ক্রিকেটে বির্তকের খবর এলে যেন পাকিস্তানের নাম চলেই আসে। এই যেমন এবারও ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য ঘুষ নেওয়ায় দোষী সাব্যস্ত হলেন এক পাকিস্তানি ক্রিকেটার।
এই ক্রিকেটারের নামটা অবশ্য অনেক আগে থেকেই বিতর্কিত। আর তিনি হলেন পাকিস্তানের সাবেক ওপেনার নাসির জামশেদ। ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারের এক আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী এই সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার।
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফিক্সিংয়ের অভিযোগে ইংল্যান্ডে আটক হওয়ার পর বিচার শুরু হয় তার। গত বছর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) তাকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের বিভিন্ন অভিযোগে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের এই পরিকল্পনায় জামশেদের সঙ্গে জড়িত ছিলেন ইউসুফ আনোয়ার ও মোহাম্মদ ইজাজ নামে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিক।
এর আগে নিজের ওপর ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করলেও এবারের শুনানির শুরুতেই নিজের জবানবন্দি পরিবর্তন করেন জামদেশ। ফিক্সিংয়ের জন্য সতীর্থকে ঘুষ দেওয়ার কথা স্বীকার করে নিজেও অন্যদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার কথাও স্বীকার করেন তিনি।
অন্যদিকে আটক হওয়া দুই ব্রিটিশ নাগরিক তাদের জবানবন্দিতে বলেছেন, টাকা নিয়ে পিএসএলে পারফর্ম না-করার কথা দিয়েছিলেন জামশেদ।
বিষয়টির তদন্তকারী কর্মকর্তা ম্যানচেস্টারের আদালতে উল্লেখ করেছেন, ২০১৬ সালের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলার সময় ফিক্সিংয়ের চেষ্টা করেছিলেন জামশেদ। তার সঙ্গে জুয়াড়িদের কথা ছিল, ব্যাটে একটি নির্দিষ্ট রঙের গ্রিপ লাগিয়ে মাঠে নামবেন তিনি। কিন্তু কোনো এক কারণে সেই শর্ত পূরণ করতে পারেননি জামশেদ। একই আসরে বরিশাল বুলসের বিপক্ষে একটি ম্যাচেও ফিক্সিংয়ের চেষ্টা করেন পাকিস্তানি এই ক্রিকেটার। কিন্তু ওই ম্যাচে একাদশ থেকেই বাদ পড়ায় সেবারও সফল হননি তিনি। কিন্তু এই দুটি ম্যাচে ফিক্সিং করার জন্য আগেই টাকা নিয়ে রেখেছিলেন পাকিস্তানি এই ওপেনার।
তারপর ২০১৭ ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান সুপার লিগে অবশেষে জুয়াড়িদের সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে ফিক্সিং করতে পারেন জামশেদ। ইসলামবাদ ইউনাইটেড ও পেশোয়ার জালমির একটা ম্যাচে তার সঙ্গে জুয়ারিদের শর্ত ছিল প্রথম দুই বলে তিনি কোনো রান করবেন না।
জামশেদের সঙ্গে আটক হওয়া ইউসুফ আনোয়ার জবানবন্দিতে বলেছেন, এক দশকেরও বেশি সময় তিনি বিভিন্ন খেলোয়াড়দের দিয়ে ফিক্সিং করিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি ২০১৬ সালের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) তার হয়ে অন্তত ছয়জন ক্রিকেটার কাজ করেছেন।
আগামী বছর ৯ ফেব্রুয়ারি এই তিনজনের বিপক্ষে মামলার রায় দেওয়া হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন