ঈদের আনন্দ আয়োজন মানেই মোশাররফ করিম অভিনীত নাটক। এমন অনেকবারই হয়েছে এই অভিনেতার সর্বাধিক নাটক ঈদে দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রচার হয়েছে। বড় পর্দায়ও এই অভিনেতা নিজেকে প্রমাণ করেছেন। অভিনয় ক্যারিয়ারে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় কাজ। এবার ঈদুল আজহায় রাইজিংবিডির আনন্দ আয়োজনে কথা বলেছেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এই অভিনেতা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আমিনুল ইসলাম শান্ত।
রাইজিংবিডি: ছেলেবেলার আনন্দ কখনও ফিরে আসে না। কেমন ছিল সেই সময়ের ঈদ?
মোশাররফ করিম: একেবারে অন্যরকম! লাটিম আর ঘুড়ি নিয়েই কেটে যেত ঈদের দিন। ইচ্ছেমতো ঘুরতাম। কিছু নিয়েই কোনো টেনশন ছিল না। আহ্! সেই দিনগুলো খুব মিস করি।
সত্যি বলতে, ছেলেবেলায় ঈদের জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষায় থাকতাম। দুরন্ত ছিলাম বলে কড়া শাসনে আমি বড় হয়েছি। ওই সময়ে এক প্রকার বন্দি করে রাখা হতো আমাকে যাতে দুষ্টুমি কম করি। কিন্তু ঈদে ডিসকাউন্ট পেতাম। অর্থাৎ একটু ছাড় পেতাম। যে কারণে আনন্দটা বহু গুণে বেড়ে যেতো।
রাইজিংবিডি: হাটে গরু কেনার অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই আছে?
মোশাররফ করিম: একদম নেই। হাটে গিয়ে গরু কেনার মধ্যে আমি কোনো আনন্দ পাই না। আমার কাছে পরিশ্রম মনে হয়।
রাইজিংবিডি: এবারের ঈদে কতগুলো নাটক-টেলিফিল্ম প্রচার হবে?
মোশাররফ করিম: সঠিক জানি না। করোনার কারণে সেই অর্থে এবার কাজ করিনি। তবে ‘বিষ’ ও ‘গিরগিটি’ নামে সাত পর্বের একটি ধারাবাহিক প্রচার হবে। এছাড়া আরো একটি ধারাবাহিকে কাজ করেছি। নামটা ভুলে গিয়েছি। এগুলো ঈদের বেশ আগে করা।
রাইজিংবিডি: করোনার কারণে কয়েকটি নাটকে কাজ করার পর শুটিং না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কাজে ফেরার বিষয়ে কী ভাবছেন?
মোশাররফ করিম: কাজে তো ফিরতেই হবে। সাবধানে কাজ করতে হবে। করোনা পরিস্থিতি পরিবর্তনের অপেক্ষায় আছি। আগে মানুষ হ্যান্ড শেক করতেন। হ্যান্ড শেক না করলে লজ্জা পেতেন। বলতেন- সরি ভাই, হ্যান্ড শেক করলাম না। কিন্তু করোনা আসার পর মানুষ হ্যান্ড শেক ভুলতে বসেছে। এভাবেই সময়ের সঙ্গে সচেতনতা ও অভ্যস্ততা মানুষের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে। আমি সেই সময়ের অপেক্ষায় আছি।
রাইজিংবিডি: টেলিভিশন নাটকের মান নিয়ে অনেক কথা শোনা যায়। এ প্রসঙ্গে আপনার ভাবনা জানতে চাই।
মোশাররফ করিম: এখন অনেক কাজ হচ্ছে। সব কাজ দেখা সম্ভব না। ফলে ভাসা ভাসা মন্তব্য করা ঠিক হবে না। আমরা খুব ভালো কাজ প্রত্যাশা করি, কিন্তু ভালো কাজের জোগান যে কোথা থেকে হবে তা নিয়ে ভাবি না। কিংবা সেই জোগানটা আমরা দেই না। সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে অভিজ্ঞ লোকের যুক্ত হওয়া জরুরি। কিন্তু সেই অভিজ্ঞ লোক তৈরি হবে কীভাবে? এজন্য ইনস্টিটিউট প্রয়োজন। ইনস্টিউট তো নাই। এখন যারা নাটকের কাজ করছেন, তাদের এই ক্ষেত্রে এক ধরনের প্রেম আছে। প্রেম এবং প্রফেশন ভিন্ন বিষয়।
রাইজিংবিডি: সফল অভিনেতা। অ-নে-ক ভক্ত। জীবনের সেরা সময় কোনটি?
মোশাররফ করিম: কৈশোর। আমি গ্রামের আলো-বাতাসে বড় হয়েছি। আমার মনে হয়, প্রত্যেক শিশুর ওই সময়ে গ্রামে থাকা উচিত।
রাইজিংবিডি: কাল সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি দেখেন করোনা নেই, তবে প্রথমে কোথায় ঘুরতে যাবেন?
মোশাররফ করিম: মালয়েশিয়া।
রাইজিংবিডি: এখন স্বেচ্ছা গৃহবন্দি। জীবন সম্পর্কে নতুনভাবে কী উপলদ্ধি করছেন?
মোশাররফ করিম: নানান ব্যস্ততার কারণে আমরা আসলে নিজেদের দিকে তাকানোর সময় পাই না। আমার বড় উপলদ্ধি— আমরা আসলে কেউ না। পার্থিব জীবনে আমরা অনেক কিছু সাজাই, গোছাই, জীবনকে বিস্তৃত করি। কিন্তু এগুলো কিছু না। সব আল্লাহর ইচ্ছা।
রাইজিংবিডি: বেঁচে থাকার জন্য মানুষের কী প্রয়োজন?
মোশাররফ করিম: শান্তি।
রাইজিংবিডি: করোনাকালে আপনার সবচেয়ে বেশি কী ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করেন?
মোশাররফ করিম: মানসিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। মন সবসময় ভারী হয়ে থাকে।
রাইজিংবিডি: জীবন থেকে কোন জিনিসটি বদলে ফেলতে চান?
মোশাররফ করিম: আমি কখনো পরিকল্পনা করে কাজ করি না। ফলে বদলে ফেলার কিছু নেই।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন