প্রাণঘাতী করোনাভাইসের সংক্রমণ ঠেকাতে সব সময়ের ব্যস্ত থাকা রাজধানী ১০ দিনের ছুটিতে খাঁখাঁ করছে। সারাদেশে বাস, রেল, লঞ্চ ও বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে সব ধরনের গণপরিবহন। সব অঞ্চলে রাস্তায় লোক চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। লোকসমাগম ঠেকাতে মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী। ফলে রাজপথ যেন পরিণত হয়েছে মানবশূন্য।
বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। ঈদের ছুটিতে যতোটা ফাঁকা হয়, এখন রাজধানী তার চেয়েও জনশূন্য, নিস্তব্ধ। খুব প্রয়োজনীয় জিনিপত্র ছাড়া বন্ধ সবকিছুর দোকান। নেই কোনও যানবাহনও।
মানবশূন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: পূর্বপশ্চিম
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২৪ মার্চ সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক ভিডিও বার্তায় আজ (বৃহস্পতিবার) ২৬ মার্চ থেকে সবধরণের গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা দেন। সরকারের এমন ঘোষণার পর আজ সকাল থেকে কোনও ধরণের পরিবহন চালাচল করছে না। নগরীর সড়কগুলোও জনমানবশূণ্য অবস্থায় রয়েছে।
সব মিলিয়ে এ যেন এক যুদ্ধাবস্থা। থমথমে চারপাশ। এ যুদ্ধ প্রাণঘাতী করোনার বিরুদ্ধে। এতে জয়ী হতে হলে বাইরে নয়, ঘরে অবস্থান করাই অতি জরুরি। যারা আজ ঘরে, তারাই এ যুদ্ধের বীর। যে যার যার ঘরে অবস্থান নিয়েই নিশ্চিত করতে হবে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা। আর তাতেই পরাজিত হবে কোভিড-১৯ ভাইরাস।
স্বাধীনতা দিবস হলেও, দুপুরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কোথাও তেমন জনসমাগম চোখে পড়েনি। কেউ বেরোচ্ছে না ঘর থেকে। খুব জরুরি দরকারে বের হলেও পুলিশকে যথাযথ কার্যকারণ দেখাতে হবে। তবে এই কড়াকড়ির আওতামুক্ত আছে কেবলমাত্র জরুরি সেবাগুলো। আর বিশেষ কাজে বের হওয়া গুটিকয় গাড়িগুলোর চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ।
জানতে চাইলে সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস-মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম বলেন, রাস্তাঘাতে কোনও লোকজন নেই। এমন পরিবেশ আর কখনও হয়নি। সকাল থেকে একটি বাসও ছাড়া হচ্ছে না। আমাদের টার্মিনালের শ্রমিকরা অলস সময় কাটাচ্ছে।
মানবশূন্য ঢাকা। ছবি: পূর্বপশ্চিম
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সবধরণের যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধ রয়েছে। ২৪ মার্চ থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত দেশের সব রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য যাত্রীবাহী রেল চলাচল বন্ধ থাকবে।
এদিকে করোনা প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করেও মানুষজনকে ঘরে অবস্থানের কথা প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে বিমান যোগাযোগও প্রায় বন্ধ রয়েছে। তবে চীন ও লন্ডনের সঙ্গে যোগাযোগ স্বাভাবিক আছে।
জনশূন্য শাহজালাল বিমানবন্দর। ছবি: পূর্বপশ্চিম
ডিএমপি থেকে জানানো হয়, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া এই সময় সবাইকেই ঘরে অবস্থান করতে হবে। কঠোরভাবে তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পূর্বপশ্চিমবিডি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন