অতিদ্রুত বাংলাদেশের রাজনীতির পরিবর্তন ঘটবে এমন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, ‘কখন কোথায় কি ঘটনা ঘটবে আমরা কেউ জানি না। শুধু এটুকু জানি দেশে কোন সরকার নেই, যেটুকু আছে সে টুকুরও পরিবর্তনের সময় চলে এসেছে। কারণ এই সরকারের শেষ সময় এসে গেছে।’
শুক্রবার (১০ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম নামের একটি সংগঠন আয়োজিত ‘শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক নির্যাতন এবং বিএনপি নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলা কেন?’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মওদুদ বলেন, ‘সময় আসছে একটা সক্রিয় ঈমানি ভূমিকা পালন করার জন্য। সব কিছু দেখে মনে হয় দেশে কোনো সরকার নেই। র্যাব আছে পুলিশ আছে, কিন্তু কোনো সরকার আছে বলে মনে হয় না। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ওপর হামলা করা হলো, কারা হামলা করেছে আমরা সবাই জানি। কিন্তু অপরাধী কি গ্রেফতার হয়েছে? বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮শ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেলো, সোনা থেকে শুরু করে কয়লা পর্যন্ত চুরি করা হলো কিন্তু গ্রেফতার করা হয়নি কাউকে। সরকার থাকলে এগুলো হওয়ার কথা নয়।’
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘আমাদের নেত্রী কারাগারে, আমরা সবাই মামলায় জর্জরিত, আমাদের এমন কোনো নেতাকর্মী নেই। যারা কোনো মামলার আসামি নয়। কিন্তু তাতে কি হয়েছে? প্রকৃতির যে আইন, নিয়ম এগুলো নিজস্ব গতিতে চলে। এসময় তিনি কোটা এবং শিক্ষার্থীর আন্দোলনের কথা বলেন।’
তিনি বলেন, ‘ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর সরকার যে নির্যাতন করেছে এটা তাদেরকে (সরকারকে) ভূমেরাং করবে। সরকারকে চরম মূল্য দিতে হবে। যতই নির্যাতন করুন শিক্ষার্থীদের মূল্য আপনাদেরকে দিতেই হবে।’
‘নির্বাচনে অনিয়ম হতেই পারে’- প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এমন বক্তব্যের কড়া সমলোচনা করে মওদুদ বলেন, ‘এই কথা বলার পর তার (নির্বাচন কমিশনার) পদে থাকার কোনো যৌক্তিকতা নেই। অবিলম্বে আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি।’
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, ‘আগামী দিনে বিএনপির আন্দোলন সফল হবে। কারণ বেগম জিয়াকে ছাড়া বাংলাদেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না।’
সড়ক পরিবহন আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীর সঙ্গে রাজনৈতিক ব্লাফ দিয়েছে, রাজনৈতিক প্রতারণা করেছে সরকার। শিক্ষার্থীদের রক্ত বৃথা যাবে? কি চেয়েছিলো তারা অন্যায় কোন দাবি তো ছিল না, তাদের কিন্তু এখানেও একটা ফাঁকিবাজি ব্লাফ, যে প্রতারণা তারা (সরকার) করেছিলো কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে।’
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী ও দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলমকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শহীদুল আলমের ওপর যে অত্যাচার অকল্পনীয়। সরকার একেবারে বেপরোয়া হয়ে গেছে। জনগণের সাথে কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই। সেজন্য সব শ্রেণির মানুষের ওপর এতো নির্যাতন।’
আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ আসলামের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম. জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ, জিনাফের সভাপতি লায়ন মিয়া মোহাম্মাদ আনোয়ার, ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আরিফা সুলতানা রুমা, যুবদল নেতা কাদের সিদ্দীকি প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন