সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ও সড়ক দুর্ঘটনা রোধে শাজাহান খানের নেতৃত্বে কমিটি গঠনকে হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানকে আহ্বায়ক করে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তা রীতিমতো হাস্যকর। এই শ্রমিক নেতার কারণেই যত প্রাণহানি ও বিশৃঙ্খলা ঘটেছে। ঘটনাটা দাঁড়াচ্ছে- চোরের কাছে চুরির বিচার দেয়া। রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, যখনই সড়কের বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে আন্দোলন হয়েছে তখনই এই শাজাহান খানরাই বাধার সৃষ্টি করেছে। মূলত সড়কে দুর্ঘটনা ও মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য এই নেতাই অনেকাংশে দায়ী।
কাজেই তাকে আহ্বায়ক করে যে কমিটি করা হয়েছে, তা জাতির সঙ্গে তামাশা মাত্র। মিডনাইট সরকারের এটি জনগণের সঙ্গে আরেকটি শ্রেষ্ঠ প্রহসন। এতে সড়কে বিশৃঙ্খলা ও মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কত যে পুনরাবৃত্তি হবে, তা বলাই বাহুল্য। বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া ঢাকা মহানগরীতে ১২ ঘণ্টা গ্যাস বন্ধের ঘোষণাকে ‘নিষ্ঠুর কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রতিফলন’ মন্তব্য করে এর নিন্দা জানান রিজভী।
তিনি বলেন, ঢাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ আছে। বলা হচ্ছে, প্রায় অর্ধেক মহানগরীতে গ্যাস সরবরাহ আজকে (গতকাল) বন্ধ থাকবে। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না করে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ঘোষণা নিষ্ঠুর কর্তৃত্ববাদী শাসনেরই প্রতিফলন বলে আমরা মনে করি।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু ভোটের সরকার থাকলে বিকল্প ব্যবস্থা নিশ্চিত করেই মহানগরীতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করত অন্য কোনো ?উন্নয়নের কাজে। কিন্তু এ সরকারের তো কোনো ভোটের দরকারই নেই। তাদের তো মধ্যরাতে ভোট হলেই চলে। এ ধরনের সরকার কোনোদিনই জনদুর্ভোগকে গুরুত্ব দেবে না।
তিনটি ব্যাংকের অনুমোদন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ব্যাংক লুটের কারণে দেশের ব্যাংকগুলোর যখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা তখন আবারও নতুন তিনটি ব্যাংকের অনুমোদন ব্যাংক লুটের পথকে আরও প্রসারিত করল।
বর্তমানে অনুমোদনকৃত তিনটি ব্যাংকসহ দেশের অধিকাংশ ব্যাংকের মালিকানায় রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের নেতা কিংবা স্বজনরা। যখন পূর্বের ঢালাওভাবে অনুমোদিত ব্যাংকগুলো ধসে পড়ছে তখন আবারও তিনটি ব্যাংকের অনুমোদনে এটি সুস্পষ্ট যে, জনগণ ও দেশের সর্বশেষ সঞ্চয়টুকু শোষণ করতেই মিডনাইট সরকারের খয়ের খাঁদের নতুন তিনটি ব্যাংক দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
দুই দিনের কর্মসূচি : ২১ ফেব্রুয়ারি ‘শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উপলক্ষে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। এর মধ্যে আছে- আজ রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বেলা ২টায় আলোচনা সভা এবং আগামীকাল সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, কালো পতাকা উত্তোলন, সকাল ৬টায় কালো ব্যাজ ধারণ করে নেতাকর্মীরা রাজধানীর বলাকা সিনেমা হলের কাছে জমায়েত হয়ে আজিমপুর কবরস্থানে ভাষা শহীদদের কবর জিয়ারত শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন।
কর্মসূচি ঘোষণা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, সারা দেশের জেলা-উপজেলা-থানাসহ বিভিন্ন ইউনিট স্থানীয়ভাবে শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও আলোচনা সভার কর্মসূচি গ্রহণ করবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন