ইউনিভার্সিটি অব বন’র ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো ড. মারুফ মল্লিক মন্তব্য করে বলেছেন, ইসি কি সরকারি দলের আজ্ঞাবহ, নাকি ভয় পায়? কোনো কারণে যদি প্রধান বিরোধী দলগুলো নির্বাচন থেকে সরে আসে তার দায়ভার ইসিকেই নিতে হবে।
শুক্রবার প্রথম আলোতে এসব কথা লিখেছেন তিনি।
ড. মারুফ মল্লিকের ভাষায়, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ রীতিমতো উৎসব করে মনোনয়ন ফরম বিতরণ করেছে। আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা আনন্দ–উল্লাস করে, ঢাকঢোল পিটিয়ে মনোনয়ন ফরম ক্রয় করেছেন। নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের উৎসব। এই উৎসবে কোথাও মোটরসাইকেলের শোভাযাত্রাও দেখা গেছে। মোহাম্মদপুরে দুই মনোনয়নপ্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে দুজন নিরীহ পথচারী মারাও গেল। সে ঘটনাতেও নির্বাচন কমিশন ওই প্রার্থীদের প্রতি রুষ্ঠ হয়েছে বলে মনে হয়নি। কিন্তু গোল বাধল বিএনপির বেলায়।
‘যখন বিএনপিও মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু করল। এরা আবার আরও এককাঠি সরেস। শুধু মিছিল, শোভাযাত্রাই নয়, তাঁদের কেউ কেউ হাতি নিয়ে এলেন দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে। এতক্ষণে কুম্ভকর্ণ ইসির ঘুম ভাঙল বা ঘুমের ভান ধরে থাকা নির্বাচন কমিশনের মনে হলো কোথাও কোথাও আচরণবিধি লঙ্ঘিত হতে পারে বা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে চিঠি দিয়ে আচরণবিধি নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ জারি করল ইসি। এর পরদিনই বিএনপি অফিসের সামনে পল্টন এলাকায় সংঘর্ষের সূত্রপাত। বিএনপি ও পুলিশ; দুই পক্ষই পরস্পরকে উসকানির দায়ে অভিযুক্ত করেছে। ঘটনা যা–ই হোক, আমরা গাড়ি পোড়ানো ও ভাঙচুরের দৃশ্য দেখেছি। পুলিশের গাড়ির ওপর উঠে নৃত্যরত পিকেটারকেও দেখেছি। পুলিশ বলেছে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগকারীরা বিএনপি তথা ছাত্রদলের কর্মী। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, ভাঙচুরকারীরা ছাত্রলীগের কর্মী।’
ড. মারুফ মল্লিক আরো লিখেছেন, এক দল যখন মিছিল, শোভাযাত্রা নিয়ে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করল, তখন ইসির আচরণবিধি লঙ্ঘনের কথা মনে আসেনি। কিন্তু আরেক দল শুরু করতেই নড়েচড়ে বসল। তখন ইসির বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ আনা খুবই স্বাভাবিক হবে। কিন্তু ইসি কেন এমন করল? ইসি কি সরকারি দলের আজ্ঞাবহ, নাকি ভয় পায়? তাই লোভ, লালসা, চাপ ও ভয়ের ঊর্ধ্বে থেকে ইসিকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। অন্যথায় কোনো কারণে যদি প্রধান বিরোধী দলগুলো নির্বাচন থেকে সরে আসে তার দায়ভার ইসিকেই নিতে হবে।আস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন