেন, আমাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল দেশরতœ শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে বিতর্কিত নেতাদের কবল থেকে মুক্ত করতে নির্দেশনা দেওয়ার পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠনটি বিতর্কমুক্ত করতে চান না যারা, তাদের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে ও ক্ষোভ প্রকাশ করে আমাদের আজকের এই প্রতীকী প্রতিবাদ। যদি অচিরেই বিতর্কিত নেতাদের বাদ না দেওয়া হয়, তা হলে আমরণ অনশনের মতো কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়া ছাড়া আমাদের উপায় নেই।
আন্দোলনকারী নেতাদের অন্যতম গত কমিটির সমাজসেবাবিষয়ক সম্পাদক রানা হামিদ। তিনি বলেন, নেত্রী (শেখ হাসিনা) ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কমিটি বিতর্কমুক্ত করতে বার বার নির্দেশ দেওয়ার পরও কার স্বার্থে তারা এখনো এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছেন না, তা আমরা বুঝতে পারছি না।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, তাদের অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য আমরা যাচাই-বাছাই করছি। ছাত্রলীগে কোনোভাবেই বিতর্কিতদের স্থান দেওয়া হবে না। অভিযোগ প্রমাণ হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছি। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাদের নাম প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, আমরা পদবঞ্চিতদের সঙ্গে কয়েক দফা কথা বলেছি। তাদের অনুরোধ করেছি কর্মসূচি থেকে সরে যেতে; কিন্তু কোন অদৃশ্য কারণে তারা কর্মসূচি থেকে সরছেন না, তা জানি না।
ছাত্রদল : নতুন কমিটি নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ বহিষ্কার
বিএনপির ভ্যানগার্ড হিসেবে পরিচিত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এখন উল্টো দলের জন্য বিষফোঁড়া হয়ে দেখা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিগত সময়েও কমিটি গঠনের পর বিদ্রোহ দেখা গেছে। তবে এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। কমিটি গঠনের নীতিমালা ঘোষণা করতেই শুরু হয়ে গেছে বিদ্রোহ।
বিদ্রোহীদের ক্ষোভের অনলে আক্রান্ত হতে হয়েছে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে; অবরুদ্ধ হয়েছেন নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়।
২০০০ সালে এবং এর পরে যারা এসএসসি পাস করেছেন, তারাই শুধু নতুন কমিটিতে আসতে পারবেন- এমন ঘোষণা দিয়ে ৩ জুন ছাত্রদলের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এ নীতির জেরে বিলুপ্ত কমিটির বয়স্ক নেতারা ক্ষুব্ধ হন। গত ১১ জুন থেকে শুরু হয় তাদের বিক্ষোভ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক নেতা আমাদের সময়কে বলেন, ক্ষুব্ধ এসব নেতাকে কোনোরকম সান্ত¡না না দিয়ে বরং উস্কে দিয়েছেন দলের প্রভাবশালী নেতারা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে কিছু বলতে না পারলেও কমিটি বিলুপ্ত করার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর দেওয়ায় তোপের মধ্যে আছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গত ১১ জুন তাকে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বের করে দেওয়ারও উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু সেদিন দলের স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বরচন্দ্র রায়ের হস্তক্ষেপে বিষয়টি আর আগায়নি।
গত শনিবার রিজভীকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে লাঞ্ছিত করা হয়। এর জের ধরে সংগঠন থেকে ছাত্রদলের সাবেক ১২ নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। বহিষ্কৃত নেতাদের একজন, বিলুপ্ত কমিটির সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার কবির বলেন, রিজভী ভাই ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। তিনি তো আমাদের নেতা। তাকে আমাদের কেউই লাঞ্ছিত করেননি। বরং তাকে নিরাপদে কার্যালয়ে প্রবেশে আমরা সহায়তা করেছি।
ছাত্রদলের আরেক নেতা বলেন, রিজভীকে কারা লাঞ্ছিত করেছেন, সার্চ কমিটির কাছে তাদের নাম চেয়েছিলেন তারেক রহমান। কিন্তু কারও নাম দেওয়া হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হন তিনি। লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার পর শনিবার কার্যালয়ের নিচতলায় আন্দোলনকারীরা সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে যারা উপস্থিত ছিলেন, তাদের তালিকা করে বহিষ্কার করা হয়।
বিএনপির বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, দলের একটি অংশ এখন তারেক রহমানকে বুঝিয়ে আলোচনার পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে। এ প্রসঙ্গে ইখতিয়ার কবির বলেন, বুধবার (আজ) মানবাধিকার দিবস। বিএনপির পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। আমরা এ সংকটের সমাধান চাই। বয়সসীমা তুলে দিয়ে নীতিমালার পুনঃতফসিল না হলে সম্মেলন হতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, আগামীকালের (আজ) মধ্যে যদি দাবি আদায় না হয়, সে ক্ষেত্রে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটলে সিন্ডিকেটই দায়ী থাকবে। বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, যারা আন্দোলন করছে, তারা আমাদেরই ছোট ভাই। আমরা আশা করব সিনিয়র নেতারা যে তফসিল ঘোষণা করেছেন, তা মেনে নিয়ে তারা আমাদের সহযোগিতা করবে।
বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছাত্রদলের কমিটি গঠনের জন্য ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পর্যায়ের ১২ জন নেতাকে দায়িত্ব দেন তারেক রহমান। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ রয়েছে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের উস্কে দেওয়ার নেপথ্যে নাকি তাদেরও কেউ কেউ জড়িত। সব মিলিয়ে ছাত্রদলে অস্থিরতা অনেক বেড়ে গিয়েছে। সংগঠনের কমিটি নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয় বেশ কয়েকটি বলয়। এর মধ্যে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা থেকে শুরু করে তারেক রহমানের হাওয়া ভবনকেন্দ্রিক কিছু নেতাও রয়েছেন। ছাত্রদলের নেতাদের অভিযোগ, সার্চ কমিটির কিছু নেতা ও তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ দাবিদার কিছু নেতা তাদের পছন্দের নেতা বানানোর জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হলে এ ক্ষেত্রে বাদ পড়তে পারেন তাদের অনেকেই। আবার কেন্দ্রীয় একাধিক প্রভাবশালী নেতাও চাইছেন, সম্মেলন নয়, প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কমিটি গঠন করতে। এ ক্ষেত্রে তাদের যুক্তি হচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে মামলা-হামলার শিকার এসব সিনিয়র নেতাকর্মী রাজনৈতিক পরিচয়ের সংকটে ভুগবেন। তাই অন্তত স্বল্প সময়ের জন্য হলেও সিনিয়রদের দিয়ে একটি কমিটি গঠন করা উচিত।
এদিকে গতকালও ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির ক্ষুব্ধ ও বয়স্ক নেতারা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় ভাঙচুর চালিয়েছেন। এ সময় তারা কার্যালয়ের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা ও চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন। এরপর তারা এক ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। কর্মসূচি সমাপ্তির পর নয়াপল্টন এলাকায় দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। গত সোমবারও নয়াপল্টনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
কার্যালয়ে ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এ বিষয়ে তার কোনো মন্তব্য নেই। তবে তিনি এও বলেন, নির্ধারিত সময়েই অর্থাৎ আগামী ১৫ জুলাই ছাত্রদলের সম্মেলন হবে। সেভাবেই কর্মকা- এগিয়ে চলছে।
গতকাল দুপুর ১২টায় কাকরাইলের স্কাউট ভবনের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে বহিষ্কৃত ছাত্রনেতাদের নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধরা বিএনপি কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় কার্যালয়ের নিচে ঘোষিত কাউন্সিলকে স্বাগত জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকা ছাত্রদলের বেশকিছু নেতাকর্মীকে ধাওয়া দিয়ে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। কার্যালয়ের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা ভাঙচুর ও নিচে থাকা চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধরা। ধাওয়ার সময় নিচতলায় অবস্থান করা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের মুখোমুখি মারামারি বেধে যায়। এ সময় উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষুব্ধরা প্রায় ঘণ্টাখানেক বিএনপি কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বসে পড়ে থেমে থেমে সেøাগান দেন। ‘সিন্ডিকেটের দালালদের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘সিন্ডিকেটের দেওয়া নির্বাচন, মানি না মানব না’ ইত্যাদি সেøাগান দেন তারা। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ভবনের নিচতলায় কার্যালয়টির বিদ্যুতের মেইন সুইচও বন্ধ করে দেন। তখন কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান করছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ আরও কিছু কেন্দ্রীয় নেতা এবং ছাত্রদলের কাউন্সিলের সমর্থনকারী ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন