ইন্টিগ্রেটেড সাবস্কাইবার আইডেন্টিটি মডিউল সংক্ষেপে আইসিম (iSIM) ফোনের প্রসেসরের মধ্যেই সংযুক্ত থাকবে। বেশ কিছুদিন থেকেই ইসিমের হিড়িক লক্ষ করা গিয়েছিল। যদিও ইসিম খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি। এর মধ্যেই আবার আইসিম প্রযুক্তির নাম শোনা যাচ্ছে। আজকের আয়োজনে আইসিম প্রযুক্তি কী, কীভাবে কাজ
করে এ প্রযুক্তি তারই বিস্তারিত লিখেছেন- ফয়সাল আহমাদ
শোনা যাচ্ছে আইসিম এনাবেল স্মার্টফোনে কোনো সিম কার্ড স্লট থাকবে না। আর থাকবে না বলেই সেই ফোনের ডিজাইন ভালো হবে, ব্যাটারি হবে আরও শক্তিশালী। আকার বা আয়তনের দিক থেকে সিম কার্ড পরিবর্তিত হলেও মূল ধারণা কিন্তু একই রয়েছে। মার্কেট থেকে এখনো ফিজিক্যাল সিম কার্ডের দৌরাত্ম্য কাটেনি। প্রথাগত ফিজিক্যাল সিম কার্ডের থেকে আকারে খুবই ছোট্ট ইসিম কার্ডের মাধ্যমে যে কোনো টেলিকম অপারেটরের কানেকশন ব্যবহার করা যায়। চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কোয়ালকম নতুন ধরনের প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে। অপারেশনাল স্মার্টফোনে এ আইসিম প্রদর্শনের জন্য ভোডাফোন এবং থেলসের সঙ্গে জোটও বেঁধেছে সেমিকন্ডাক্টর প্রস্তুতকারক মার্কিন এ কোম্পানিটি।
কী এই আইসিম প্রযুক্তি?
আইসিম নতুন প্রযুক্তি হলেও এতে প্রথাগত সিম কার্ডের সব গুণাবলি থাকবে। কিন্তু তা ডিভাইসের প্রসেসরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। অর্থাৎ ফোনে কোনো সিম কার্ড স্লট থাকবে না কিন্তু আইসিম ফোনের ইন-বিল্ট প্রসেসর ইন্টিগ্রেট করা থাকবে। এ প্রযুক্তি এলে অনেকটাই ইসিমের মতো। অবশ্য আইসিম ডিভাইসের সঙ্গে অ্যামবেডেড থাকবে, যেটা ইসিমে ছিল না। জিএসএমএ স্পেসিফিকেশন্স মেনে চলে আইসিম, ডিভাইসের মূল প্রসেসরেই সিম ফাংশনালিটি অ্যামবেড করা রাখতে পারে এ প্রযুক্তি। কোয়ালকমের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আইসিম ব্যবহার করলে স্মার্টফোনের পারফরমেন্স আরও ভালো হবে, মেমোরি ক্যাপাসিটি আরও বাড়বে এবং সেই বৃহত্তর সিস্টেম ইন্টিগ্রেশনও পাওয়া যাবে।
আইসিমের সুবিধা কী?
স্মার্টফোনের বাইরে গিয়েও একটা সিম কার্ডের ব্যবহার তুলে ধরা আইসিম প্রযুক্তির মূল উদ্দেশ্য। আইসিম প্রযুক্তি ল্যাপটপ থেকে শুরু করে আইওটি, ডিভাইস, স্মার্টওয়াচ, এমনকি ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি প্ল্যাটফরমেও ব্যবহার করা যেতে পারে। কোয়ালকম-জানিয়েছে, এর সুবিধা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম হতে পারে। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে, ডিভাইসের ডিজাইন এবং পারফরমেন্স আগের থেকে আরও উন্নত হবে। কারণ এ প্রযুক্তি ডিভাইসে অনেকটাই জায়গা খালি করে দেবে। সিম কার্ড স্লট না থাকার ফলে স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো ফোনের ডিজাইনে আরও পরিবর্তন আনতে পারবে। একটা ডিভাইসে সিম কার্ড না দিয়েই তার সব সুবিধা উপভোগ করতে দেবে এ আইসিম প্রযুক্তি।
আইসিমের প্রভাব বাজারে কবে আসবে?
আইসিম বিশ্বের কাছে একটা নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচন করবে, বিশেষ করে আইওটি ডিভাইসের ক্ষেত্রে। একজন মানুষ আইসিম কানেক্টেড ডিভাইস নিয়ে নিরাপদভাবে আইওটি নেটওয়ার্কে থেকে বিশ্বের যে কোনো জায়গায় ঘুরে বেড়াতে পারবেন। মেইনস্ট্রিমে ছড়িয়ে দিতে এ প্রযুক্তিকে আপন করে নিতে হবে টেলিকম সংস্থাগুলোকে। আইসিম কানেক্টেড ডিভাইস হাতে পেতে এখনো অনেকটাই দেরি, বেশ কিছু বছর লেগে যেতে পারে। প্রথমে প্রযুক্তিটি লঞ্চ হবে আর তার পরে তা দেওয়া হবে বিভিন্ন ডিভাইসে।
ভোডাফোনের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ইউরোপে এ ডেমনস্ট্রেশন করা হয়েছিল। যে ডিভাইস ব্যবহৃত হয়েছিল, সেটি হলো স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ থ্রি ৫জি, যাতে কোয়ালকমেরই স্ন্যাপড্রাগন ৮৮৮ ৫জি প্রসেসর রয়েছে। সেই প্রসেসরের সঙ্গেই ইন্টিগ্রেট করা হয়েছিল আইসিম এবং থেলসের আইসিম অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহৃত হয়েছিল।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন