রাজধানীর মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোড পার্কে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে সিটি করপোরেশনের অভিযানে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) দু'জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি দল রোববার দুপুরে তাজমহল রোডের সি-ব্লকের খেলার মাঠ ও পার্কের দক্ষিণ পশ্চিম কোণায় থাকা একটি টিনশেড উচ্ছেদ করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
তাজমহল রোড মাঠের একাংশে গড়ে তোলা ওই ঘরটি জামি'আ বাইতুল আমান মিনার মসজিদ ও ইসলামী কেন্দ্রের রান্না ঘর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল।
ঘরটি ভাঙতে গেলে প্রথমে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সিটি করপোরেশনের কর্মী এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গরম পানি, মরিচের গুঁড়া এবং ইটপাটকেল ছুড়ে মারে।
এর পাল্টায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও লাঠিসোঁটা নিয়ে মাদ্রাসাছাত্রদের ধাওয়া দিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় ইটের আঘাতে এক মাদ্রাসা ছাত্র আহত হন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
নাজমুল ইসলাম নামে এক মাদ্রাসা ছাত্র বলেন, ওই ঘরটি প্রায় ৬০০ ছাত্রের রান্নার কাজে ব্যবহৃত হতো।
তার অভিযোগ, কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না রেখে ঘরটি ভেঙে দেওয়া হলো। দুপুরে আমাদের রান্না হবে না। আমরা কি খাব জানি না।
প্রায় আধা ঘণ্টা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর ডিএনসিসির কর্মকর্তা, পুলিশ ও স্থানীয়রা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আধাপাকা ওই ঘরটি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাজিদ আনোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ছয় মাস আগে থেকেই মাদ্রাসা কমিটির লোকজনকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আলাদা জায়গায় রান্নাঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছ। কিন্তু তারা মানেননি।
এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপস্থিতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ডিএনসিসির সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর আলেয়া সারোয়ার ডেইজি সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগের কেউ লাঠি হাত ছিল না। অতি উৎসাহী হয়ে কেউ লাঠি নিয়ে থাকলে আমি তাদের বলেছি- তোমরা আওয়ামী লীগের লোক হলে এ ধরনের কাজ করবে না।
সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা কর্মচারীরা চলে যাওয়ার পর বিক্ষুদ্ধ মাদ্রাসা ছাত্ররা আবারও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেয়।
এ সময় মাঠে থাকা নির্মাণসামগ্রী ভাঙচুর করে তারা। উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারের অস্থায়ী কার্যালয়ও ভেঙে ফেলা হয়।
জামি'আ বাইতুল আমান মিনার মসজিদ ও ইসলামী কেন্দ্রের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মকবুল হোসেন এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, এটা গণপূর্তের জায়গা, আমরা এটা ১৯৭২ সাল থেকে ব্যবহার করছি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন