২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা ও মামলার কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে পর্যদুস্ত করার জন্য সরকার এহেন অমানবিক পদ্ধতি নেই, যা তারা ব্যবহার করে না। আমরা এরই চরম প্রকাশ দেখতে পায়-২১শে আগস্ট বোমা হামলা মামলায় দীর্ঘদিন পর অধিকতর তদন্তের নামে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ার্যান তারেক রহমানকে জড়ানোর ঘটনায়। এর পূর্বে দুইবার চার্জশিটে তারেক রহমানের নাম ছিল না। শুধু প্রতিহিংসা পূরণের জন্য টার্গেট করেই সম্পূরক চার্জশিটে তারেক রহমানের নাম উক্ত মামলায় জড়ানো হয়েছে।’
রববার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘এক্ষেত্রে বেপরোয়া ক্ষমতার আস্ফালনে আইন আদালতকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। চুক্তিভিত্তিক তদন্তকারী কর্মকর্তা কাহার আকন্দ কর্তৃক তথাকথিত নিখুঁত ও গভীর তদন্ত কার্যক্রম চালাতে গিয়ে সরকারি অনেক দলিল দস্তাবেজ হয় গায়েব অথবা সৃজন পরিবর্তন করা হয়েছে। যেমন- বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়ার পরেও তদন্তের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ অনুষঙ্গ ‘কেনো পুলিশকে ভ্রান্ত তথ্য দিয়ে সভাস্থল পরিবর্তন করা হলো, সে বিষয়ে কে বা কারা সম্পৃক্ত’ (অর্থাৎ মুক্তাঙ্গন থেকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ)-এই মূল্যবান তথ্যটি উদঘাটনের ক্ষেত্রে তিনি বিন্দুমাত্র মনোযোগ দেননি। বরং এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেই তিনি ক্ষেপে যেতেন বলে শোনা যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার দেহরক্ষী, প্রাক্তণ সেনা হাবিলদার মাহবুব কার গুলিতে মারা গেলেন তা নিরুপণে এসপি কাহারের কোনো আগ্রহ-তৎপরতা যেমন পরিলক্ষিত হয়নি, তেমনি বুলেটপ্রুপ গাড়ির গ্লাস কিসের আঘাতে ভেঙে গেল বা এমন ওজনবিশিষ্ট কোন গাড়ি পাংচার টায়ার নিয়ে কংক্রিটের রাস্তার ওপর দিয়ে ৫ কিলোমিটার চালিয়ে ধানমন্ডির সুধাসদনে পৌঁছলো তাও পর্যালোচনা করা হয়নি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনারই দাবি করা আন্তর্জাতিক তদন্ত অনুষ্ঠানকল্পে যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই দল ঘটনাস্থল সরেজমিনে তদন্তের পর যখন সেই গাড়িটি পরিদর্শন করতে চেয়েছিলো, তা পরিদর্শন করতে দিতে শেখ হাসিনা অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। কিন্তু কেনো এই অস্বীকৃতি? তারও কোনো সুরাহা কাহার আকন্দের তদন্তে হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে এফবিআই দলকে তদন্ত সহায়তা না করায় অবশেষে তারা তাদের তদন্তকার্য অসমাপ্ত রেখেই ফিরে চলে যায়।’
‘২১শে আগস্ট বোমা হামলার পুরো বিষয়টাই একটি প্রহেলিকা। আওয়ামী রাজনীতির কুটিল পাটিগণিত। জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করার দেশীয় ও বৈদেশিক চক্রান্তের বিপজ্জনক ব্লুপ্রিন্ট। বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার নানাবিধ ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় ২১ আগস্ট বোমা হামলা মামলায় সরকার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে আইন আদালতকে। কারণ আইন আদালত এখন সম্পূর্ণভাবে সরকারের হাতের মুঠোয়।’
গায়েবি মামলার ছড়াছড়িতে সারাদেশে বিরাজ করছে এক আতঙ্কের পরিবেশ দাবি করে রিজভী বলেন, ‘গত ৩-৪ দিনে রাজধানীর দুটি থানায় ৭টি মামলা করা হয়েছে, এসব মামলায় ১৫ শতাধিক নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে। এছাড়া সারা দেশব্যাপী প্রায় ১৬ শতাধিক নেতাকর্মীর নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, আবুল খায়ের ভূইয়া, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবি এম মোশাররফ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন