৩০ জুলাই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রচারে আওয়ামী লীগের প্রয়াত মেয়র শওকত হোসেন হিরন আর প্রার্থী না হয়েও বিএনপির বর্তমান মেয়র আহসান হাবিব কামালের নাম উঠছে নানাভাবে। মেয়র থাকাকালে হিরন সফল ছিলেন, সেটি বরিশালবাসী এখন আরও বেশি মানছেন। বিশেষ করে বর্তমান মেয়র কামালের নিস্প্রভ পাঁচ বছরের পর হিরনের শূন্যতার বিষয়টি আরও বেশি আলোচনায় এসেছে।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ আওয়ামী লীগের প্রয়াত মেয়র হিরনের আমলে নগরীতে হওয়া উন্নয়নের কথা উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরছেন। বলছেন, আওয়ামী লীগ দায়িত্বে থাকলেই এমনটা হয়।
বলা যায় সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণকে পুঁজি করেই নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। নগরবাসীকে হিরণের কাজগুলো স্মরণ করিয়ে দিয়ে সাদিক নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছেন তিনি।
সাদিক বলেন, ‘আওয়ামী লীগের শওকত হোসেন হিরণ বরিশাল সিটির যে উন্নয়ন করেছে সেটা বরিশালবাসী সাক্ষী। তবে বিএনপির মেয়র ক্ষমতায় আসার পর কী হয়েছে বরিশালের অবস্থা সেটা সবারই জানা। ভাঙা রাস্তা আর জলাবদ্ধতায় নাকাল নগরবাসী। শওকত হোসেন হিরণ এই নগরী উন্নয়নে যা করেছেন তা বিগত দিনের কোনো মেয়রই করতে পারেননি। তাই বিএনপিকে আর ভোট দেবে না সাধারণ মানুষ। শওকত হোসেন হিরণের কাজ স্মরণ করে মানুষ এবার আবার আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে।’
অপরদিকে বর্তমান মেয়র বিএনপি নেতা আহসান হাবিব কামালের কারণে বেশ চাপে রয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার। কেননা এর আগে তিনি মেয়র থাকা অবস্থায় উন্নয়নের কথা বলতে পারলেও বিএনপি নেতা কামাল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় কোনো উন্নয়নের কথা বলতে পারেননি।
২০১৩ সালের নির্বাচনের আগে কামাল যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার মধ্যে বলতে গেলে কিছুই পূরণ হয়নি তার। তার সাফল্য বলার মতো কিছুই নেই। আর বিএনপি এ কারণে তাকে এবার প্রার্থীও করেনি।
মেয়র হিসেবে কামালের ভূমিকায় বরিশালে অসন্তোষ স্পষ্ট। বিরোধীপক্ষ তো বটেই, বিএনপির নেতা-কর্মীরাই নানা সময় প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন কামালের। আর এ কারণেই প্রার্থী পাল্টে এই সমালোচনা থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে বিএনপি।
বিএনপির অভ্যন্তরীণ তথ্য অনুযায়ী কামাল ২০১৩ সালে ভোটে জেতর ছয় মাসের মধ্যেই বিভেদ সৃষ্টি হয় বিএনপির মধ্যে। ধারণা করা হয়, কামালের ভোটে জয়ের পেছনে বিএনপিতে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেন সরোয়ার। কিন্তু পরে তার সঙ্গেই বিরোধে জড়ান মেয়র। আর সরোয়ারপন্থীরা নানাভাবে কামালকে লাঞ্ছিত করারও চেষ্টা করে।
বিভিন্ন জায়গায় গণসংযোগে গিয়ে দেখা গেছে, সরোয়ার নিজে মেয়র থাকাকালে নগরীতে যেসব কাজ হয়েছে সেগুলোর কথা বলে ভোট চান। তবে মেয়র কামালের পাঁচ বছরের বিষয়টি তিনি উল্লেখই করেন না।
পাঁচ বছর আগে পরিচ্ছন্ন ছিমছাম নগরী হিসেবে বরিশালের পরিচয় এখন কেবলই স্মৃতি। বেহাল রাস্তাঘাট, জলাবদ্ধতা, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং দুর্গন্ধময় নগরী নিয়ে বেশ বেকায়দায় নগরবাসী। বরিশালবাসীর মধ্যে প্রচার আছে, হিরনের গড়ে দেয়া কাজ নষ্ট করেছেন কামাল।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ার বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে অবশ্য মেয়র কামাল বলেন, তিনি পুরোপুরি সফল। তিনি বলেন, ‘বরিশালের যা উন্নয়ন হয়েছে তা আমার আমলেই বেশি হয়েছে। এই নগরী উন্নয়নের জন্য নানা কাজ করা হয়েছে। যেটা দৃশ্যমান।’
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন