ইশান্তের বলে বিধ্বস্ত বাংলাদেশকলকাতায় প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটে কোনও লড়াই দেখা গেলো না। গোলাপি বলের টেস্টে অসহায় আত্মসমর্পণ করলো তারা। ভারতের পেস বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসে ৩০.৩ ওভারে মাত্র ১০৬ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ।
গোলাপি বলে সতর্ক শুরু করেছিল সাদমান ইসলাম ও ইমরুল কায়েসের উদ্বোধনী জুটি। বেশ ধীরস্থির ব্যাটিংয়ে ইশান্ত শর্মা ও উমেশ যাদবের পেস মোকাবিলা করছিলেন তারা দুজন। সপ্তম ওভারে রিভিউ নিয়ে একবার জীবন পান ইমরুল। তার বিরুদ্ধে কট বিহাইন্ডের আবেদন করেন ইশান্ত, আউট দেন আম্পায়ার। তবে রিভিউয়ের সুফল পান বাংলাদেশি ওপেনার। কিন্তু দুই বল পর আবারও ইশান্তের জোরালো আবেদন, এবার এলবিডাব্লিউর। তাতেও আম্পায়ার আঙুল তোলেন, দ্বিতীয়বার রিভিউ নিয়ে ক্রিজে থাকতে পারেননি ইমরুল। ১৫ বলে ৪ রান করে আউট হন তিনি।
১৫ রানের এই উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর উমেশ যাদবের তোপের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। ১১তম ওভারে তিন বলের ব্যবধানে আরও দুই উইকেট হারায় সফরকারীরা। মাত্র ৭ বল খেলে রানের খাতা না খুলে স্লিপে রোহিত শর্মার অসাধারণ ক্যাচ হন মুমিনুল হক। অধিনায়ক ফেরার দুই বল পর মোহাম্মদ মিঠুন হন বোল্ড। তিনিও আউট হন কোনও রান না করে। গোলাপি বলে প্রথম ম্যাচেই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দুর্দশার চিত্র ফুটে ওঠে টানা তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে মুশফিকুর রহিম ডাক মারলে। মাত্র ৪ বল খেলে মোহাম্মদ সামির বলে বোল্ড হন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।
টপ অর্ডারে ভরাডুবির মধ্যে বাংলাদেশকে কিছুটা স্বস্তিতে রেখেছিলেন সাদমান। কিন্তু এই ওপেনারকেও ফিরতে হয় ঋদ্ধিমান সাহার দুর্দান্ত ক্যাচ হয়ে। উমেশ যাদবের ষষ্ঠ ওভারে পেছনে ঋদ্ধিমান সাহার গ্লাভসবন্দী হন সাদমান। ৫২ বলে ৫ চারে ২৯ রান করেন তিনি। মাত্র ৩৮ রানে ৫ উইকেট হারায় সফরকারীরা।
বিপর্যয়ের শিকার হন মাহমুদউল্লাহও। দলীয় ৬০ রানে ইশান্তের বল তার ব্যাটের কানায় লেগে ঋদ্ধিমানের গ্লাভসে জায়গা করে নেয়। ২১ বলে ৬ রান করেন এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। ৬ উইকেট হারানোর পাশাপাশি প্রথম সেশনে আরেকটি ধাক্কা খায় সফরকারীরা। ক্রিজে থিতু হওয়া লিটন দাস লাঞ্চের ঠিক আগে রিটায়ার্ড হার্ট হন। ২১তম ওভারে মোহাম্মদ সামির বলে কপালে আঘাত পান তিনি। ফিজিওর সঙ্গে কথা বলে আবার ব্যাটিং করতে নেমেই চার মারেন তিনি। তবে মাথায় অস্বস্তিবোধ করায় পরের ওভারে আবার ফিজিওকে ডাক দেন লিটন। শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি ২৪ রানে। ২৭ বল খেলে ৫টি চার মারেন লিটন। তাতে ৬ উইকেটে ৭৩ রানে লাঞ্চে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় সেশনে নাঈম হাসানের সঙ্গে ক্রিজে নামেন এবাদত হোসেন। ৭ বলে মাত্র ১ রানে ইশান্ত শর্মার কাছে বোল্ড হন তিনি। এরপর আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী লিটনের বদলি খেলোয়াড় নামায় সফরকারীরা, ক্রিজে আসেন মেহেদী হাসান মিরাজ। একাদশে না থাকা এই ক্রিকেটার হুট করে জায়গা পাওয়ার সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। ১৩ বলে দুটি চারে ৮ রান করে ইশান্তের বলে চেতেশ্বর পূজারাকে ক্যাচ দেন মিরাজ।
ইশান্ত তার পরের ওভারে নাঈমকে ১৯ রানে বোল্ড করে ক্যারিয়ারে দশমবার পাঁচ উইকেট অর্জন করেন। আর গোলাপি বলে ভারতের প্রথম বোলার হিসেবে এই কীর্তি ডানহাতি পেসারের। পরের ওভারে সামির শিকার হন আবু জায়েদ রাহী। তার ব্যাট ছুঁয়ে আসা বল রোহিত হাতে না রাখতে পারলেও পূজারা ক্যাচটি নেন।
১২ ওভারে ইশান্ত ৫ উইকেট নেন ২২ রান দিয়ে। উমেশ তিনটি ও সামি দুটি উইকেট নেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন