প্রধানমন্ত্রীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করার প্রস্তাব
সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের নতুন একটি প্রস্তাবনা এসেছে আলোচনার টেবিলে। এই প্রস্তাবনা তৈরি করেছে ভারত। যুক্তরাজ্য এবং কানাডা এই প্রস্তাবনা সমর্থন করেছে। ভারতের পক্ষ থেকে প্রস্তাবনা নিয়ে বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা হয়েছে। বিএনপির নেতারা এই প্রস্তাবনা একেবারে নাকচ করে দেয়নি। এই প্রস্তাবনার মূলকথা হলো, শেখ হাসিনার অধীনের নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে। তবে নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান হিসেবে তিনি যেন নিরপেক্ষ ভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন সেজন্য একটি আসনে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো দল প্রার্থী দেবে না। ফলে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সর্বসম্মত ভাবে নির্বাচিত হবেন। তিনি সকল নির্বাচনী প্রচারণা থেকে দূরে থাকবেন। কূটনীতিক সূত্রে জানা গেছে, ভারত কয়েকবারই স্পিকার নির্বাচনে নিরপেক্ষতার স্বার্থে এরকম পদ্ধতি অনুসরণ করেছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, বিদ্যমান প্রধানমন্ত্রীকে সব বিতর্কের উর্ধ্বে রাখলেই আর নির্দলীয় সরকারের প্রয়োজন হয় না। একাধিক সূত্র বলছে, ভারতের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাবনা নিয়ে কানাডা এবং যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে। তাঁরাও প্রস্তাবনাকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। কানাডা অবশ্য নির্বাচনে সাম্যতা রাখার জন্য প্রধান তিন দলের শীর্ষ তিন নেতা, যারা নির্বাচনের যোগ্য তাদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করার প্রস্তাব দিয়েছে। এতে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিতর্ক বন্ধ হবে এবং রাজনৈতিক বিতর্কও কমবে বলে তাঁরা মনে করছেন। যুক্তরাজ্যও এটিকে নির্বাচনী অসহিষ্ণুতা বন্ধে একটি ভালো মডেল বলে মনে করেন।
একাধিক কূটনৈতিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, ভারত দুই প্রস্তাব নিয়ে বিএনপির নেতা ড. আব্দুল মঈন খান এবং আবদুল আউয়াল মিন্টুর সঙ্গে কথা বলেছেন, বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের বদলে তিনি নির্বাচনে না দাঁড়ানো যৌক্তিক। তবে ভারতীয় কূটনীতিকরা নির্বাচনে না দাঁড়ানোর শর্তকে অগণতান্ত্রিক এবং মৌলিক অধিকার পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছেন। বরং সকল পক্ষকে সম্মানিত করার মাধ্যমেই গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ খোঁজা উচিত বলে মত দিয়েছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে, বেগম জিয়ার নির্বাচন করার গ্যারান্টি চাওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে তাঁকেরও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করার প্রস্তাব দিয়েছে। বিএনপি অবশ্য বলেছে, এনিয়ে তারা দলীয় ফোরামে কথা বলবে।
ভারতের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব নিয়ে সুশীল সমাজের একাধিক প্রতিনিধির সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে। তাঁরা প্রস্তাবকে ইতিবাচকভাবে দেখেছেন। তবে প্রস্তাবটিকে ব্যক্তিকেন্দ্রিক না করে নীতিগত করার প্রস্তাব করেছেন। সুশীল সমাজের একাধিক প্রতিনিধি বলেছেন, এরকম একটা নীতিগত ঐক্যমত হতে পারে যে, বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান থাকবেন এবং তিনি সর্ব সম্মতিক্রমে পরবর্তী সংসদে সদস্য নির্বাচিত হবেন। ওই রীতি চালু হলে, নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান নির্বাচনের প্রত্যক্ষ প্রচারণা থেকে দূরে থাকবেন। কয়েকজন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি মনে করেন, রাষ্ট্রপতি যেমন দলীয় বিবেচনায় নির্বাচিত হন, কিন্তু নির্বাচিত হবার পর তিনি দল থেকে পদত্যাগ করেন। নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রীকেও এরকম একটি অবস্থায় নিয়ে আশা যায়। আওয়ামী লীগ অবশ্য প্রস্তাব সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি।
বাংলা ইনসাইডার
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন