হঠাৎ করে বিএনপি নেতা আমীর খসরুকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না! কোথায় আছেন তিনি? এমন প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে। জানা গেছে, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট তার ষড়যন্ত্রমূলক একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। এরপর থেকেই তার দেখা নেই।
ভোরের কাগজের তথ্য মতে, বিএনপির এই নেতা বাড়িতে নেই। তার মোবাইল ফোন বন্ধ। যোগাযোগ নেই দলের অন্য নেতাদের সঙ্গেও। পার্টি অফিসেও যান না। দলের গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিতেও তিনি অনুপস্থিত। এমনকি পরিবারের লোকজনও জানেন না তার খবর। বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মীই তার অবস্থানের বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন। আবার কেউ বলছেন, গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। আসলে কোথায় রয়েছেন আমীর খসরু মাহমুদ? এ নিয়ে দিন দিন কৌত‚হল বাড়ছে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে দলবল নিয়ে যোগ দেয়ার জন্য কুমিল্লার নওমী নামের এক কর্মীর সঙ্গে দিকনির্দেশনামূলক মোবাইল ফোনালাপ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ১ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের ওই ফোনালাপের জের ধরে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ওই দিনই রাত ১১টায় চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর নগরীর কোতোয়ালি থানায় তার বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা দায়ের করেন। ওই দিন রাতেই আমীর খসরুর ঢাকার বাসায় প্রায় ৩ ঘণ্টা তল্লাশি চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এদিকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনাটি নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো কথা না বললেও ভেতরে ভেতরে ফুঁসছেন বিএনপির অন্য নেতারা। বিষয়টিতে লাভের চেয়ে দলের ক্ষতিই বেশি হয়েছে। এমনকি দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও এ বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে নেতাদের মধ্যে। নেতারা বলছেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে সরকার ছাত্র আন্দোলন থেকে পার পেয়ে গেল।
সূত্র জানায়, আমীর খসরুর ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় কূটনৈতিক মহলের পক্ষ থেকেও চাপে আছে বিএনপি। গত ৭ আগস্ট গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিদেশি কূটনীতিকরাও খসরুর ফোনালাপের বিষয়টি জানতে চেয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘটনার দিন থেকেই আত্মগোপনে চলে যান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তার মুঠোফোনের দুটো নম্বরই বন্ধ। গত তিন ধরে চলতে থাকা দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না। বৈঠক শুরু আগেও দলের মহাসচিব একাধিকবার তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। আমীর খসরুর পরিবারও তার কোনো খোঁজ দিতে পারেনি। তবে একটি সূত্র বলছে, রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে স্বেচ্ছায় গা-ঢাকা দিয়ে আছেন তিনি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী কোথায় আছেন জানতে চাইলে বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, তার নামে মামলা হয়েছে শুনেছি। দলীয় প্রোগ্রামেও তিনি আসছেন না। আমার সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়নি। চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, আমীর খসরুর বিরুদ্ধে মামলাটির তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন