জাতীয় দলের ক্রিকেটার মোসাদ্দেক সৈকতের বিরুদ্ধে নির্যাতনের মামলা করল তার স্ত্রী সামিয়া শারমিন। হঠাৎ সম্পদ এলে অনেকে যে এর তাপ সামলাতে পারে না, সৈকত যেন তেমনি একজন।
বাল্যবন্ধু কবিরের ছোটবোন সামিয়া ময়মনসিংহের আকুয়ায় আমাদের সামনেই বড় হয়েছে। তাদের খালাতো ভাই সৈকতও বেড়ে উঠেছে একই শহরে। অল্প বয়সে সৈকতের বাবা মারা যাওয়ার পর চরম দুর্দিনের মুখে ৩ ছেলে, এক মেয়েকে নিয়ে বিপাকে মা। খালার বাসা থেকে খাবার আর টাকায় দুএক বেলা আহার জুটছে যখন তখনই সৈকত- সামিয়ার মন দেয়া-নেয়া। সেসময় বড় খেলোয়াড়ও নয়, টাকা রোজগারো শুরু করেনি। ক বছর পর ২০১২ সালে সৈকত অনুর্ধ্ব ১৯ দলে সুযোগ পাওয়ার পর সামিয়ার পরিবার মেয়ের অন্যত্র বিয়ে ঠিক করলে দুজন সম্পর্কের কথা জানায়। দুজনই খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিলে পরিবার বিয়ে দেয় দুই খালাত ভাইবোনের।
কিন্তু তারপর সৈকত ক্রিকেটের যতই জাতীয় পর্যায়ে এগিয়েছে, ততই অবহেলার স্বীকার হয়েছে স্ত্রী সামিয়া। যতই নামডাক বেড়েছে ততই সৈকত ভুলেছে তাদের পরিবারের চরম দু:সময়ে খালার এবং খালার বাড়ির সহযোগিতার কথা। সৈকতের আজ বাড়ি হয়েছে, গাড়ি হয়েছে, সামিয়া সেসবে থাকার সুখের বদলে পেয়েছে শারিরীক, মানসিক নির্যাতন। সামিয়ার পরিবার বারবার ছোট হয়ে সম্পর্ক ভাল করার চেষ্টা করলেও এখন সৈকতের সামনে অনেক সামিয়ার হাতছানি। কেন এমন হলো? সামিয়াকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। সৈকত নাকি বলেছে, কৈশরের প্রেমিকাকে আর ভাল লাগে না নামী ক্রিকেটারের। অনেক ঘটনার খবর জানে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা বিসিবিও। গেল ১৬ অাগস্ট তালাকের প্রথম কাগজ পাঠায় সৈকত। আর ২৬ আগস্ট, রোববার নির্যাতনের মামলা করল সামিয়া। (সাংবাদিক)
......এবার ক্রিকেটার মোসাদ্দেকের বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলা .......
একের পর এক নারী নির্যাতনের কেলেঙ্কারিতে জড়াচ্ছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। রুবেল হোসেন, নাসির হোসেন, আরাফাত সানি, সাব্বির রহমান, মোহাম্মদ শহীদের পর এবার নারী কেলেঙ্কারিতে যোগ হলো আরেক নাম। তিনি হলেন জাতীয় দলের উদীয়মান ক্রিকেটার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত!
তার বিরুদ্ধে এবার নারী নির্যাতনের মামলা করলেন স্ত্রী সামিয়া শারমিন। ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নং আমলি আদালতে এই মামলাটি করা হয়।
২০১২ সালের ২৮ অক্টোবর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সঙ্গে তার আপন খালাত বোন সামিয়া শারমিন সামিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পূর্বে খালাত বোন সামিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও দুই পরিবারের সম্মতিক্রমে পারিবারিক পরিবেশে কন্যার নিজ বাসায় বরের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বিয়ে সম্পন্ন হয়।
মামলার ১ নম্বর সাক্ষী, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের স্ত্রীর বড় ভাই মোজাম্মেল কবির আজ সন্ধ্যার পরে জাগো নিউজের সঙ্গে মুঠোফোন আলাপে বলেন, ‘সৈকত (মোসাদ্দেক হোসেন) আমার খালাতো ভাই। পারিবারিকভাবে মেলামেশা থেকেই আমার ছোট বোন সামিয়া শারমিনের সঙ্গে পরিচয় এবং যা পরবর্তীতে বিয়েতে গড়ায় এবং আমরা বিষয়টা মেনেও নেই। ছয় বছর আগেই তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর কয়েক বছর ভালো কাটলেও যখনই মোসাদ্দেক সৈকত জাতীয় দলে নিয়মিতভাবে সুযোগ পাওয়ার পর থেকেই তার নৈতিক স্থলন ঘটতে শুরু করে।’
মোজাম্মেল অভিযোগ করে বলেন, ‘সে (মোসাদ্দেক) ঘরে বসে বন্ধুদের নিয়ে মদপান করতে শুরু করে। অন্য নারীতে আকৃষ্ট হওয়া, তথা নানা অসামাজিক কার্যক্রমে লিপ্ত হতে থাকে। আমার বোন তাকে ওইসব অসামাজিক কার্যক্রম বন্ধের কথা বলতেই সে তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে। তা থেকেই শুরু হয় বিবাদ ও দূরত্ব। আমরা বুঝতে পারি তারকা খ্যাতি, নাম-ডাক ও অর্থ তাকে বদলে দিয়েছে।’
সৈকতের স্ত্রী বিষয়টা জাতীয় দলের ম্যানেজার সুজনকে জানিয়েছেন বলেও জানান মোজাম্মেল। তিনি বলেন, ‘দিনকে দিন সৈকতের আচরণে অতিষ্ঠ আমার ছোট বোন বিষয়টি জাতীয় দলের সাবেক ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনের কাছে জানান। সুজন সাহেব তার কথা শুনে আশ্বস্ত করে বলেন, ঠিক আছে মোসাদ্দেক সৈকত ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর আমেরিকা সফর শেষে দেশে ফিরে আসুক তারপর কথা বলে একটা আপোষ রফা করে দেবেন। সেই অনুযায়ী ১৫ আগস্ট সুজন সাহেবের সঙ্গে আমার বোন ও সৈকতের দেখা করার কথা ছিল।’
এরপরের ঘটনা সম্পর্কে মোজাম্মেল বলেন, ‘এদিকে সৈকত ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাবার আগে আমি ছোট বোন সামিয়া শারমিনকে আমার বাসায় এনে রাখি। সৈকত সুজন সাহেবের সঙ্গে বসার কথা বলে গত ১৪ আগস্ট আমার বোনকে তার বাসায় নিয়ে যায়। এরপর তার বাসায় নিয়ে বোনের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালায়। তাকে শারীরিকভাবে আঘাতের পাশাপাশি হুমকিও দেয়। সৈকতের নির্মম নির্যাতন ও হুমকিতে আজ আমার ছোট বোন তার বিপক্ষে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা করতে বাধ্য হয়েছে।’
মোসাদ্দেক সৈকতের স্ত্রী সামিয়া শারমিনের স্ত্রীর বড় ভাই মোজাম্মেল কবির জাগো নিউজকে আরও জানান, ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এক নম্বর আদালতে আজই মামলা হয়েছে।
উৎসঃ জাগোনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন