গণস্বাস্থ্যের ট্রাষ্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিয়ে রীতিমত বিপদেই পড়েছে সরকার। সরকার তাকে না পারছে ধরতে না পারছে ফেলতে। বিএনপি পন্থী সুশীল সমাজ হিসেবে পরিচিত এই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলাসহ অন্তত চারটি মামলা রয়েছে। রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনী সম্পর্কে উস্কানি ও বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা হয়েছে ১০ দিন আগে। কিন্তু তারপরও তিনি গ্রেপ্তার নয় কেন? শুধু রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলাই নয়, গত ১০ দিন আগে ডা. জাফরুল্লাহর বিরুদ্ধে একাধিক জমি দখল ও চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। এত মামলার পর কেন জাফরুল্লাহকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা গ্রেপ্তার করছে না।
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার জন্য তাকে গ্রেপ্তার করতে দ্বিধান্বিত সরকার। তিনবছর ধরে ড. জাফরুল্লাহ কিডনি অসুখে ভুগছেন। বর্তমানে তাঁর দুটি কিডনি বিকল। সপ্তাহে তিনদিন তিনি ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডায়লাসিস নেন। ডায়লাসিস রোগীরা অত্যন্ত নাজুক। যেকোনো সময়ে তাদের যেকোনো কিছু হতে পারে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, তাকে গ্রেপ্তার করা হলে এমন জায়গায় রাখতে হবে যেখানে ডায়লাসিস সহ জটিল রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে। কেন্দ্রীয় কারাগারে এ ব্যবস্থা নেই। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ঢাকা মেডিকেলে ডায়লাসিসের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু এখানে নিয়ে তাঁর কিছু হলে সরকার নতুন বিড়ম্বনায় পড়তে পারে। এই আশঙ্কায় সরকার ডা. জাফরুল্লাহকে গ্রেপ্তারে দ্বিধান্বিত বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কাছ থেকে ডা. জাফরুল্লাহ’র মেডিকেল রিপোর্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। এরপরই তাঁর গ্রেপ্তারের ব্যাপারে সরকার ‘ধীরে চলো নীতি’ গ্রহণ করেছে। তবে জানা গেছে, ডা. জাফরুল্লাহ গোয়েন্দা নজরদারীর মধ্যেই আছেন। নতুন করে রাষ্ট্রের যেন ক্ষতি করতে না পারেন, সেজন্যও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, ‘আমি সেনাপ্রধান সম্পর্কে যা বলেছিলাম তাঁর জন্য আমি প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছি, দু:খ প্রকাশ করেছি। তারপর একের পর এক মামলা দুর্ভাগ্যজনক।’ তিনি বলেন, ‘আমি গ্রেপ্তারের জন্য প্রস্তুত। সব সময় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গেই রাখি।’ তবে, সরকারের একাধিক সূত্রের খবর হলো, ডা. জাফরুল্লাহকে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে সরকার দ্বিধান্বিত।
বাংলা ইনসাইডার
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন