টাকার বিনিময়ে পদ দেয়ার অভিযোগে বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং নাটোরি বিএনপির সভাপতি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুকে নাটোরের সিংড়ায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
বেলা ১২টার দিকে সিংড়া শহরের গোডাউনপাড়া এলাকায় পৌর বিএনপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন সিংড়া উপজেলা, পৌর বিএনপি ও এর সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ এবং সিংড়া পৌর বিএনপির সভাপতি দাউদার মাহমুদকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দাউদার মাহমুদকে সিংড়া পৌর বিএনপির সভাপতি করার পর থেকে আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করে চলছের। তিনি দলে বিভক্তি সৃষ্টি করছেন। এই অবস্থায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশের অযুহাত দেখিয়ে দাউদার মাহমুদকে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক করা হয়। দুলু বিপুল অংকের টাকার বিনিময়ে দাউদার মাহমুদ এর কাছে পদ বিক্রি করেন।
এরপর থেকেই সিংড়া বিএনপির মূল ধারার নেতা-কর্মীরা দাউদার মাহমুদকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন। এর মধ্যে বিক্ষোভ মিছিল, সংবাদ সম্মেলনে করেছে মূল ধারার বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
নেতা কর্মীদের অভিযোগ, দুলু অগতান্ত্রিক ও স্বৈরতান্ত্রিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে তৃণমূলের মতামতকে উপেক্ষা করছেন।
এরপরও গত ১৬ অক্টোবর দাউদার মাহমুদকে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক করে চিঠি দেন দুলু। এতে আরও ক্ষুব্ধ হয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল ফটিক বলেন, ‘সিংড়া বিএনপির সার্বিক হালচাল তুলে ধরে গত ৫ অক্টোবর ঢাকায় দুলুর সাথে সকল নেতা-কর্মী নিয়ে আমরা মিটিং করি। সেখানে দুলু সিংড়া বিএনপিকে রক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু দুলু মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দাউদার মাহমুদ এর কাছে উপজেলা বিএনপির পদ বিক্রি করে দেন। তিনি বিএনপিকে রক্ষা করার বদলে নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছেন।
দাউদার মাহমুদকে আর্র্ন্তজাতিক গাড়ি চোর চক্রের সদস্য আখ্যা দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তার নামে একাধিক গাড়ি চুরির মামলা রয়েছে। আগামী জানুয়ারিতে একটি মামলার রায় হবে।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমান মন্টু বলেন, ‘বিগত নির্বাচনে দুলু মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন এবং দলীয় পদ বিক্রি করেছেন। তাতেও তিনি ক্ষান্ত হয়নি। বিগত দিনে, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মরহুম আবুল কালাম আজাদ এবং পৌর বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র শামীম আল রাজির সাথে, লালপুরে ফজলুর রহমান পটলের সাথে সাবেক মেয়র মঞ্জুরুল আলম বিমলের, গুরুদাসপুরে সাবেক এমপি মোজাম্মেল হকের সাথে সাবেক মেয়র বাবলুর দ্বন্দ্ব করে রেখেছিলেন।’
দুলুকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক বলেন, ‘এ কথা শুনেছি। তবে কেন তারা অবাঞ্ছিত করল, সে বিষয়ে বোধগম্য নয়। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সাথে কথা বলে পরে জানাতে পারব।’
টাকার বিনিময়ে দলীয় পদ বিক্রির বিষয়ে আমিনুল হক বলেন, ‘এটা আমার জানা নেই, তবে উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের কারণে দাউদারকে দুলু সাধারণ সম্পাদক করেছে।’
দুলু ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘শামিম আল রাজির মৃত্যুর কারণে শূন্য পদে পার্টির হাই কমান্ডের নির্দেশে দাউদার মাহমুদকে সিংড়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। এখানে অন্য কিছু নেই।’
ঢাকাটাইমস/
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন