আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ফাইল ফটো
গণশুনানির নামে ঐক্যফ্রন্ট ‘গণতামাশা’ করলে পুলিশকে ‘ব্যবস্থা’ নিতে বলবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরে এক বৈঠকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের গণশুনানি কাকে বলে? গণশুনানি না গণতামাশা? তারা যদি গণশুনানি না করে গণতামাশা করে, তাহলে ডিএমপি কমিশনারকে বলব অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিতে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট একাদশ সংসদ নির্বাচনে ‘ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ নিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি গণশুনানি করার ঘোষণা দিয়েছে।
সেতুমন্ত্রী এর আগে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রকল্প পরিচালকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে আসন্ন রোজার ঈদ ও বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগে সড়ক ও মহাসড়ক অবৈধ দখলমুক্ত ও সড়কের ভাঙাচোরা মেরামত করতে প্রকৌশলীদের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ঈদের আগেই সড়কে উচ্ছেদ নয়, উদ্ধার অভিযান চালাতে হবে। উল্টো পথে গাড়ি চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে। সড়কের ভাঙাচোরা মেরামত করতে হবে। রাস্তা গাড়ি চলাচলের উপযোগী করতে হবে। এছাড়া বরিশাল-ভাঙ্গা সড়ক চার লেন নির্মাণে ডিপিপি প্রণয়ন করতে বলেন।
সভায় সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে প্রকল্প পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। সড়কের নির্মাণ কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, নতুন রাস্তা নির্মাণের ক্ষেত্রেও আমাদের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়।
অনেক সময় দেখা যায়, এক পশলা বৃষ্টি হলেই নতুন রাস্তার ছাল-বাকল সব উঠে যায়। তাহলে এ রাস্তা করার দরকার কী? আমাদের এখানে রাস্তার মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। নির্মাণের সময় সবার আগে মানটা নিশ্চিত করতে হবে। ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, টাকা বেশি খরচ হলেও যেন টেকসই সড়ক নির্মাণ করা হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। সড়কের কারণে দুর্নাম হলে তার দায় মন্ত্রী ও সৎ কর্মকর্তাদের ওপর বর্তায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, গাজীপুর থেকে এলেঙ্গা হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত এলাকায় যানজট বেশি। একই অবস্থা ঢাকা-টঙ্গী-গাজীপুর অংশেও। রমজানের ঈদের আগেই এ সড়ক দুটির যানজট নিরসনে কাজ করতে হবে। মানুষকে নির্বিঘ্নে চলাচলের সুযোগ করে দিতে হবে। এ সময় তিনি বিআরটি প্রকল্পের পরিচালককে উত্তরা ও গাজীপুর অংশে মানুষের দুর্ভোগ কমাতে নির্দেশ দেন।
কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়ক সম্পর্কে তিনি বলেন, এ সড়কটি বেশ অপ্রশস্ত। এটির প্রশস্ততা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি মেরিন ড্রাইভ এলাকাটিকে যদি আলোকিত করা যায়, মানুষের বিনোদনের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে পর্যটন আকর্ষণ আরও বেড়ে যাবে। মন্ত্রী বলেন, বরিশাল এমন একটি বিভাগ, যেখানে চার লেন নেই।
তিনি ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত চার লেন নির্মাণের প্রকল্প নিতে নির্দেশ দেন। পরে ১৪ দলের সমালোচনা নিয়ে আওয়ামী লীগ কী ভাবে- সাংবাদিকের এ প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৪ দলের শরিকদের সমালোচনার বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছি। তারা আজ মুখ খুলেছেন, সমালোচনা করছেন। সরকার ভালোভাবে চলার জন্য এই সমালোচনাটি দরকার।
এ সমালোচনা সংসদের বাইরের গণতন্ত্রে ইতিবাচক। গঠনমূলক বিরোধী দলের মাধ্যমে সংসদ আরও গতিশীল হতে পারে। তিনি আরও বলেন, এ সমালোচনাগুলো আমাদের প্রয়োজন আছে। যদি আমরা কোনো ভুল করি, ভুলকে সংশোধন করার জন্য এ সমালোচনার প্রয়োজন। এটা অব্যাহত থাকলে গণতন্ত্রের জন্য ভালো।
আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে যাবে- নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার এই বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ নয়, মামলা করতে করতে তারা (ঐক্যফ্রন্ট) নিজেরাই পঙ্গু হয়ে যাবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্রার্থী প্যানেল তৈরিতে কোনো সমস্যা নেই। তিনি জানান, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও প্রথম ধাপে দলটির ২৩ জন ও দ্বিতীয় ধাপে ৩৭ জন প্রার্থী হয়েছেন। সভায় সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাছান সংস্থাটির জনবল সংকটের কথা জানিয়ে বলেন, জনবল সংকটের কারণে মেগা ও অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়নে সমস্যা হচ্ছে।
এরই মধ্যে নতুন জনবল কাঠামো অনুমোদনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই কাঠামো অনুমোদনে মন্ত্রীর সহায়তা কামনা করেন তিনি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন