আওয়ামী লীগের সদস্য না হলেও দলের মনোনয়ন ফরম নিলেন নাজমুল হুদা। বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে আসতে চান-জানা দিয়েছিল আগেই। চালাচ্ছিলেন আলোচনা। তবে শেষ পর্যন্ত তার নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন ফরম কেনাটা ছিল চমকের মতো।
গতকাল বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে একজন প্রতিনিধির মাধ্যমে এই ফরম সংগ্রহ করেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী। ঢাকা-১৭ আসন (ক্যান্টনমেন্ট, গুলশান, বনানী, ভাষানটেক) নির্বাচন করতে চান তিনি।
নাজমুল হুদা এই আসনটিতে নির্বাচন করতে চান, এই গুঞ্জন আগেই ছিল। এলাকাবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে গত ঈদে পোস্টারও সাঁটা হয়েছিল গুলশানসহ বিভিন্ন এলাকায়।
মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে নাজমুল হুদার সামনে একটি বড় বাধা রয়েছে। দুর্নীতির একটি মামলায় তার চার বছরের কারাদ- হয়েছে। গত বছরের ৮ নভেম্বর হাইকোর্টের দেওয়া ওই রায়ের কপি এখনো বিচারিক আদালতে পৌঁছেনি। তাই নাজমুল হুদারও আত্মসমর্পণ করার প্রয়োজন হচ্ছে না। তিনি রাজনীতিতেই সরব থাকতে পারছেন।
তবে হাইকোর্টের এই রায়ের কপিটি বিচারিক আদালতে পৌঁছলে সাবেক বিএনপি নেতাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। আর দণ্ড স্থগিত না হলে তার নির্বাচনে অংশ নেওয়া সম্ভব হবে না।
২০১০ সাল থেকে বিএনপির সঙ্গে নাজমুল হুদার টানাপড়েন শুরু হয়। দল তাকে বহিষ্কার করে। সেই বহিষ্কার আদেশের পরও তিনি বিএনপির পরিচয়েই রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করেন। পরে ২০১২ সালের জুনে তিনি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন।
এর দুই মাসের মধ্যে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) নামে নতুন একটি দল নিয়ে তিনি সামনে আসেন নাজমুল হুদা। কিন্তু এটাও বেশিদিন টেকেনি। কয়েক মাসের মধ্যেই ফ্রন্টের আরেক নেতা আবুল কালাম আজাদ তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসন থেকে বিএনএফের ব্যানারে আবুল কালাম আজাদ বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হন। ওই আসনে তিনিই ছিলেন একমাত্র প্রার্থী।
তবে নাজমুল হুদা থেমে থাকেননি। ২০১৪ সালে আবারও নতুন দল নিয়ে আসেন। ওই বছরের মে মাসে তিনি গঠন করেন বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট অ্যালায়েন্স (বিএনএ)। কিন্তু এই দল বেশিদিন টেকেনি।
ছয় মাস যেতে না যেতেই ২০১৪ সালের নভেম্বরে গঠন করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি (বিএমপি)। এটিও আর দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ২০১৫ সালের নভেম্বরে তিনি আসেন নতুন দল নিয়ে। নাম দেন ‘তৃণমূল বিএনপি’। এখন তিনি এই দলের সভাপতি। দলটিকে নিবন্ধন দিতে সম্প্রতি হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে।
মনোনয়ন সংগ্রহের বিষয়ে কথা বলার জন্য নাজমুল হুদার নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন