দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে তিন ধাপে আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এখন থেকে দলের তিনটি উইং বা বিভাগ নিজ নিজ অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবে। এই তিন বিভাগের কাজের সমন্বয় করবে দলের স্থায়ী কমিটি। বিএনপির কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি সাংবাদিকদের জানান, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে ‘প্যাকেজ কর্মসূচি’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যেই এই কর্মসূচিগুলো আসবে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ওই বক্তব্যের ধারাবাহিকতায় সক্রিয় কর্মসূচি নিয়ে নামছে বিএনপি। এরই মধ্যে রাজনৈতিক বিভাগ কর্মসূচি ঠিক করেছে। তারা তিনটি ধাপে কাজ ভাগ করেছে। প্রথমত, বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশ বা জনসভা করা হবে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ১৮ জুলাই বরিশালে এবং ২০ জুলাই চট্টগ্রামে সমাবেশ হতে যাচ্ছে। বাকি ছয়টি বিভাগেও সমাবেশ করার প্রস্তুতি চলছে। সব শেষ বিভাগীয় সমাবেশ হবে ঢাকায়। দ্বিতীয়ত, জেলা শহরেও কর্মসূচির আয়োজন করবেন জেলার নেতারা, সেখানে কেন্দ্রীয় নেতারা সফর করবেন। তৃতীয়ত, রাজধানীসহ সারা দেশে পর্যায়ক্রমে মানববন্ধন, কালো পতাকা মিছিল, অনশনের মতো কর্মসূচি চলবে ধারাবাহিকভাবে।
জানা গেছে, আইনজীবীদের কাজ হচ্ছে খালেদার মামলার সব দিক বিশ্লেষণ করা এবং তার অগ্রগতি প্রতি সপ্তাহে স্থায়ী কমিটিকে জানানো। আর ফরেন উইংয়ের কাজ হবে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে প্রতি মাসে একটি, সম্ভব হলে আরো বেশি বৈঠকের আয়োজন করা এবং কী কারণে বেগম জিয়া মুক্তি পাচ্ছেন না তা তুলে ধরা।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বরকতউল্লা বুলু কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘২০ জুলাই চট্টগ্রাম বিভাগীয় মহাসমাবেশ করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। নগরীর লালদীঘি ময়দানসংলগ্ন জেলা পরিষদ মার্কেট ও চট্টগ্রাম বিএনপি অফিসের সামনের সমাবেশের জন্য সিএমপির কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। যেখানেই অনুমতি দেওয়া হোক, আমরা কর্মসূচি সফল করব।’
বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু বলেন, দলের মহাসচিবের নির্দেশে বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বিভাগীয় সমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। ১৮ জুলাই বরিশালে বিভাগীয় সমাবেশ হবে।
দলের ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল কালের কণ্ঠকে বলেন, অন্য বিভাগের সমাবেশের পর ঢাকার সমাবেশ হবে। এখনো তারিখ চূড়ান্ত করা হয়নি।
সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর সাংগঠনিক বিষয়ের দায়িত্বে থাকা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, সিলেট বিভাগীয় সমাবেশের বিষয়টি আলোচনার পর্যায়ে আছে। এখনো তাঁরা তারিখ চূড়ান্ত করতে পারেননি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কর্মসূচি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। সেই ধারাবাহিকতায় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা কর্মসূচি বাস্তবায়নের চেষ্টা চালাচ্ছেন। আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দেশনেত্রীর মুক্তি। এই মুক্তিপ্রক্রিয়া জোরালো করতে বিভাগ, জেলা, মহানগর থেকে শুরু করে রাজপথের সবখানেই কর্মসূচি থাকবে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন