আমরা ‘চোরকারবারি’, স্বর্ণজয়ী শুটার রত্নার জ্বালাময়ী স্ট্যাটাস
দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে স্বর্ণজয়ী শুটার শারমিন আক্তার রত্না ফেইসবুকে অভিযোগ করে লিখেছেন, ‘আফসোস, ফেডারেশনের শীর্ষ দুই কর্মকর্তার দ্বন্দ্বে আজ শুটাররা এনবিআরের চিঠি পেয়েছে, অচিরেই হয়তো জেরার মুখোমুখি হতে হবে!’
শনিবার রত্না নিজের ফেইসবুক আইডিতে দেওয়া দীর্ঘ স্ট্যাটাসে রত্না এ কথা লিখেন।
সম্প্রতি ১৪ জন শুটার, বিদেশে কে কোথায় খেলতে গেছেন এ ব্যাপারে জানতে বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনকে চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সেই শুটারদের পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ঠিকানাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
কী কারণে এই তথ্য জানতে চাওয়া তা চিঠিতে উল্লেখ নেই অবশ্য। তবে সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বরাবর একটি উড়ো চিঠি যায়। যেখানে অভিযোগ করা হয়, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে বাংলাদেশ শুটার দল দেশে ফেরার সময় প্রায় ২০টি রাইফেল ও পিস্তল শুল্ক ফাঁকি দিয়ে দেশে এনে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে।
ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বেআইনি’ চোরাচালানের সাথে ফেডারেশনের কিছু কর্তাও জড়িত। দেশের আট শুটারের নামও উল্লেখ করা হয় সেই চিঠিতে, বলা হয় তাদের কাছে অস্ত্রগুলো আছে।
এর প্রেক্ষিতেই রাজস্ব বোর্ড থেকে এই চিঠি আসতে পারে বলে মনে করছেন শুটিং সংশ্লিষ্টরা। সংবাদ মাধ্যমেও এই খবর ওঠে এসেছে।
শনিবার এরই প্রেক্ষিতে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেন রত্না। তিনি শুটারদের পক্ষেই কথা বলেছেন। দেশের জন্য খেলা শুটারদের এমন পরিণতির জন্য ফেডারেশন কর্তাদের অন্তঃকলহকে দায়ী করেন।
২০১০ এসএ গেমস ও কমনওয়েলথ শ্যুটিংয়ে স্বর্ণজয়ী এই শুটারের পুরো স্ট্যাটাস তুলে ধরা হলো-
‘অতীতে বহুবারের ন্যায় ২০১১ সালেও আমরা রাইফেল এনেছিলাম জার্মানি থেকে! তখন একটি চক্র দুদকের কাছে বিচার দিয়েছিল! সেই একই চক্র এবারও দুদকে বেনামি চিঠি পাঠিয়ে শুটারদেরকে চোরাকারবারি আখ্যা দিয়েছে! তখন শুটার বান্ধব ফেডারেশন ছিল, শুটারদেরকে নিয়ে ভাববার মতো প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি ছিলেন যার কারণে ওই চক্রের হাজার কুপ্রোচেষ্টার পরও শুটারদের দুদকের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় নি!
আফসোস, ফেডারেশনের শীর্ষ দুই কর্মকর্তার দ্বন্দ্বে আজ শুটাররা এনবিআরের চিঠি পেয়েছে, অচিরেই হয়তো জেরার মুখোমুখি হতে হবে! সামর্থ্যবান ক্লাবের শুটার ব্যতীত যেখানে প্রায় সকল শুটার বাপের গাটির টাকা খরচ করে শুটিং করে, দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনে কোনো প্রত্যাশা ছাড়াই, আজ তারা দুর্নীতিবাজ! সরকারি চাকুরে বড় কর্তারা সরকারি টাকায় আয়েশি জীবন যাপন করেও দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকার মালিক, তাদের কত সম্মান!
আর দেশের জন্য বিনা স্বার্থে আমরা যারা নিজেদের টাকায় কেনাই হোক বা কারো দেওয়া উপহারেই পাওয়া রাইফেল দিয়ে বিনা কোনো প্রতিশ্রুতিতে, বিনা কোনো প্রাপ্তির আশায় দেশের জন্য যতটুকুই অর্জন করেছি, আজ তাদেরকেই সেই রাইফেলের জন্য দুদকের জিজ্ঞাসার সম্মুখীন হতে হচ্ছে!
এই লেখার কোনো মানে নেই জানি। আমার শুটার বন্ধুরা, ভাইবোনেরা এই লেখা পড়ে হয়তো একটা দুইটা লাইক কমেন্ট করে আস্তে করে পাশ কাটিয়ে চলে যাবে। কেউ হয়তো পোড়েও কিছু না বলে চলে যাবে ভয়ে। তার পরও আমার নিজের মনের কষ্ট কিছুটা কমানোর জন্যই এখানে এই লেখা!
কেও না বলুক, প্রত্যেক শুটারের মনের কথাগুলো না হয় আমিই লিখে দিলাম!’click here
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন