অডিও ক্লিপ ফাঁস সরকারের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের একটি ফসল মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘যারা জাতীয় ঐক্যকে খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব ও তারেক রহমানের নেতৃত্বকে পছন্দ করে না, তাদের ঘর থেকেই এই অডিও ক্লিপ বের হয়েছে। তাদেরই তৈরি করা একটি ফসল ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনের গ্রেফতার, জাফরউল্লাহর নামে প্রতিদিন একটি করে মামলা এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা। এই অডিও ক্লিপ দিয়ে সরকার যদি এ আন্দোলনকে থামাতে চায় তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে।’
মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ এর উদ্যোগে সকল রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মুক্ত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের অডিও ফাঁস প্রসঙ্গে বিএনপি’র এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘গতকাল টিভিতে একটি অডিও ক্লিপ দেখেছি। প্রধানমন্ত্রীকে বলব এই অডিও ক্লিপ এর জন্য আপনার পদত্যাগ করা উচিত। তথ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। টেলিফোনের আড়ালে কান পাতা বেআইনি। এটা সংবিধান বিরোধী, আইন বিরোধী। আপনারা যদি অডিও ক্লিপ টেলিভিশনে প্রচার করেন বা তৈরি করেন তাহলে বলব আপনাদের নির্বুদ্ধিতা আছে। এটার একটি কারণ , এটা যদি সত্য হয় তাহলে বলতে হবে সরকার তার নৈতিক চরিত্র সব হারিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের বিষয় ‘ছাল বাকলামি’ উল্লেখ করে দুদু বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরব থেকে ফিরে এসে যে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার মূল বিষয় হচ্ছে ‘ছাল বাকলামি’। ড. কামাল হোসেন, কর্নেল অলি আহমদ যখন শেখ হাসিনার জনসভায় ছিলেন তখন ছাল বাকলামি ছিল না। যখন গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য ড. কামাল হোসেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরী, রব, মান্না, মইনুল হোসেন সোচ্চার হয়েছেন তখন শেখ হাসিনা সবচেয়ে নিম্ন ভাষায় ন্যাক্কারজনকভাবে সংবাদ সম্মেলনে বিরোধী দলকে আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ পরিবারের সদস্যদের কাছে আমরা মর্যাদাপূর্ণ ভাষা আশা করি। ওই চেয়ারে বসে কিভাবে কথা বলতে হবে তাকে তা জানতে হবে, তা না হলে জাতির কাছে, বিশ্বের কাছে আমাদের মাথা নিচু হয়ে যায়।’’
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এমন দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সমালোচনা করার ৫ ঘণ্টার মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটা মানতেই হবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কারণ যে কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেই কারণ আদালত আমলে নিয়ে তাকে পাঁচ মাসের জামিন দিয়েছিল। শুধুমাত্র জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়ার কারণে, গণতন্ত্র চাওয়ার কারণে শেখ হাসিনার নির্দেশে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দিব হামলা মামলা দিয়ে কখনো ব্রিটিশ আমলে পাকিস্তান আমলে এমনকি বাংলাদেশ আমলে কোন সংগঠন গণতন্ত্রকে থামাতে পারেনি। গণতন্ত্রের আন্দোলন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আগে ছিল এখনও আছে ভবিষ্যতেও থাকবে এবং আমরা বিজয় লাভ করব এটা নিশ্চিত।’
প্রধানমন্ত্রীর যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অস্থিরতা দেখে আমরা বুঝি ক্ষমতা থেকে যাওয়ার তার সময় হয়ে এসেছে। নির্বাচনে তো আমরা যাবো। ডিসেম্বর জানুয়ারিতে নির্বাচন হবে এটাও সত্য, কিন্তু শেখ হাসিনার আন্ডারে নির্বাচন বাংলাদেশ আর হতে দেওয়া হবে না। তার অধীনে কোন নির্বাচনে আমরা যাব না। আমরা যে নির্বাচনে যাব, তা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে।
দুদু আরও বলেন, ‘আগামী দিনটা হচ্ছে যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে তাদের। আগামী দিনটা হচ্ছে যারা ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে শহীদ জিয়ার ঘোষণায় যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তাদের। এই দেশে ফ্যাসিবাদ থাকবে, এটা দেশের জনগণ কখনোই মানবে না।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপি'র সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবু, জিনক্বাপ সভাপতি লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, মর্জিনা আফসারী রোজিনা প্রমুখ।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন