চীন থেকে শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা দেখতে শুরু করেছে ইতালি। দেশটিতে করোনা আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৬৬ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ইতালিতে এই মারণ ভাইরাসে ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৪৯২ জন। দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৩৭৫ জন।ৎ
ইতালি সরকার ইতোমধ্যে দেশটির এক-তৃতীয়াংশ জনগণকে গৃহবন্দি করে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। প্রায় দেড় কোটি মানুষকে গৃহবন্দি করার নির্দেশের মাঝেই আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত সিরি‘আ’র সব ম্যাচ দর্শকবিহীন মাঠে খেলানোর সিদ্ধান্ত এসেছে। রবিবার রাতে দর্শকশূন্য মাঠে ইন্টার মিলানকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জুভেন্টার।
তবে দেশে যখন এমন ভয়াল পরিস্থিতি চলছে তখন লিগ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ইতালিয়ান ফুটবলারদের অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দামিয়ানো তোমাসি।
দেশটির উত্তরাঞ্চলে গৃহবন্দি করার নির্দেশের আগেই এক টুইট বার্তায় তোমাসি লিখেছেন- ‘সিরি ‘আ’ লিগ থামাও। এ সংক্রমণ কি আরও দরকার? ফুটবল থামাও। আগে স্বাস্থ্য, আগে জীবন- পরে অন্য সব কিছু।’
তোমাসির টুইটের পরপরই বিশ্ব ফুটবলের ‘ব্যাড বয়’ সাবেক ইতালিয়ান স্ট্রাইকার মারিও বালোতেল্লিও করোনা ভাইরাস নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সোচ্চার হয়েছেন এবং আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেইসঙ্গে তিনি একদিকে দেশে মৃত্যুর মিছিল রেখে অন্যদিকে ফুটবল চালিয়ে যাওয়ার ঘোর আপত্তি করেছেন।
বর্তমানে ব্রেসিয়ার হয়ে খেলা বালোতেল্লি তোমাসির সঙ্গে একমত পোষণ করে টুইটে লিখেছেন- ‘আমি আপনার সঙ্গে একশোভাগ একমত। আমাদের স্বাস্থ্যের চেয়ে অর্থ বড় নয়। আমাদের জেগে উঠতে হবে। আগে জীবন বাঁচাও, তারপর টাকা।’
বালোতেল্লি এখন করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া অঞ্চলেই অবস্থান করছেন। তাই দেশের অন্য অঞ্চল থেকে বিছিন্ন অবস্থায় থাকা মানুষের কষ্টটা নিজের অভিজ্ঞতা দিয়েই টের পাচ্ছেন তিনি। তাই মাঠে খেলা চালিয়ে ঝুঁকি বাড়ানোর কোনও কারণ দেখেন না সাবেক এই ম্যানসিটি তারকা।
টুইটে বালোতেল্লি বলেন, ‘আমি ফুটবলকে আপনাদের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। কিন্তু খেলা চালিয়ে যাওয়া মানেই হচ্ছে বাস, ট্রেন, বিমানে চড়া। কোনও হোটেলে থাকা। অপরিচিতের সংস্পর্শে আসা।’
নিজের পরিবারের অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি এমনিতেই আমার সন্তানদের কাছে যেতে পারছি না। কারণ ওরা লম্বার্ডিতে থাকে না। আমি দারুণভাবে দুঃখিত ও ক্ষুব্ধ। আমি আমার মার সঙ্গে প্রতিদিন একসঙ্গে খাই। কিন্তু আমি চাই না আমার কাছ থেকে আমার মায়ের শরীরে জীবাণু ছড়াক। তার বয়স তো আমার মতো নয়। আমি তার অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি নিতে পারি না। বর্তমান পরিস্থিতিতে মাঠে খেলা চালিয়ে জীবনের ঝুঁকি বাড়ানোর কোনও কারণ দেখি না।’
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন