রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান বললেন
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ায় আবার দ্বিতীয় দফায় ‘কঠোর লকডাউনের’ ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এক সপ্তাহের লকডাউনের বিধি-নিষেধে কিছুটা শিথিলতার পর সংক্রমণ না কমায় এবার কঠোর লকডাউন পালনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের কপালে আবারও দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান এম হাফিজুর রহমান খান বলেছেন, সংক্রমণের রাশ টানতে গিয়ে অর্থনীতির ক্ষতি কোনোভাবেই কাম্য নয়। বরং স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখা যায় সেই পথ খোঁজা উচিত। এতে অর্থনীতিও যেমন সুস্থ থাকবে তেমনি বেসরকারি খাতও মহামারির মধ্যে কিছুটা শ্বাস নেওয়ার সুযোগ পাবে।
মোটরসাইকেল প্রস্তুত ও রপ্তানিতে প্রথম দেশীয় ব্র্যান্ড রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডের রানার মোটরসাইকেল রপ্তানি হচ্ছে নেপাল ও ভুটানে। আগামী বছর আফ্রিকাসহ কয়েকটি দেশেও যাওয়ার পরিকল্পনা করছে এই দেশি ব্র্যান্ড। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ অনেক পরিকল্পনায় তছনছ করে দিয়েছে।
নতুন লকডাউনের ফলে ব্যবসার ক্ষেত্রে কী কী প্রভাব পড়তে পারে জানতে চাইলে হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে লকডাউনের পক্ষপাতী না। লকডাউন কোনো সমাধান না। লকডাউন দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য ড্যামেজ করার কোনো মানে হয় না। লকডাউন দিয়ে কোনো সমাধানে পৌঁছানো যাবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে আমার মনে হয়, সব কিছু বন্ধ করে দিয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা করার ভালো সিদ্ধান্ত না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা সহজে যাবে না। এখানে তৃতীয়, চতুর্থ ঢেউ আসতে পারে। এর মধ্যেই আমাদের চলতে হবে। তাহলে কি ক্ষতি কমাতে আমরা সব কিছু বন্ধ রাখব? আরেকটা কথা হলো এই যে দ্বিতীয় ঢেউটা আসবে তা তো আগেই ধারণা করা হয়েছিল; কিন্তু চিকিৎসা খাতে বাড়তি কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? সেখানে আরো ভালো কিছু উদ্যোগ নেওয়া গেলে অর্থনীতিকে আরো ভালো রাখা যেত।’
শুধু ব্যবসায়ীরা নয়, লকডাউনে খেটে খাওয়া স্বল্প আয়ের মানুষ কঠিন সংকটে পড়বে উল্লেখ করে রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, ‘লকডাউন দিয়ে ছোট ব্যবসায়ীদের যা ক্ষতি হয় সেটার দায়িত্ব কে নেবে? ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা চলতে পারেন না। এটা বোঝাই যাচ্ছে একটা ক্ষতি দিয়ে আরেকটা ক্ষতিকে সমাধান করা যায় না। মানুষের জীবন রক্ষা করার জন্য চিকিৎসার সম্প্রসারণ করা বেশি জরুরি। চিকিৎসা পেলে মানুষ বাঁচবে।’
লকডাউনের চেয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানানোয় জোর দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়ে হাফিজুর রহমান বলেন, ‘মানুষকে যে উপায়ে স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে মোটিভেট করার দরকার ছিল সে উপায়ে আমরা মোটিভেট করতে পারিনি। মোটিভেশনের প্রক্রিয়া আরো কার্যকর হওয়া উচিত।’
উৎপাদনের ক্ষেত্রে কী কাঁচামাল সংগ্রহে কোনো বাধার সৃষ্টি হচ্ছে কি না জানতে চাইলে রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পদকজয়ী এই উদ্যোক্তা বলেন, এখনো বড় সংকট তৈরি হয়নি। তবে লকডাউন দির্ঘায়িত হলে সামনে কী হবে সেটা বলা মুশকিল।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন