আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ইন্টারনেট একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বহিঃবিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমরা সর্বদা ব্যস্ত থাকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ইন্টারনেট বা ভার্চুয়াল দুনিয়াটা যেন সকলের কাছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য। একদিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকলে বা এ জগতে প্রবেশ না করতে পারলে হাঁসফাঁস অবস্হা নেটিজেনদের।
বর্তমানে ফ্রি ওয়াইফাই জোনের এতটাই চাহিদা যে রেলস্টেশন, বিমানবন্দর থেকে শুরু করে বহু রেস্তোরাঁ এমনকি বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী সংস্থাও গ্রাহক টানতে এখন এর দ্বারস্হ হয়েছে। যার ফলে এইসব স্থানে গেলে কোনো পাসওয়ার্ড ছাড়াই বিনামূল্যে ওয়াইফাই সংযোগ করা যায়।
এসব ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের জন্য একটি 'হটস্পট' মেশিন লাগে। অধিকাংশ সময়ই দেখা যায়, এই 'হটস্পট' মেশিনের ভাইরাস প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে না। ফলে এই 'হটস্পট' এর সঙ্গে সংযোগ থাকা মোবাইল বা ল্যাপটপেও সেই ভাইরাস ঢুকে যায়। এর মধ্যে এমন কিছু ভাইরাস থাকে যাদের কাজ হলো ডিভাইসের ভিতর থেকে যাবতীয় তথ্য বের করে হ্যাকারকে পাঠিয়ে দেয়া। অনেক সময় পাবলিক ওয়াইফাই জোনে নানা সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড লাগানো থাকে। যাতে এই ওয়াইফাই জোনে স্মার্টফোন বা ল্যাপটপগুলো সাবধানে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু অধিকাংশ সময়েই মানুষ এইসব সাইনবোর্ডকে পাত্তা দেয় না, ফলে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়।
ফ্রি ওয়াইফাই জোনে একজনের স্মার্টফোন ব্যবহারকারী বা ল্যাপটপ ব্যবহারকারীর 'ডেটা কমিউনিকেশন' পড়ে ফেলতে পারে অন্য কেউ।
এ ব্যাপারে মিরপুর (আইএসটিটি) ইনিস্টিটিউট সাইন্স ট্রেড এন্ড টেকনোলোজি কলেজের (সিএসই) বিভাগের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত হোসেন শোভন বলেন, একটি সর্বজনীন ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের বেশ কয়েকটি সুরক্ষা সমস্যা রয়েছে। এটির কারণে অনেক লোক একই স্থানে একই সময়ে নেটওয়ার্ক অ্যাক্সেস করে। সর্বজনীন ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক সাধারণত একই সময়ে বেশ কয়েকটি ব্যক্তি অ্যাক্সেস করে বলে ব্যান্ডউইথের যথেষ্ট ক্ষতি হ্রাস করে যার ফলে ধীর নেটওয়ার্ক গতি হয়। কখনও কখনও, বর্ধিত ব্যবহারকারী লোডের ফলে সংযোগ এমনকি পুরোপুরি নেমে যায় যা কিছু সময়ের পরে বিশেষত বিরক্তিকর হয়ে ওঠে।
অপরদিকে আপনি ইন্টারনেট অ্যাক্সেসের সময় যদি আপনার ডিভাইসের ফায়ারওয়ালটি চিহ্নিত না হয় তবে আপনি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে গোপনীয় ডেটা (যেমন পাসওয়ার্ড, পিন ইত্যাদি) প্রেরণের উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন। এ জন্য কোন পাবলিক ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে কানেক্ট হয়ে কাজ করার সময় ভিপিএন ইউজ করলে সে ক্ষেত্রে কিছুটা সেইফ থাকা সম্ভব।
এছাড়া কোনভাবে হ্যাকাররা যদি মোবাইলে থাকা ব্যাংকিং ডিটেলস, যেমন একাউন্ট নাম্বার, ডেবিট কার্ড নম্বর, পিন নম্বর, ক্রেডিট কার্ড নম্বর, পিন নম্বর পেয়ে যায় তাহলে নিঃস্ব হতে পারে ব্যবহারকারী।
এই ফ্রি ওয়াইফাই কানেকশনে কোন পাসওয়ার্ড তো থাকেই না, এমনকি এর রাউটারও অত্যন্ত নিম্নমানের হয়। যার ফলে 'ফ্রি ওয়াইফাই' এ কানেক্ট হওয়া ডিভাইস খুব সহজেই হ্যাক করা যায়। তাই সুরক্ষিত ওয়াইফাই জোন ছাড়া কোথাও মোবাইল বা ল্যাপটপ কানেক্ট না করতেই পরামর্শ দিয়েছন বিশেষজ্ঞরা।
শিক্ষার্থী, সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন