বাকি মাত্র এক দিন। আগামী শুক্রবার বিএফডিসিতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ১৭তম নির্বাচনের ভোট। এবারের নির্বাচনকে ঘিরে বহু আগে থেকেই বেশ আলোচনা এবং উত্তেজনা শিল্পীদের মধ্যে। গত ১২ জানুয়ারি দুটি প্যানেলের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর সেই উত্তেজনার পারদ বহুগুণে বেড়েছে।
প্যানেল দুটির একটি মিশা সওদাগর ও জায়েদ খানদের, যারা গত দুই মেয়াদে শিল্পী সমিতির দায়িত্বে ছিলেন। এবারও তারা একটি শক্তিশালী প্যানেল গঠন করেছেন। ইলিয়াস কাঞ্চনকে সভাপদি পদে দাঁড় করিয়ে আরেকটি প্যানেল গঠন করেছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ। তিনি লড়ছেন সাধারণ সম্পাদক পদে।
দুই প্যানেলেই একঝাঁক করে তারকা প্রার্থী। নির্বাচনকে ঘিরে তাদের মধ্যে দারুণ উত্তেজনা। এছাড়া যেসব শিল্পী ভোটার এবং যারা ভোটার নন, শুক্রবারের নির্বাচন নিয়ে তাদের উত্তেজনাও তুঙ্গে। কারণ, তাদের মধ্যে এক দল মিশা-জায়েদ প্যানেলকে সমর্থন করছেন, তাদের সঙ্গে প্রচার-প্রচারণায় শামিল হচ্ছেন। আরেকটি একটি দল কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের হয়ে কাজ করছেন।
কিন্তু চলচ্চিত্রে এমন কয়েকজন তারকাও আছেন, যাদের কোনো উত্তেজনাই ছুঁতে পারে না। তারা কোনো মেয়াদের নির্বাচনেই প্রার্থী হননি, আবার কোনো প্যানেলের পক্ষে কাজ করতেও দেখা যায়নি। রয়ে যান আড়ালে। অথচ তারা কিন্তু ভোটার। তাদেরই একজন অভিনেতা ও সফল ব্যবসায়ী অনন্ত জলিল।
গত দুই মেয়াদেই শিল্পী সমিতির বনভোজন হোক বা যেকোনো অনুষ্ঠান- এই নায়কের সরব উপস্থিতি ছিল। কিন্তু বরাবরের মতো সমিতির নির্বাচনে তার দেখা নেই। নির্বাচন নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পর এক দিনও তিনি এফডিসিতে পা রাখেননি। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও কারও পক্ষে তিনি কথা বলেননি।
কিন্তু শিল্পী সমিতির নির্বাচন এলেই কেন এভাবে নিজেকে আড়াল করে রাখেন ‘নিস্বার্থ ভালোবাসা’ ছবির নায়ক ও প্রযোজক অনন্ত জলিল? অভিনেতা জানান, ‘আমি সব সময়ই শিল্পীদের পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব। কিন্তু নির্বাচনে সময় দেওয়া বা কারও পক্ষে কাজ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’
এর কারণ হিসেবে অনন্ত জলিল জানান, অভিনেতা পরিচয়ের পাশাপাশি তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। গার্মেন্টসের ব্যবসা নিয়ে প্রতিদিনই তাকে ভিষণ ব্যস্ত থাকতে হয়। কাজেই, শিল্পী সমিতির নির্বাচন হোক বা কোনো রাজনৈতিক নির্বাচন- কোথাও তিনি সেভাবে সময় দিতে পারেন না।
পাশপাশি অনন্ত জলিল এও জানান, তিনি শিল্পী সমিতির ভোটার। শুক্রবার কাজের ফাঁকে এফডিসিতে গিয়ে ভোটটা ঠিকই দিয়ে আসবেন। তবে কোন প্যানেলকে সমর্থন করছেন, সে বিষয়ে কিছু জানাতে রাজি নন এই ব্যবসায়ী-অভিনেতা। দিন দশেক আগে ফেসবুকেও তিনি এভাবে নিজের অবস্থান পরিস্কার করেন।
এদিকে, অনন্ত জলিলের মতো তার স্ত্রী অভিনেত্রী আফিয়া নুসরাত বর্ষাও শিল্পী সমিতির নির্বাচনে নিজেকে আড়ালে রেখেছেন। তাকেও এখন পর্যন্ত কোনো প্যানেলের পক্ষে কাজ করতে দেখা যায়নি। কোন প্যানেলকে সমর্থন করছেন, সে সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায়ও কোনো মতামত দেননি।
ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার থেকে বিবিএ এবং ফ্যাশ ডিজাইনিংয়ের ওপর পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরে ১৯৯৯ সালে ব্যবসায়ী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন অনন্ত জলিল। অজি গ্রুপ অব ইন্ড্রাস্টিজ নামে তার একটি গার্মেন্টস ব্যবসা রয়েছে। এছাড়া মুনসুন ফিল্মস নামে একটি প্রযোজনা সংস্থার মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র শিল্পেও বিনোয়োগ করেন।
অনন্ত জলিলের অভিনয়ে যাত্রা শুরু ২০১০ সালে ‘খোঁজ: দ্য সার্চ’ সিনেমার মাধ্যমে। সেটির প্রযোজকও তিনি। এ পর্যন্ত ১০টি ছবিতে অভিনয় করেছেন অনন্ত। একটি বাদে বাকি নয়টিতেই তার নায়িকা স্ত্রী বর্ষা। পাশাপাশি সবগুলো ছবি তিনি তার মুনসুন ফিল্মস থেকে প্রযোজনাও করেছেন।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন