রংপুর নগরীসহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। স্বাস্থ্য বিভাগের টোকেন আর ট্রেড লাইসেন্সের বলেই অবৈধভাবে চলছেই তাদের জমজমাট ব্যবসা। তবে এনিয়ে বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগ ও সিভিল সার্জনের নেই কোন মাথা ব্যাথা। ফলে এই সব হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রতিনিয়তই মানুষজন হয়রানি-প্রতারিত হচ্ছে। অপচিকিৎসার শিকারও হয়েছেন অনেকই। আবার অনেক রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
এদিকে রংপুর বিভাগের নগরীসহ জেলা-উপজেলাগুলোতে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সংখ্যা কত- তার কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিসে। গত ৩ বছর থেকে কোনো বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের নতুন করে লাইসেন্স নেয়নি। বিদ্যমানগুলোর লাইসেন্স নবায়ন না হওয়ায় অবৈধের খড়গ মাথায় নিয়ে কাজ করছে কয়েকশ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অন্যদিকে রংপুরের সরকারি হাসপাতালগুলোতেও জনবল সংকটসহ নানা কারণে সেবাগ্রহীয়তারা প্রয়োজনীয় কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না।
রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুর বিভাগে দুটি সরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এর একটি রংপুরে অপরটি দিনাজপুরে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে ৫০টি। জেলা শহরগুলেতে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল রয়েছে ৭টি। তবে প্রত্যেক হাসপাতালেই রয়েছে জনবল সংকট। ১০ শয্যার হাসপাতাল রয়েছে দুটি। এছাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে প্রায় ১ হাজার ৮০০।
তবে রংপুর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরীসহ বিভাগে আট জেলার বিভিন্ন স্থানে সাড়ে ৫ শতাধিক বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর অর্ধেকই হচ্ছে রংপুর নগরীতে। এরপরের অবস্থানে রয়েছে দিনাজপুর। এছাড়া লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামরী, গাইবান্ধা, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ে গড়ে ২৫ থেকে ৩০টি ক্লিনিক রয়েছে।
তবে সমিতিভুক্ত রয়েছে মাত্র ৫৮টি। অনলাইনে আবেদনের পর স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টোকেন, ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করছে ক্লিনিক মালিকরা।
তারা জানান, ২০১৮ সাল থেকে রংপুর স্বাস্থ্য বিভাগ বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের কোনো লাইসেন্স দেয়নি। এমনকি নবায়নও করেনি। ফলে ৩ বছর থেকে শুধু একটি টোকেনের মাধ্যমে তারা ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
রংপুর ক্লিনিক ও ডায়াগনেস্টিক মালিক সমিতির সভাপতি শামছুর রহমান কোয়েল বলেন, ৩ বছর থেকে রংপুরের কোনো নতুন লাইসেন্স দেওয়া হয়নি কিংবা পুরনো লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি। স্বাস্থ্য বিভাগের শুধু একটি টোকেনের মাধ্যমে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।
রংপুর সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় বলেন, নগরীতে মাত্র ২২৯ টি বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়গোনেস্টিক সেন্টারের অনুমোদন থাকলেও নগরীতেই আছে সাড়ে তিনশোর বেশি ক্লিনিক ডায়গোনেস্টিক সেন্টার।
এ সব বিষয়ে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. আমিন আহমেদ খান বলেন, বিভাগে কত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে সে বিষয়ে তার পিএসএস বলতে পারবে। পরে পিএস রুহুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার কাছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের পরিসংখ্যান নেই।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন