প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইনের ত্রুটি তুলে ধরে তা সংশোধনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। শুক্রবার সকালে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনে দুর্ঘটনায় মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলা হবে কিনা, তা নির্ধারণের দায়িত্বে নিরপেক্ষ, যোগ্য কিংবা সংশ্লিষ্ট কাউকে রাখা হয়নি। হাইকোর্টের মতামতও উপেক্ষা করা হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এজন্য আমরা এই আন্দোলন এবং দীর্ঘদিন ধরে যারা নিরাপদ সড়কের জন্য কাজ করছেন, তাদের সঙ্গে অর্থবহ আলোচনা করে প্রস্তাবিত আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনীর দাবি জানাচ্ছি।’
এক প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছি। এটা অপরাধ হলে দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে অনেক বড় বড় ব্যক্তিরাও সমান অপরাধী। কিন্তু, ভোটারবিহীন সরকার এ নিয়ে পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে।’
তিনি বলেন, ‘নানা বাধা-বিপত্তির মধ্যেও সংবাদমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে ছাত্র আন্দোলন নিয়ে প্রকৃত তথ্য পৌঁছে গেছে। ফলে তারা ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ক্রমাগত মিথ্যাচারে কখনোই বিভ্রান্ত হবেন না।’
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ছাত্রদের অন্দোলন থেকে আমাদের কিছু অর্জনের লক্ষ্য ছিল না। একটি যৌক্তিক আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছি। সারাদেশের মানুষ যেমন সমর্থন দিয়েছে। তবে যে পদ্ধতিতে সরকার এই আন্দোলন দমন করছে, তা সার্বজনীনভাবে ধিকৃত হয়েছে। নিরীহ ছাত্রদের ওপর এভাবে নির্যাতন চালিয়ে আওয়ামী লীগ আরো গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ নাকি বিএনপি-জামায়াত কর্মীরা করেছে। একথা এদেশের কোনো পাগলও বিশ্বাস করবে না। পুলিশের সামনে বিএনপি-জামায়াত কর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি-সোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মারবে, সাংবাদিকদের কোপাবে, ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা করবে, আর তাদের গ্রেফতার করা হবে না, এটা কে বিশ্বাস করবে?’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সহিংস কোনো কর্মকাণ্ডে বিএনপি কখনো জড়িত ছিল না। যারা পুলিশের সামনে হেলমেট ও মুখোশ পরে সহিংসতা করেছে, সাংবাদিকসহ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তারা ক্ষমতাসীন দলের। আমরা অবিলম্বে তাদের চিহ্নিত ও গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রেখেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রীর চিকিৎসা পর্যন্ত করা হচ্ছে না। নানা বাহানায় তার মুক্তি বিলম্বিত করা হচ্ছে। আমরা তার সুচিকিৎসা ও মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন