কারাবন্দি ও অসুস্থ দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি আবারও নাকোচ করে দিয়েছেন বিএনপি সিনিয়র নেতারা। এছাড়াও প্যারোলে মুক্তির জন্য সমঝোতা হিসেবে দলের বিজয়ী সংসদ সদস্যদের শপথ না নেয়ার বিষয়টিও স্পষ্ট ভাষায় নাকোচ করে দিয়েছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। তারা এসব বিষয়কে সরকারের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার বলেও দাবি করেন।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ‘খালেদা জিয়া তৃতীয় বিশ্বের কণ্ঠস্বর’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যে এমন আভাস পাওয়া গেছে।
খালেদা জিয়া ‘কারাগার থেকেই’ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিবেন এমন ইঙ্গিত দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের নেত্রী যেখানেই থাকুন, জেলে বা বাইরে থাকুন তিনি আমাদের অনুপ্রেরণা। তিনি আমাদের নেতৃত্ব দিয়ে গণতন্ত্রকে মুক্ত করবেন।’
খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘তিনি এত অসুস্থ যে, বলে বোঝানো যাবে না। নববর্ষের দিন আমরা তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। তিনি এখন হুইল চেয়ার ছাড়া হাটঁতেও পারেন না। বিছানা থেকে ওঠার জন্য তাকে সাহায্য নিতে হয়। তারপরও তিনি এতটুকুও মনোবল হারাননি। এই মনোবল আমাদের মধ্যে সঞ্চারিত করতে হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দেশে অস্বাভাবিক অবস্থা চলছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। আর গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।’
বিএনপির এমপিদের শপথ নেয়ার গুঞ্জনের বিষয়টি স্পষ্ট করেন দলের স্থায়ী কমিটির অন্যতম প্রভাবশালী সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত সংসদে যাওয়া নিয়ে কোনও আলোচনা নয়। নির্বাচিতদের শপথ নেয়ার প্রশ্নই আসে না। এই সিদ্ধান্ত আমরা আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সম্মতিক্রমে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা নিয়েছি। সুতরাং এই সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসার প্রশ্নই আসে না। বিষয়টা এখানেই নিষ্পত্তি হওয়ার প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’
‘প্যারোলে মুক্তি’ নিয়ে সরকার বিএনপিকে উসকানি দিচ্ছে মন্তব্য করেন স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘খালেদা জিয়ার চারপাশে সৎ, নির্ভীক ও সাহসী লোক নেই। তাঁকে সৎ পরামর্শ দেওয়ার মতো লোক তৈরি হয়নি। যার জন্য নেতারা সংকট মোকাবিলা করতে ভয় পাচ্ছেন। আর সেই সুযোগ নিয়ে সরকার প্যারোলে মুক্তি নিয়ে উসকানি দিচ্ছে এবং উসকানি দেয়ার সাহস পাচ্ছে।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি ঠাট্টা ও মসকরা ছাড়া আর কিছু নয়। আর এধরনের অসঙ্গতি প্রস্তাব সরকারের কাছ থেকে আসতে পারে না এবং আসবে না।’
প্রকাশনা উৎসবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বইটির দুই লেখক অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ ও কবি আব্দুল হাই শিকদারও এসময় উপস্থিত ছিলেন।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন