ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে ষড়যন্ত্রের আভাস দেখছেন সংসদ সদস্যরা। ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের আদর্শ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বানও জানান তারা।
মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) রাতে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ বিধির আওতায় আনীত প্রস্তাব সাধারণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা ঐক্যফ্রন্ট প্রসঙ্গেও কথা বলেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, জোটের এক বিজ্ঞ নেতা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রভাশালী উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি সেই সময় দুই নেত্রীকে গ্রেফতার করার পর বলেছিলেন, আমরা চুনোপুটি নয় রাঘব বোয়ালদের কারাগারে দেব। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। দুঃখ লাগে বিএনপি এদের সঙ্গে জোট করেছে। যে ব্যক্তি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছিল সেই ব্যক্তির সঙ্গে জোট করে এটা কোন ধরনের ষড়যন্ত্র।
ড. কামাল হোসেন প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, তিনি বলেছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জোট করেছেন অথচ যাদের সাথে জোট করেছেন সেই দলের শীর্ষ নেতারা দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত। আবার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলেছেন অথচ তাদের জোটের শীর্ষ নেতারা সন্ত্রাসের কারণে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত।
আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, জোটের নেতা আইনবিদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা যিনি স্বৈরাচারের চাইতে বড় স্বৈরাচার। তিনি একজন নারী সাংবাদিককে সম্মান দিতে জানেন না। যিনি শিক্ষা নিয়েছেন কিন্তু মানুষের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়, কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জানেন না।
ডা. দীপু মনি বলেন, যারা এতিমের টাকা আত্মসাৎকারী, গ্রেনেড হামলাকারী, জঙ্গিদের প্রশ্রয়দাতা, কালো টাকা সাদা করার অনৈতিক ব্যক্তি, দেশ নিয়ে, সেনাপ্রধান নিয়ে মিথ্যাচারকারকারী, নারী বিদ্বেষী, পাকিস্তানপ্রেমী, জামায়াত কর্তৃক প্রত্যক্ষ কিছু নীতিহীন আদর্শহীন বাকসর্বস্ব লোক নিয়ে এই ঐক্যফ্রন্ট গঠিত। আর যদি ধরা হয় এটি নির্বাচনী জোট তবে তা আরও শোচনীয় অবস্থা। কারণ এর নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তির ইতিহাসটি বড়ই করুন। এই ঐক্যফ্রন্টের নেতা (ড. কামাল হোসেন) রাজনৈতিক জীবনে একবার মাত্র নির্বাচিত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেওয়া আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। এরপর যতবার নির্বাচন করেছেন হেরেছেন। আওয়ামী লীগকে ছেড়ে যাবার পরে শুধু হারেননি জামানতও হারিয়েছেন। বাকিদের বেশিরভাগ কখনও নির্বাচিত হননি বা নির্বাচন করেননি। তাদের নিয়ে এ কি ধরনের নির্বাচনী জোট? আসলে এই ঐক্যফ্রন্ট না আদর্শিক না নির্বাচনী। এটি একটি ষড়যন্ত্রের ঐক্যফ্রন্ট।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেবার জন্য কিছু মানুষ ষড়যন্ত্র করছে। কতিপয় ষড়যন্ত্রকারী এক হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অগ্রযাত্রায় কিছু মানুষের জ্বালা যন্ত্রণা হয়েছে।
মাহমুদুর রহমান মান্নার প্রতি ধিক্কার জানিয়ে ফজিলাতুনন্নেসা বাপ্পি বলেন, জোটের নেতা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন পাকিস্তানের দালাল। ১/১১ কুশীলব খুনি মোস্তাকের দোসর, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের নিয় দল গঠন করেছিল। সে নিজের ভাইকে ফাঁসানোর জন্য মানুষ খুন করেছিল। এজন নারী সাংবাদিকের প্রতি জঘন্য ভাষায় কটূক্তির করেছেন তাই আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।
আলোচনায় আরো অংশ নেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম মাহমুদ আলী, রেলপথ মন্ত্রী মো. মুজিবুল হক, আ.লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, মো.তাজুল ইসলাম, মীর মোস্তাক আহমেদ রুহি, জাসদ দলীয় সংসদ সদস্য মঈনুদ্দিন খান বাদল, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. ফখরুল ইমাম, পীর ফজলুর রহমান, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আব্দুল মতিন, ড. জয়া সেনগুপ্তা, মো. মনিরুল ইসলাম, উম্মে রাজিয়া কাজল, সাবিনা আক্তার তুহিন প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন