শাবানা। বাংলা চলচ্চিত্রে স্বর্ণাক্ষরে লেখা তিন অক্ষরের এই নামটি শ্রদ্ধার। মমতার। কোটি দর্শক এ নামে এখনো ভক্তি দেয়। সে নামটি কয়েক দিন হলো গণমাধ্যমে নানাভাবে প্রকাশিত হলো। নামটির সঙ্গে রাজনীতি জড়িয়ে সংবাদ প্রচার হলো। যতটুকু তার বিষয় শুনেছি তাতে এতটুকু বুঝেছি, তিনি যে কোনো কাজে পা দেওয়ার আগে অন্তত দশবার ভাবেন। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া নিয়ে তার সম্পৃক্ততা ঠিক কতটুকু প্রাসঙ্গিক?
এ নিয়ে ফিল্মপাড়ায় বয়োজেষ্ঠদের আলোচনায় উঠে এসেছে শাবানার স্বামী ওয়াহিদ সাদিকের উচ্চাকাক্সক্ষার কথা। যিনি শুরু থেকেই ছিলেন শাবানার আঁচলধরা ছায়াসঙ্গী। কারও ছবি আটকে নিজের ছবি চালানো, ছবির কাজ বন্ধ করে দেওয়া- এমন বহু ঘটনার নেপথ্য কারিগর ওয়াহিদ সাদিক। পরিবারসহ সন্তানাদি নিয়ে যখন শাবানা আমেরিকায় পাড়ি জমালেন, তখন ইন্ডাস্ট্রির নাজুক অবস্থা। কিন্তু দর্শক মেনে নিয়েছিল তার সে সিদ্ধান্ত। এখনো টিভিতে শাবানার ছবি দেখলে দর্শক হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এই হচ্ছে শাবানার প্রতি দর্শকের শ্রদ্ধা।
বিপত্তি ঘটেছে সম্প্রতি রাজনীতিতে তার যোগদান আলোচনা নিয়ে। বছর দুয়েক আগে গণমাধ্যমে প্রকাশ পায় শাবানা নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। পড়ে জানা গেল তিনি নন, তার স্বামী ওয়াহিদ সাদিক প্রার্থী হতে চাচ্ছেন। সে যাত্রায় কেউ-ই আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে পারেননি। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাবানার অবদানকে স্বীকার করে তাকে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করেন। শোনা যায়, সে সময় তিনি শাবানাকেই অনুরোধ করেছিলেন প্রার্থী হতে, তবে চিরজীবন ব্যক্তিত্ব বজায় চলা শাবানা সবিনয় ফিরিয়ে দেন সে অনুরোধ।
এখন প্রার্থিতা বিষয় আলোচনা আকাশে-বাতাসে ডালপালা মেলতে শুরু করেছে। প্রথম গুঞ্জন ছিল প্রার্থী হচ্ছেন শাবানা। যশোর-৬ কেশবপুর সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেকের মৃত্যুতে গত ২৮ জানুয়ারি আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। তোড়জোড় শুরু হয় ওয়াহিদ সাদিকের। তড়িঘড়ি তিনি গুটিকয়েক গণমাধ্যমকর্মীকে দাওয়াত করে তার ইচ্ছার কথা জানান দেন। তবে সে সময় কৌশলে নিজেকে আড়ালে শাবানার নামটি ছড়িয়ে দেন। শেষতক প্রকাশ হলো শাবানা নন, ওয়াহিদ সাদিক হতে চাচ্ছেন প্রার্থী।
মুঠোফোনে এ ব্যাপারে স্বীকারও করে বলেন, মনোয়ন পেলে আমি প্রয়োজনে পাসপোর্ট সারান্ডার করব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আসনটির টিকিট ফসকে গেল। ছবি প্রযোজনা করবেন? ওপাশ থেকে জবাব হ্যাঁ। ওয়াহিদ সাদিকের এমন ঘোষণায় ফিসফাস এফডিসিপাড়ায়। যার প্রডাকশনের অফিস নেই। সব বিক্রি করে আমেরিকায় পাড়ি জমালেন। সেখানেও ভালো অবস্থানেই নেই তাই এক ঢিলে দুই পাখির শিকারের ঘোষণার সত্যতা কোথায়?
সব আলোচনার আপাতত সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে। শাবানা আবারও চলে গেছেন আমেরিকা। গত সপ্তাহে তিনি চলে যাওয়ার আগে কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি। অথচ এবার দেশে ফিরেই সাংবাদিকদের সঙ্গে একাধিকবার মুখোমুখি হয়েছেন। বলেছেন আবেগের কথা। চলচ্চিত্রে ফিরে আসার কথা। কিন্তু একটিবারের জন্যও এফডিসিতে ঢু মারেননি এ নায়িকা। এ নিয়ে সমালোচনাও শুনতে হয়েছে তাকে।
দর্শকের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শেলী হোসেন বলেন, ‘শাবানা ম্যাডাম শ্রদ্ধেয় অভিনেত্রী। তার প্রতি আমার জিজ্ঞাসা- উনি শাবানা হয়েছেন যে ইন্ডাস্ট্রি থেকে, অবসরের পর সেখানকার মানুষের দুঃখ-দুর্দশা শুনেছেন, কিন্তু একটিবারের জন্যও কেন সেখানে যাননি?’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন