রাজশাহীর বাগমারা আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল ও তার ঘনিষ্ঠ এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে পৈতৃক সম্পত্তি দখলের অভিযোগ তুলেছেন সংখ্যালঘু হিন্দু ও সাঁওতালরা। তাদের অভিযোগ, প্রতিবাদ করায় তাদের বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাঠানোর হুমকিও দেয়া হয়েছে।
তারা বলছেন, পাকিস্তান আমলে ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু ও সাঁওতালরা পূর্বপুরুষদের রেকর্ডভুক্ত জমি ভোগ দখল করে আসছিল। ২০১৪ সালের দিকে প্রায় ১৭৪ বিঘা জমি বেনামি মালিক বানিয়ে দখল করা হয়। যে জমিতে শ্মশানও রয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তোলেন তারা। সংসদ সদস্যের এমন জবরদখলের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দুর্গাপুর পৌর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুকুমার চন্দ্র কবিরাজ।
তিনি বলেন, দুর্গাপুরের বাঁশবাড়ীয়া গ্রামে সাঁওতালদের পাশাপাশি হিন্দুরাও বসবাস করে আসছেন। ১৯৬৪ সালে আব্দুস সামাদ মূসা নামে এক ব্যক্তি ভারত থেকে এসে কথিত বিনিময় মূল্যে দেড়শ বিঘা জমি দখলের চেষ্টা করেন। তবে আদালতে মামলা করে ডিক্রিপ্রাপ্ত হন আদিবাসীরা।
কিন্তু এরপর থেকে এহেন চেষ্টা অব্যাহত থাকে। ২০১৪ সালে মোছা রাজাকারের কাছ থেকে কথিত রেজিস্ট্রির মাধ্যমে হিন্দুদের ২২ বিঘা ও আদিবাসীদের ১৫২ বিঘা জমি জবরদখলের চেষ্টা করে আসছেন অভিযুক্তরা।
হিন্দু ও সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর অভিযোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, রাজশাহী-৫ আসনের এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারা, পুঠিয়া পৌরসভার মেয়র রবিউল ইসলাম রবি, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসান উল হক মাসুদ ও রাজশাহী-৪ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক অবৈধভাবে জবরদখল করেন। নর্দান ইনস্টিটিউট নামে প্রতিষ্ঠান করার নামে মোছা রাজাকারের কথিত রেজিস্ট্রির কথা প্রচার করা হয়। যদিও মোছা রাজাকার কারাগারে।
সংবাদ সম্মেলনে দুর্গাপুর আওয়ামী লীগ নেতা মো. আ. লতিফ বলেন, শ্মশান দখল করা হয়েছে। হিন্দু কিংবা আদিবাসীদের কেউ মারা গেলে মাটি দিতে কিংবা শ্মশানে পোড়ানোর ক্ষেত্রে বাধা দিচ্ছে দখলবাজরা। এসবের প্রতিবাদ করে রাজশাহী অতিরিক্ত জজ আদালতে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করার বিষয়ে মৌখিক নির্দেশ বন্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হিন্দু ও সাঁওতালরা তাদের দখলদারিত্ব এখনো ছাড়েননি।
নালিশি সম্পত্তি জবরদখলের অপচেষ্টা চলছে। হত্যা, বাড়ি উচ্ছেদ করার হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে।সরকারের কাছে আবেদন, এখানে হিন্দু, সাঁওতাল কিংবা মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রয়েছে। তবে সরকারদলীয় দুই এমপি’র জবরদখলের অপচেষ্টার কারণে এখানে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। সাঁওতাল ও হিন্দুদের পৈতৃক সম্পত্তি জবরদখল থেকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপুর বাঁশবাড়ীয়া গ্রামের বাসিন্দা শুকলাল টুডু, শুকল টুডু, নরেন্দ্র নাথ প্রামাণিক, শিতল টুডু প্রমুখ।
শীর্ষনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন