মানবিক দিক বিবেচনা করে হলেও কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া উচিৎ বলে মনে করেন সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইফ জয়নুল আবদিন ফারুক।
তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে আমি কোন দাবি দিতে চাই না। বর্তমান সরকার প্রধান একজন মহিলা এবং আরেকজন সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, তিনিও মহিলা। মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করে হলেও বেগম জিয়াকে আজকে মুক্তি দেওয়া উচিত। তার বিরুদ্ধে যত মামলা আছে সেগুলো চলতে পারে। কিন্তু তার জামিনের ব্যবস্থা করা হোক এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।’
মঙ্গলবার(১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া,দলটির সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আরিফা সুলতানা রুমাসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে এক মানববন্ধনে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের এ উপদেষ্টা বলেন, ‘মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে এই সরকারের কাছে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত তা আমি জানি না। আমার মনে হয় না এসব করে কোনো লাভ হবে। বিএনপির একজন কর্মী হিসেবে এটা আমার বিশ্বাস হয় না।’
তিনি বলেন, ‘কোন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে সেটা আমি বিশ্বাস করি না। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনেও এই ঘটনাই ঘটেছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমার দল অংশগ্রহণ করে নাই। সেই নির্বাচন ভোটারবিহীন হয়েছে এবং সেই কলঙ্কিত নির্বাচন দিয়ে সরকার পাঁচটি বছর অতিক্রম করেছে। ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। আর এই নির্বাচনের জন্য দায়ী নির্বাচন কমিশনার। এই নির্বাচন কমিশনারের অধীনে পুলিশ ও বিজিবি ছিলো। তাহলে কি করে দিনের বেলার ভোট, রাতের বেলায় করলো? এই বিষয়টা তদন্তে আনা উচিত।’
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন,‘ব্যর্থ এই নির্বাচন কমিশনারের অধীনে যে সরকার গঠিত হয়েছে সেই সরকারের কাছে আমি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি কামনা করি না। আমি আমাদের অনেক নেতার কাছে শুনেছি এই সরকারের আমলে নাকি আইনি প্রক্রিয়া খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। আসলে তার মুক্তির জন্য দলকে আরও সুসংগঠিত হতে হবে এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে হবে।’
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন, ‘শেখ হাসিনার কাছে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে কি কোন লাভ আছে? তার কাছে মুক্তি চেয়ে কোন লাভ হবে না। কারণ বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে নেয়া হয়েছে এই কারণে যে, বিএনপি যাতে আবার ঘুরে দাঁড়াতে না পারে। নির্বাচনে জয় লাভ না করতে পারে এবং জনগণের সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারে। এখন আমাদের আন্দোলন ছাড়া কোন বিকল্প নাই। আন্দোলন গড়ে তুলতে হলে যে যেখানে আছেন সেখান থেকেই সংগঠিত হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের সুশীল নাগরিক বুদ্ধিজীবী এবং কিছু সাংবাদিক কখনো কখনো সরকারের সাথে তাল মিলিয়ে বলেন বিএনপি পারলে আন্দোলন করুক। আমি বলতে চাই বিএনপি যদি আন্দোলন করে তাহলে বাধা আসবে। আর বাধা আসলে তার প্রতিরোধ করবে আর তখন যে আন্দোলন শুরু হবে তখন তো আবার বলবেন না যে বিএনপি জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন, ধ্বংসাত্মক আন্দোলন শুরু করেছে।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জিয়া নাগরিক ফোরামের সভাপতি লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, সংগঠনের প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ গোলাম সরোয়ার সরকার,স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা নুরুজ্জামান সর্দার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন