আওয়ামী লীগের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শামছুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘নাসিম সাহেব দু’দিন আগে আপনি বলেছেন, ১ তারিখ থেকে ঢাকাসহ সমগ্র বাংলাদেশ দখল করে নেবেন। আপনাকে প্রশ্ন করতে চাই, আপনার নেতা (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) যখন মৃত্যুবরণ করেছিলেন আপনি কি তাঁর জানাজা পড়েছিলেন? আপনি অনেক বড় বড় কথা বলেন। টুঙ্গিপাড়ায় যখন শেখ মুজিবকে কবরস্থ করা হয়েছিল তখন আপনি তাঁর কবরে কি একমুটো মাটিও দিয়েছিলেন?’
রবিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঐতিহাসিক সোহারাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে দেয়া ভাষণে নাসিমের উদ্দেশ্যে এসব প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন দুদু।
শামছুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আজকে সেপ্টেম্বর মাস শেষ হচ্ছে। আগামীকাল থেকে অক্টোবর শুরু। অক্টোবর মাসের প্রথম দিন থেকে হবে বেগম খালেদা জিয়ার মাস, তারেক রহমানের মাস।’
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ইস্যুতে তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনে যাবো। বিএনপি তৈরি আছে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তার আগে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তারেক রহমানকে সসম্মানে দেশে ফেরত নিয়ে আসতে হবে। আর শেখ হাসিনা আপনাকে পদত্যাগ করতে হবে। আপনি (শেখ হাসিনা) থাকবেন সিংহাসনে বসে আর আমরা চোরের মতো, প্রজার মতো নির্বাচন করতে যাবো? হাসিনা তুমি এটা মনে করো না।’
সমাবেশে যোগ দিতে আসা দলের নেতাকর্মীদের ওপর সরকারের পেটোয়া বাহিনী ও ক্ষমতাসীনদের ক্যাডার বাহিনী পথে বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করে সাবেক এই ছাত্রদল নেতা বলেন, ‘আজকের সমাবেশে আসার পথে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাধা দেয়া হয়েছে, আক্রমণ করা হয়েছে, কাউকে কাউকে আহতও করা হয়েছে এবং গ্রেফতারের কথা এখন পর্যন্ত শুনি নাই। তবে পরে হয়তো শুনবো।’
সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দুদু বলেন, ‘কথা পরিষ্কার। অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বরের বাংলাদেশ হলো- বিএনপি, খালেদা জিয়ার ও তারেক রহমানের বাংলাদেশ। আপনারা তৈরি আছেন তো?’
এসময় সমাবেশে উপস্থিত হাজার হাজার জনতা হাত নেড়ে সমস্বরে সাড়া দেন ও শ্লোগান দিতে থাকেন।
বিকেল ৩টায় কোরআন তিলয়াওয়াতের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় জনসভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, জমির উদ্দীন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড.আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, মো:শাজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, ডা:এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জয়নুল আবদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভূইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, ডা:ফরহাদ হালিম ডোনার, ফজলুর রহমান, আতাউর রহমান ঢালী, মাহবুব উদ্দীন খোকন, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মজিবুর রহমান সরোয়ার, খায়রুল কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বক্তব্য রাখেন।
এছাড়াও সমাবেশে বিলকিস জাহান শিরীন, শ্যামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি কৃষিবিদ শামসুল আলম তোফা, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দু কাদির ভূইয়া জুয়েল ও ছাত্রদল সভাপতি রাজিব আহসান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এর আগে জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে রবিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্ট হয়ে সোহরাওয়ার্দী অভিমুখে দলের নেতাকর্মীদের ঢল নামে। সোহরাওয়ার্দীকে কেন্দ্র করে শাহবাগ, মৎসভব্ন, হাইকোর্ট, দোয়েল চত্বর ও টিএসসি এলাকাগুলোতে জনজোয়ার দেখা যায়।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন